বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয় সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে বিরোধী দলীয় নেতা করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
একইসঙ্গে প্রজ্ঞাপনে জিএম কাদেরকে সংসদীয় বিরোধী দলের উপনেতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে সংসদীয় বিরোধী দলের নেতা প্রশ্নে কিছুটা ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছিল। অনেকে ভেবেছিলেন দশম সংসদের বিরোধীদল নেতা রওশন এরশাদ এবারও বিরোধীদল নেতা হতে পারেন।
শপথ নেয়ার পর পার্লামেন্টারি পার্টির অনির্ধারিত বৈঠকে এমন ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল।
কিন্তু হঠাৎ করে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নিজেকে বিরোধীদল নেতা ও ছোটভাই জিএম কাদেরকে বিরোধীদলের উপনেতা ঘোষণা দেন।
গত ৫ জানুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদে মহাজোটের অংশীদার জাতীয় পার্টিকে (জাপা) বিরোধী দল ঘোষণা দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সংসদের স্পিকারকে চিঠি দেন দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
ওই চিঠিতে এরশাদ বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদে আপনি স্পিকারের দায়িত্ব গ্রহণ করায় প্রথমেই আপনাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আপনি অবগত আছেন যে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমার জাতীয় পার্টি ২২টি আসনে বিজয় লাভ করে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল তথা প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা লাভ করেছে।
নির্বাচনের এই ফলাফলের পরিপ্রেক্ষিতে পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে দলের গঠনতান্ত্রিকভাবে পদাধিকার বলে আমি জাতীয় পার্টির পার্লামেন্টারি পার্টিরও সভাপতি। এই প্রেক্ষাপটে আমি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ (রংপুর-৩) প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা এবং পার্টির কো-চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (লালমনিহাট-৩) বিরোধীদলীয় উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।
অতএব মহাত্মন, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য আপনার প্রতি সবিনয় অনুরোধ জানাচ্ছি।’
গত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাওয়া না-যাওয়া নিয়ে এরশাদ ও তার স্ত্রী রওশন এরশাদকে কেন্দ্র করে জাতীয় পার্টিতে দুটি পক্ষ তৈরি হয়েছিল। রওশন ছিলেন নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে। শেষ পর্যন্ত জাপা নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিরোধী দল হওয়ার পাশাপাশি মন্ত্রিসভারও অংশ হয়। এ কারণে ‘গৃহপালিত বিরোধী দল’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় জাতীয় পার্টিকে।
গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে মহাজোট ২৮৯ আসনে জয়ী হয়। এর মধ্যে জাতীয় পার্টির রয়েছে ২২টি আসন। মহাজোটের বিরোধী জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এ নির্বাচনে মাত্র ৭টি আসনে জয়ী হয়।