আন্তর্জাতিক সমর্থনে নির্ভার প্রধানমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট একাদশ সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়লাভ করার পর একে একে অনেক দেশ তাকে অভিনন্দন জানিয়েছে।

গত ১০ বছরে অর্থনৈতিক অগ্রগতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন এবং নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় তার সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে প্রতিবেশী ভারতসহ বড় বড় দেশ।

তবে বিরোধী পক্ষের আনা নির্বাচনী অনিয়মের অভিযোগ তদন্ত করে দেখার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাসহ বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ।

এ বিষয়টি যে শেখ হাসিনাকে চাপে ফেলতে পারছে না, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক বিশ্লেষণে তা উঠে এসেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ধারাবাহিক অভিনন্দন বার্তার কারণে নির্ভার থাকতে পারছেন তিনি।

সম্প্রতি প্রকাশিত এপির বিশ্লেষণ অনুযায়ী, বিভিন্ন দেশের শুভেচ্ছা বার্তার নেপথ্যে রয়েছে শেখ হাসিনাকে আন্তর্জাতিক সমর্থনেরও বার্তা। ফলে নির্বাচনী অনিয়মের প্রশ্নে যতটা চাপ তৈরি হয়েছে, তা ওই সমর্থনের কারণে ম্রিয়মাণ।

একজন সাবেক কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষককে উদ্বৃত করে এপির বিশ্লেষণী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১০ বছরের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি এবং প্রভাবশালী ও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার মধ্য দিয়ে এই সমর্থন আদায় করে নিতে সক্ষম হয়েছেন শেখ হাসিনা।

এবারের সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৮৮টিতে বিজয়ী হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট। প্রধান বিরোধী শক্তি বিএনপি নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্ট পেয়েছে মাত্র সাতটি আসন। টানা তৃতীয় মেয়াদে এবং চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। নতুন মন্ত্রিসভার শপথ আগামীকাল সোমবার।

বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশাল ব্যবধানে পুনর্নির্বাচিত হয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অভিনন্দন জোয়ারে ভাসছেন শেখ হাসিনা। নির্বাচনী অনিয়মের অভিযোগ তদন্তের ব্যাপারে খুব একটা ভাবতে হচ্ছে না তাকে। নির্বাচনের সময়ে ওঠা অনিয়মের অভিযোগের কারণে প্রথম দিকে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া স্পষ্ট ছিল না।

তবে ভারত আর চীনের অভিনন্দন বার্তা পরিস্থিতি বদলে দেয়। একে একে বার্তা পাঠায় সৌদি আরব, রাশিয়া, কাতার, ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভুটান ও পাকিস্তান।

অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখার আহ্বান জানালেও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পক্ষ থেকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।

২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর সতর্কতার সঙ্গে ভারত, চীন, রাশিয়া, জাপান ও সৌদি আরবের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্কের সফল সূচনা ঘটান শেখ হাসিনা। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় ফিরে তা অব্যাহত রাখেন।

নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্রের এক বিবৃতিতে বলা হয়, অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশের অভাবনীয় সাফল্যের সঙ্গে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। তা আরও এগিয়ে নিতে সরকার ও বিরোধী দলের সঙ্গে কাজ করে যাবে যুক্তরাষ্ট্র।

এদিকে, নির্বাচনকেন্দ্রিক অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে উদ্বেগ এবং তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ ও এর মানবাধিকার কমিশন। তবে প্রত্যাশিত আন্তর্জাতিক সমর্থন পাওয়ায় এ নিয়ে নির্ভার থাকতে পারছেন শেখ হাসিনা।

 

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে