ভেনিজুয়েলার স্বঘোষিত অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হুয়ান গুয়াইদোকে রাষ্ট্রের প্রধান হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট। বৃহস্পতিবার গুয়াইদোকে স্বীকৃতি দিতে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট ব্রাসেলসে এক বিশেষ অধিবেশনে ভোটাভুটি করেছে। এতে গুয়াইদোর পক্ষে পড়েছে ৪২৯ ভোট এবং বিপক্ষে পড়েছে ১০৪ ভোট। এছাড়া ৮৮ জন ভোটদানে বিরত ছিল।
ভেনিজুয়েলায় নতুন করে একটি অবাধ, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত গুয়াইদোকেই দেশটির ‘একমাত্র বৈধ অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট’ হিসাবে স্বীকৃতি দিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৮ টি সদস্য দেশকে এক বিবৃতিতে আহ্বানও জানিয়েছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট।
যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, এবং স্পেন গত শনিবারই আল্টিমেটাম দিয়ে বলেছে, ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো ৮ দিনের মধ্যে নির্বাচন না দিলে তারা গুয়াইদোকেই স্বীকৃতি দেবে। তবে সামগ্রিকভাবে ইইউ’র সব দেশ একযোগে এ নতুন নির্বাচনের কোনো সময়সীমা দেয়নি।
অন্যদিকে মাদুরো নতুন নির্বাচনের আল্টিমেটাম প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতির পথে হাঁটার জন্য ইইউ নেতাদের নিন্দাও করেছেন।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের বৈদেশিক নীতি পরিচালনার কোনো এখতিয়ার না থাকলেও তারা মানবাধিকারের রক্ষক হিসাবে ভূমিকা পালনে উদ্যোগী।
স্পেনের মধ্য-ডান ইইউ আইনপ্রণেতা এস্তেবান গঞ্জালেজ পনস এক বিবৃতিতে বলেছেন, ভেনিজুয়েলার রাস্তায় যারা বিক্ষোভ করছে তারা ইউরোপীয় নয়। কিন্তু তারা সেই একই মূল্যবোধের জন্য লড়ছে যার জন্য আমরা লড়াই করি।
ভেনিজুয়েলায় গত ২৩ জানুয়ারি চলমান সরকারবিরোধী বিক্ষোভের মাঝে বিরোধীদলীয় নেতা হুয়ান গুয়াইদো নিজেকে ‘অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট’ ঘোষণা করেন। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাকে স্বীকৃতি দেয় যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র অন্যান্য দেশকে তার পথ অনুসরনের আহ্বান জানায়।
এদিকে ভেনিজুয়েলার হুয়ান গুয়াইদোর বাড়িতে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর বিশেষ পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা হানা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন গুয়াইদো। বৃহস্পতিবার সকালের দিকে পুলিশ বাড়িতে হাজির হয় বলে জানান তিনি। তারা তার স্ত্রীর খোঁজ করে। ওই সময় বাড়িতে ২০ মাসের কন্যাসন্তানকে নিয়ে ছিলেন গুয়াইদোর স্ত্রী। আর গুয়াইদো তখন ছিলেন বাড়ির বাইরে।
গুয়াইদো এক টুইটে এ পুলিশী হানার কথা জানান। তবে বলেন, তাদের উদ্দেশ্য কি তা স্পষ্ট নয়। টুইটে গুইদো লেখেন, এ মুহূর্তে স্পেশাল একশন ফোর্স (এফএইএস) আমার স্ত্রী ফাবিয়ানার এপার্টমেন্টে উপস্থিত হয়েছে। আমার মেয়ের কিছু হলে মাদুরো দায়ী হবেন।
ভেনিজুয়েলায় গত বছরের ভোটে মাদুরো জয়লাভ করলেও কারচুপির অভিযোগে দেশটির বিরোধীদল ওই ভোট বয়কট করে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনও ভোটের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আবারও নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানায়। ওই আহ্বান উপেক্ষা করেই গত মাসে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেন মাদুরো।