বুড়িগঙ্গা দখলমুক্ত করতে অভিযান

বিশেষ প্রতিনিধি

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল কর্তৃপক্ষ, বিআইডব্লিউটিএ ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর দুই প্রান্তে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে।

মঙ্গলবার সকালে কেরানীগঞ্জের খোলামোড়া ঘাটের বিপরীতে একটি সাততলা ভবন ভাঙার মধ্য দিয়ে শুরু হয় উচ্ছেদ অভিযান।

নতুন সরকারের শুরুতেই এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় অভিযানে হাত দিয়েছেন নৌপ্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

এ কর্মসূচি চলবে ফেব্রুয়ারির মধ্যভাগ পর্যন্ত। প্রয়োজনে কর্মসূচির আকার আরও বাড়তে পারে।

টাস্কফোর্সের সুপারিশ থাকা সত্ত্বেও এসব প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে অভিযান না চালানোয় দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষোভ ছিল পরিবেশবাদীসহ রাজধানীবাসীর মধ্যে।

প্রতিমন্ত্রী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সেখান থেকেই তিনি পুরো অভিযান তদারকি করছেন।

হাসপাতালে সাংবাদিকদের খালিদ মাহমুদ বলেন, ঢাকার চারপাশের সব নদী ও খাল রক্ষায় এ ক্রাশ প্রোগ্রাম চলবে। উচ্ছেদের পর ফের দখল ঠেকাতে নদীর তীরে বনায়নের একটি প্রকল্পও হাতে নেয়া হয়েছে। আর অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাও নেয়া হবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, যত বড় প্রভাবশালীই হোক না কেন; এবারের কর্মসূচিতে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। আমাদের মনে রাখতে হবে নদী বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে।

মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত অভিযান চলে। এ সময় দুটি সাততলা ভবন, দুটি পাঁচতলা ভবন, তিনটি দোতলা ভবন, চারটি একতলা পাকা ভবনসহ ১৬৪টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।

বিআইডব্লিউটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক আরিফুর রহমান বলেন, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে খোলামোড়া ঘাট বরাবর এলাকায় একটি অবৈধ সাততলা ভবন আংশিক ভাঙা হয়। ওই ভবনের আশপাশে কিছু ছোট স্থাপনাও উচ্ছেদ করা হয়। বিকালে খোলামোড়া ঘাট এলাকায় নদীর তীরে গড়ে ওঠা ছোট কিছু স্থাপনা ভেঙে দেয় অভিযান দল।

ঢাকা নদী বন্দরের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান জানান, প্রাথমিকভাবে বুড়িগঙ্গা তীরের ছয় শতাধিক অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করা হয়েছে।

এসব উচ্ছেদের জন্য ১১ দিনের একটি ক্রাশ প্রোগ্রাম হাতে নেয়া হয়েছে।

এর অংশ হিসেবে প্রথম দিন কয়েকটি বহুতল ভবন, আধাপাকা ভবন, ঝুপড়িঘর, টং দোকানসহ ১৬৪টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে।

উচ্ছেদ অভিযানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক (বন্দর) শফিকুল হক, যুগ্ম পরিচালক একেএম আরিফ উদ্দিন, উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান, সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম, নূর হোসেন স্বপন ও আসাদুজ্জামান মিয়া।

পুলিশ, নৌ-পুলিশ, আনসার সদস্য ও শতাধিক শ্রমিক উচ্ছেদ অভিযানে সহায়তা করে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে