দীর্ঘদিন ধরেই বাজারে বহুল পরিচিত বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির ইনসুলিন, প্যাথেড্রিনসহ জীবনরক্ষাকারী বিভিন্ন ওষুধ নকল করে বিক্রি করে আসছিল একটি চক্র। আর তাদের সহায়তা করতো ফার্মেসির এক শ্রেণির অসাধু মালিক।
এমন অভিযোগে রাজধানীর যাত্রাবাড়ি এলাকা থেকে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ নকল ওষুধ ও ওষুধ তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে।
আটকরা হলেন- মোহাম্মদ আবদুস সোবহান, মোহাম্মদ নাঈমুর রহমান তুষার, রিয়াজুল ইসলাম মৃদুল, মোসাম্মৎ নারগিছ বেগম ও মোহাম্মদ ওয়াহিদ। এরা দীর্ঘদিন ধরে একাধিক কোম্পানির নাম ও মোড়ক নকল করে নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি ওষুধ বাজারজাত করে আসছিল।
আগের রাতে পাঁচজনকে আটক করার পর আজ রোববার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানানো হয়।
ডায়াবেটিস রোগীদের একটি অন্যতম জরুরি ওষুধ ইনসুলিন। এছাড়া বিভিন্ন রোগের উপশমে গুরুত্বপূর্ণ প্যাথেড্রিন। শুধু এই দুটি ওষুধই নয়, গ্রেফতারকৃতরা এরকম আরো নানা প্রয়োজনীয় ওষুধ ও ইনজেকশন নকল করে বাজারজাত করে আসছিল।
আর এসব ওষুধের গায়ে সেঁটে দিতো বিভিন্ন পরিচিত কোম্পানির লেবেল। গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল গেলো রাতে যাত্রাবাড়ি থেকে গ্রেফতার করে তাদের। জব্দ করে বিপুল পরিমাণ নকল ওষুধ, ফয়েল পেপার, নকল স্টিকারসহ নানা কিছু।
ঢাকা মেট্রোপলিটনের উপকমিশনার মো. আব্দুল বাতেন বলেন, রোলাক লেখা ক্যাপসুল তারা রেনেটা কোম্পানির নাম ব্যবহার করেছে। এই ওষুধটা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। প্যাথেড্রিন গণস্বাস্থ্যের মোড়ক দিয়ে তারা বাজারজাত করেছে।
গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, এই চক্রের মূলহোতা আব্দুস সোবহান এক সময় একটি ওষুধ কোম্পানিতে কাজ করতো। নানা অনিয়মের কারণে সেখান থেকে তার চাকরি চলে গেলে অন্যদের নিয়ে শুরু করে নকল ওষুধের ব্যবসা। আর তার তৈরি ওষুধ বিক্রিতে সহায়তা করতো এক শ্রেণির অসাধু ফার্মেসি মালিকরা।
তিনি আরো বলেন, অখ্যাত যে সমস্ত ফার্মেসির দোকান রয়েছে তারা টার্গেট করে সেই দোকানগুলোতে ওষুধ দিত। ওই দোকানদাররা নামমাত্র মূল্যে বাজারজাত করত। বিক্রিপ্রক্রিয়া সম্পৃক্ত যে চক্রটা আছে তারা মার্কেটিং করে। আমরা ওই পর্যায়ে গিয়ে তাদের আটক করব।
এই চক্রের পেছনে জড়িত বাকিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানায় গোয়েন্দা পুলিশ।