মজুরির ৩টি গ্রেড সমন্বয় হচ্ছে

বিশেষ প্রতিনিধি

শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব আফরোজা খান পোশাক শিল্পের ন্যূনতম মজুরি কাঠামোর ৩, ৪ ও ৫ নম্বর গ্রেড সমন্বয়ে জন্য বিবেচনায় নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন।

শ্রমিক অসন্তোষের কারণে গঠিত মজুরি পর্যালোচনা কমিটির প্রথম সভা শেষে সচিব এ কথা জানান।

universel cardiac hospital

নতুন মজুরি কাঠামোতে বৈষম্য রয়েছে দাবি করে ঢাকা, গাজীপুর, আশুলিয়া, সাভারসহ বিভিন্ন স্থানে আন্দোলন করে আসছে পোশাক শ্রমিকরা। এই প্রেক্ষাপটে গত মঙ্গলবার শ্রম ভবনে সরকার-মালিক-শ্রমিক সমন্বয়ে ত্রিপক্ষীয় জরুরি বৈঠক হয়। সেখানে মজুরি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে এক মাসের মধ্যে মজুরির অসঙ্গতিগুলো খতিয়ে দেখে সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়। কিন্তু এরপরও থামেনি শ্রমিক আন্দোলন।

বর্তমান সরকারের শেষ সময়ে পোশাক শ্রমিকদের নতুন ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হয় ৮ হাজার টাকা। গত ডিসেম্বর মাস থেকে এই মজুরি কার্যকর ধরা হয়েছে।

সভা শেষে শ্রম সচিব বলেন, গ্রেড নিয়ে একটু ইয়ে আছে, কোন গ্রেডে কমেছে, কোন গ্রেডে বেড়েছে। আমরা দেখতে পেয়েছি সাতটি গ্রেডের মধ্যে ১ ও ২ সম্পর্কে ওনাদের মন্তব্য হচ্ছে সেথানে কোন সমস্যা নেই। ৬ ও ৭ নম্বর গ্রেডেও কোন সমস্যা নেই। শুধু ৩, ৪ ও ৫ নম্বর গ্রেডে একটু অবজারভেশন আছে, সেটা আমলে নিয়েছি।

তিনি বলেন, এখানে যেহেতু ক্যালকুলেশনের ব্যাপার আছে, সেজন্য আরো গভীরভাবে পর্যালোচনার জন্য আরো ছোট পরিসরে আগামী রোববার বসে সেটার সমাধান খুঁজে বের করব। কোথায় কীভাবে করলে সেই সমন্বয়টা আমরা করতে পারি। যাতে এই সমস্যা সমাধান হয়।

সচিব বলেন, আমরা গত ৮ তারিখে ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিটি মিটিং করেছিলাম। সেই মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম মালিক, শ্রমিক ও সরকার মিলে ত্রিপক্ষীয় একটি কমিটি করে এই কমিটির মাধ্যমে ঘোষিত মজুরির মধ্যে অসাঞ্জস্যতা আছে মনে করে যে বিশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি হয়েছে সেটাকে সমাধান করা। আজকে প্রখম সেই কমিটির মিটিংয়ে বসেছিলাম আমরা কমিটিতে সর্বস্তরের শ্রমিক নেতৃবৃন্দ আমাদের সাথে ছিলেন। মালিক প্রতিনিধিরাও ছিলেন, আমরা খোলামেলা আলোচনা করেছি- সবার বক্তব্য আমরা শুনেছি।

তিনি বলেন, আমাদের কাছে তথ্য ওঠে এসেছে- আমাদের ধারণা ছিল শুধু মজুরি বৈষম্যের কারণে এই শ্রমিক আন্দোলন বা বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। আমরা দেখেছি, সেই মজুরির বাইরেও অনেক ইস্যু এসেছে। সেগুলো মজুরি কম বা মজুরি সমন্বয়ের বাইরে আছে।

আফরোজা খান বলেন, শ্রমিক নেতৃবৃন্দকে বলব আমাদের সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। আমাদের অর্থনীতির মূল যে গার্মেন্টস সেক্টর সেই সেক্টরকে কোন ক্রমেই ধ্বংসের দিকে যেতে দিতে চাই না। যদি কোন দুষ্ট চক্র থেকে থাকে আমরা তাদের যে কোন মূল্যে প্রতিহত করব।

তিনি বলেন, মজুরি কীভাবে সমন্বয় করা হবে সেই নির্দেশনা গেজেটে দেয়া আছে। আমার মনে হয় ফ্যাক্টরির মিড লেভেলে যারা মজুরি দেয়ার বিষয়ে কাজ করছেন, মালিকদেরও অনুরোধ জানাব তারা এই বিষয়টি ভালভাবে একটু দেখবেন। যাতে ভুল বোঝাবুঝি না হয়।

শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে সচিব বলেন, ৮ তারিখে সিদ্ধান্ত নিয়ে ১০ তারিখে মিটিংয়ে বসেছি এবং সবার কাছ থেকে আমরা শুনেছি সমস্যাগুলো কোথায়। আপনারা প্লিজ সরকারের প্রতি আস্থা রাখুন, সরকার নতুন এসেছে। এই সরকার শ্রমিকবান্ধব সরকার, সরকার এ বিষয়ে খুব সিরিয়াস, আমরা খুব সিরিয়াসলি চেষ্টা করছি। যে কাজটা করতে হচ্ছে নূন্যতম সময় প্রয়োজন আমরা শ্রমিক ভাই-বোনদের কাছে সেই সময়টুকু চাচ্ছি।

 

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে