সম্প্রতি এয়ারপোর্ট সড়কে যানজটে আটকা পড়েন কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (কোইকা) সভাপতি লি মাই কুয়াং। বাংলাদেশের উন্নয়ন হলেও ঢাকার যানজটকে ভয়াবহ হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি।
এ সমস্যা সমাধানে এয়ারপোর্ট থেকে মহাখালী পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার সড়কে পৃথক বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর (সওজ)।
পৃথক লেন নির্মাণের জন্য বনানী সেতু ভবন থেকে মহাখালী বাস টার্মিনাল পর্যন্ত আরও একটি ফ্লাইওভার নির্মাণ করবে সরকার।
‘ঢাকা পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ইমপ্রুভমেন্ট’ প্রকল্পের আওতায় এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
এরই মধ্যে নকশা চূড়ান্ত ও মূল প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণের জন্য বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় সম্ভাব্যতা যাচাই কাজও শুরু হয়ে গেছে।
২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে ফিজিবিলিটি স্টাডির কাজ শেষ হবে। এতে মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। এরপরই নেওয়া হবে মেগা প্রকল্প।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে যে ফ্লাইওভার আছে সেটা থাকবে। বিদ্যমান ফ্লাইওভারের পূর্বপাশ দিয়ে নতুন এ ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে।
সওজ সূত্র বলছে, নতুন মহাখালী ফ্লাইওভার ছাড়াও এই রুটে সাতটি বিআরটি স্টেশন নির্মাণ করা হবে। বনানী সেতু ভবন থেকে মহাখালী বাস টার্মিনাল পর্যন্ত জমি অধিগ্রহণ সহজ হবে না; বিধায় নতুন ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে।
এই ফ্লাইওভারের ওপর দিয়েই নির্মিত হবে আর্টিকুলেটেড (দুই বগির জোড়া লাগানো) বাস লেন। মূলত এয়ারপোর্ট রুটকে যানজটমুক্ত করতেই এই বড় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
নতুন এই প্রকল্পটির পরিচালক সানাউল হক গণমাধ্যমকে বলেন, মহাখালী ফ্লাইওভারকে কোনো ডিস্টার্ব না করেই নতুন ফ্লাইওভার নির্মাণ করবো। নতুন ফ্লাইওভার বনানী সেতু ভবন থেকে শুরু হয়ে নামবে মহাখালী বাস টার্মিনালে। মূলত আর্টিকুলেটেড বাস চলাচলের লেনের জন্যই এমন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, নানা কারণেই এয়ারপোর্ট থেকে মহাখালী পর্যন্ত বিআরটি রুট করা হবে। পৃথট রুটে আধুনিক আর্টিকুলেটেড বাস চলবে। এই রুট স্মুথ করতেই নানামুখী উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
জানা যায়, প্রকল্পের আওতায় সড়কের উভয়পাশে দুইলেনের ডেডিকেটেড বিআরটি লেন নির্মাণ করা হবে। এই লেন দিয়ে শুধু আর্টিকুলেটেড (দুই বগির জোড়া লাগানো) বাস চলবে। দুটি কোচ জোড়া দিয়ে বানানো এ বাসের দৈর্ঘ্য হবে ১৮ মিটার; তবে সাধারণ বাসের থেকে যাত্রীধারণ ক্ষমতা দ্বিগুণ। প্রায় দেড়শ’ জন যাত্রী একটি বাসে ভ্রমণ করতে পারবেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, স্মার্টকার্ড ও ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ভাড়া নিয়ন্ত্রণ করা হবে এ বাসে। ডেডিকেটেড রুটজুড়ে থাকবে ৭টি স্টপেজ। বাসগুলো কয়েকটি নির্দিষ্ট কোম্পানির মাধ্যমে চালানো হবে। এই রুটে তিন মিনিট পরপর বাস পাওয়া যাবে। থাকবে ইলেকট্রনিক ভাড়া নিয়ন্ত্রণব্যবস্থাও।