‘বাঙালির জয় কবিতার জয়’ এ প্রতিপাদ্য নিয়ে শুরু হয়েছে তেত্রিশতম ‘জাতীয় কবিতা উৎসব ২০১৯’।
আজ সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার চত্বরে জাতীয় সঙ্গীত, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, একুশের গান এবং উৎসব সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে দু’দিনব্যাপী উৎসবের উদ্বোধন করেন কবি আসাদ চৌধুরী। সকাল থেকে শুরু হয়ে এ উৎসব চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।
অনুষ্ঠানের শুরুতে এর আগে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, শিল্পী কামরুল হাসানের সমাধি এবং কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন জাতীয় কবিতা পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির যুগ্ম সম্পাদক আমিনুর রহমান সুলতান।
মুক্ত আলোচনা ও কবিতা পাঠ, আবৃত্তিপর্ব, সেমিনার, ছড়াপাঠ, কবিতার গান ইত্যাদি নিয়ে সাজানো হয়েছে ‘জাতীয় কবিতা উৎসব’। ১৯৬৯ সালের গণ অভ্যুত্থানের ৫০ বছরে পদার্পনের জন্য শহীদ আমানুল্লাহ আসাদুজ্জামান(শহীদ আসাদ),শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক,শহীদ ডা: শামসুজ্জোহা ও শহীদ মতিউর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে জাতীয় কবিতা পরিষদ উৎসব উৎসর্গ করা হয়।
উৎসবে ভারত, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য, চীন, শ্রীলঙ্কা, ইরাক, মালয়েশিয়া, স্পেন, উরুগুয়ে, কঙ্গো ও নেপাল থেকে আগত কবিরা যোগ দিয়েছেন।
আগামীকাল ২ ফেব্রুয়ারি সমাপনী দিনে কবিতা পাঠ,সেমিনার ও পুরস্কার প্রদানের মধ্য দিয়ে শেষ হবে জাতীয় কবিতা উৎসব। এবার পুরস্কার পাচ্ছেন কবি ও সাহিত্যিক হাবীবুল্লাহ সিরাজী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) এবং জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদের সভাপতিত্বে উৎসবের প্রথম দিনে উপস্থিত ছিলেন কবি বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর, নির্মলেন্দু গুণ, হাবীবুল্লাহ সিরাজী, রবিউল হুসাইন, আনোয়ারা সৈয়দ হক, মুহাম্মদ নূরুল হুদা, শেখ হাফিজুর রহমান, নূহ আলম লেলিন, কাজী রোজী, অসীম সাহা, নাসির আহমেদ, মাকিদ হায়দার, তারিক সুজাত প্রমুখ।
মুহাম্মদ সামাদ বলেন, ‘বাংলাদেশে আর কোনদিন যেন মুজিববিরোধী , মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অন্ধকারের শক্তি মাথা তুলতে না পারে-আমাদের সেই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়ার সময়’।
তিনি বলেন, ‘তেত্রিশতম জাতীয় কবিতা উৎসবের মর্মবার্তা আমরা ঘোষণা করছি-বাঙালির জয়,কবিতার জয়।বাংলার কবি ও বাংলা কবিতার হাজার বছরের দায়বদ্ধতাকে সেই লক্ষ্যে আরো শাণিত ও প্রাণিত করে তুলি’।
উল্লেখ্য, ১৯৮৭ সালে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদের হিং¯্র থাবা বিস্তৃত হয় আবহমান বাংলার চিরায়ত সংস্কৃতি ও কবিতার দিকে। বাঙালির সকল জয়ের শিল্পিত ও সুন্দর সহযোদ্ধা কবিতার উপর সামরিক দুঃশাসনের নগ্ন আঘাতের প্রতিবাদে বাংলাদেশের কবিরা বিক্ষোভে রাজপথে নেমে আসতে বাধ্য হয়। তখন ‘শৃংঙ্খল মুক্তির জন্যে কবিতা’-এই বাণীকে কন্ঠে ধারণ করে,নবীণ-প্রবীণ কবিরা জাতীয় কবিতা উৎসবের আয়োজন করে আন্দোলনে নতুন গতির সঞ্চার করে। কবিতা উৎসবমঞ্চ হয়ে ওঠে রাজনীতিক, সাংবাদিক, শিল্পীÑসাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবী, সংস্কৃতিকর্মীসহ সকল মানুষের উজ্জ্বল উদ্ধারের বাতিঘর। কালের পরিক্রমায় সে উৎসব আজ আন্তর্জাতিক রূপ নিয়েছে।
জাতীয় কবিতা উৎসব শুরু
ডেস্ক রিপোর্ট