বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেছেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, খুলনা মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও খুলনা-২ (সদর-সোনাডাঙ্গা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী আসগার লবী। শারীরিক অসুস্থতার কথা জানিয়ে গত শনিবার খুলনার প্রভাবশালী এই নেতা দলের মহাসচিবের কাছে পদত্যাগপত্র দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
ঢাকায় অবস্থানরত সাবেক সাংসদ আলী আসগার লবী বলেন, আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ। সে কারণে দল ছেড়েছি। তাছাড়া আমি ১০-১২ বছর রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলাম না। আমার বাড়ি খুলনায়, কিন্তু ৭-৮ বছর ধরে খুলনায়ও যাওয়া হয় না। ৪-৫ দিন পর খুলনায় যেতে পারি।
আলী আসগার লবী দলত্যাগ করায় খুলনায় বিএনপির রাজনীতিতে নেতিবাচক কোনো প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছেন স্থানীয় বিএনপির বেশিরভাগ নেতাকর্মী।
তবে তার এক সময়ের অনুসারীদের মধ্যে বিষয়টি কিছুটা হতাশার জন্ম দিয়েছে। অবশ্য খুলনায় তার অনুপস্থিতিতে অনুসারীদের বেশিরভাগই এখন নিষ্ক্রিয়।
খুলনা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কেসিসির সাবেক মনিরুজ্জামান মনি বলেন, শুনেছি স্বাস্থ্যগত কারণে তিনি পদত্যাগ করেছেন। রাজনীতি করা না-করা তার ব্যক্তিগত বিষয়।
এক সময় আলী আসগার লবীর অনুসারী ছিলেন মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা।
তিনি বলেন, শুনেছি শারীরিক অসুস্থতার জন্য তিনি আর রাজনীতি করবেন না। আমার জানামতে, দল ছাড়ার জন্য তার ওপর কোনো চাপ বা অন্য কিছু নেই।
দলীয় সূত্র জানায়, ২০০১ সালের দিকে খুলনার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী আলী আসগার লবী বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। ওই বছর ১ অক্টোবরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। নির্বাচনের পর তিনি আসনটি ছেড়ে দিলে সেখানে উপ-নির্বাচন করেন আলী আসগার লবী। নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেন। এর কিছুদিন পরই খুলনা মহানগর বিএনপির কমিটি বাতিল করে তাকে আহ্বায়ক করা হয়।
২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত আলী আসগার লবী খুলনার সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা ছিলেন। তখন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সরগরম থাকত নগরীর বড় মির্জাপুর এলাকায় তার বাড়িটি। সরকারি কর্মকর্তা, দলীয় নেতাকর্মী ও তদবিরবাজদের ভিড় লেগে থাকত সেখানে। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতিও হন। তবে দেশে জরুরি অবস্থা জারি হলে তার ভাগ্য বিপর্যয় ঘটে।
২০০৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার গুলশানের বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে যৌথবাহিনী। ২০০৯ সালের প্রথম দিকে জামিনে বের হওয়ার পর থেকেই তিনি বেশিরভাগ সময় দেশের বাইরে ও ঢাকায় অবস্থান করেন। মাঝেমধ্যে খুলনায় এলেও দলীয় কোনো কর্মকাণ্ডে অংশ নেননি।