ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের ‘গণতন্ত্র সূচক’বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে টানা তৃতীয় সরকার গঠনের পর ভালো খবর নিয়ে এসেছে।
২০১৮ সালের পরিস্থিতি বিবেচনা করে এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ৪ ধাপ উন্নতি হয়েছে।
তবে এখনো বাংলাদেশের অবস্থান বেশ দূরে। বিশ্বের ১৬৫টি দেশ ও দুটি অঞ্চলের মধ্যে ৮৮তম অবস্থানে। সব মিলিয়ে স্কোর ৫.৫৭। আগের বছর এই স্কোর ছিল ৫.৪৩; ৮ ধাপ পিছিয়ে অবস্থান ছিল ৯২।
বাংলাদেশের স্কোর বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে কিছুটা ভালো। ২০১৮ সালে বৈশ্বিক স্কোর ৫.৪৮।
নির্বাচনী ব্যবস্থা ও বহুদলীয় অবস্থান, সরকারে সক্রিয়তা, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ, রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং নাগরিক অধিকার- এই ৫ মানদণ্ডে ১০ পয়েন্ট ধরে এই সূচক তৈরি করা হয়।
কোনো দেশের গড় স্কোর ৮-এর বেশি হলে সেই দেশে ‘পূর্ণ গণতন্ত্র’ রয়েছে বলে বিবেচনা করা হয়েছে এই প্রতিবেদনে। স্কোর ৬ থেকে ৮-এর মধ্যে ‘ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র’, ৪ থেকে ৬-এর মধ্যে হলে ‘মিশ্র শাসন’ এবং ৪-এর নিচে হলে সে দেশে ‘স্বৈরশাসন’ চলছে বলেও ধরা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সাল থেকে এই সূচক প্রকাশ শুরু হয়। আর গত বছর বাংলাদেশের সবচেয়ে বাজে অবস্থানে নেমে যাওয়ার পর বিরোধীপক্ষ সরকারের তীব্র সমালোচনা করে। বাংলাদেশ স্বৈরতন্ত্রের কবলে পড়েছে বলে তারা বক্তব্য দিয়ে আসে।
এবারের সূচকে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের ওপরে আছে কেবল দুটি দেশ। ৭.২৩ পয়েন্ট স্কোর নিয়ে তালিকার ৪১তম অবস্থানে আছে ভারত আর ৬.১৯ পয়েন্ট নিয়ে ৭১ তম অবস্থানে রয়েছে শ্রীলঙ্কা। ভারতের ১ ধাপ উন্নতি হলেও শ্রীলঙ্কা পিছিয়েছে ৯ ধাপ।
যারা বাংলাদেশের পেছনে আছে তাদের মধ্যে ৫.৩০ স্কোর নিয়ে ভুটানের অবস্থান ৯৪, ৫.১৮ স্কোর নিয়ে নেপালের ৯৭; ৪.১৭ স্কোর নিয়ে পাকিস্তানের ১১২; ৩.৮৩ স্কোর নিয়ে মিয়ানমারের ১১৮ এবং ২.৯৭ স্কোর নিয়ে আফগানিস্তানের অবস্থান ১৪৩।
এবারের সূচকে ৪২টি দেশের অবস্থানের অবনতি ঘটেছে, আর ৪৮টি দেশের উন্নতি হয়েছে। এর মধ্যে এশিয়ার দেশগুলোতেই বেশি।
প্রতিবেদন বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে ‘পূর্ণ গণতন্ত্র’ছিল ২০টি দেশে। সারা বিশ্বের জনসংখ্যার সাড়ে ৪ শতাংশ মানুষ এর অধীনে আছে।
এই ‘পূর্ণ গণতন্ত্র’ রয়েছে যেসব দেশে তার বেশিরভাগই স্ক্যানডেনেভিয়ান। তালিকার শীর্ষে রয়েছে নরওয়ে। অন্য দেশগুলো হলো আইসল্যান্ড, সুইডেন, নিউ জিল্যান্ড, ডেনমার্ক, কানাডা, আয়ারল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও সুইজারল্যান্ড।
গতবারের মতই ‘ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্রের’ দেশের তালিকায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে পূর্ণ গণতন্ত্র আছে যুক্তরাজ্য ও জার্মানিতে।
তালিকায় সবার নিচে আছে উত্তর কোরিয়া। মিয়ানমার, চীন, রাশিয়া, ভিয়েতনাম, ইরান ও সৌদি আরবও একই কাতারে আছে।