৩ বছরের মধ্যে রিজার্ভ চুরির অর্থ ফিরিয়ে আনা ও ক্ষতিপূরণ আদায়ে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের দায়ের করা মামলা সমাধান হবে।
তবে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে এ সময় কমতে বা বাড়তে পারে বলে জানান আইনজীবী আজমাউল হোসেন কিউসি।
রিজার্ভ চুরির অর্থ ফিরিয়ে আনা ও ক্ষতিপূরণ আদায়ে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে এ মামলা দায়ের করা হয়।
রিজার্ভ চুরির মামলার বিষয়ে আজ রোববার বিকালে বাংলাদেশ ব্যাংকে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।
এ সময় বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান আবু হেনা মোহাম্মদ রাজি হাসান, বিএফআইইউর পরামর্শক দেবপ্রসাব দেবনাথ, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আইনজীবী আজমাউল হোসেন কিউসি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কের (ফেড) সঙ্গে মামলার বিষয়ে চুক্তি হয়েছে। তারা মামলার জন্য বিভিন্ন নথি, তথ্য সরবারহ সহ সাক্ষী দেবে। ১০৩ পৃষ্ঠার মামলায় ১৫ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি, ৭টি প্রতিষ্ঠান ও ২৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে বিবাদী করা হয়েছে।’
এর আগে গত শুক্রবার ভোরে রিজার্ভ চুরির অর্থ ফিরিয়ে আনা, ক্ষতিপূরণের দাবিতে দোষীদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে মামলা করেছে বাংলাদেশ।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ভুয়া পেমেন্ট অর্ডারের বিপরীতে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়।
এর মধ্যে শ্রীলংকায় যাওয়া দুই কোটি ডলার বিতরণ হওয়ার আগেই ফেরত পায় বাংলাদেশ।
আর ফিলিপাইনে যাওয়া আট কোটি ১০ লাখ ডলারের মধ্যে দেশটির আদালতের নির্দেশে প্রায় দেড় কোটি ডলার ফেরত আসে।
এর পর থেকে পুরো অর্থ ফেরত পাওয়ার দাবি জোরালোভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখন বাকি ছয় কোটি ৬০ লাখ ডলার ফেরত পাওয়ার জন্য মামলা করা হচ্ছে।
এসব অর্থের মধ্যে ১৪ মিলিয়ন ডলার ছাড়া বাকি অর্থের খোঁজ পাওয়া গেছে। যার বড় অংশই দেশটির আদালতের নির্দেশে ফ্রিজ হয়ে আছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় আরসিবিসির সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক মায়া সান্তোস দেগুইতোকে সম্প্রতি ৩২ থেকে ৫৬ বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ কোটি ৯০ লাখ ডলার জরিমানার আদেশ দিয়েছেন ফিলিপাইনের আদালত।
এই সাজার মধ্য দিয়ে অর্থপাচারের ঘটনায় মায়া আইনগতভাবে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।
এর আগেও ফিলিপাইনের বিভিন্ন আদালতে আরসিবিসির বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি উঠে এসেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের এক তদন্তে উঠে আসে—হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনা ঘটেছে।
চুরির সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের কারও যে সম্পৃক্ততা নেই, সেটিও পরিষ্কার হয়। এসব কারণে আরসিবিসির বিরুদ্ধে মামলা করে অর্থ ফেরত পাওয়া সহজ হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।