‘সৌদি যুবরাজ মিথ্যাবাদী’

ফাইল ছবি

তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান সৌদি যুবরাজকে মিথ্যাবাদী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

তুরস্ক ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম টিআরটি টেলিভিশনকে রোববার দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে খাশোগি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি ওই মন্তব্য করেন।

universel cardiac hospital

সৌদি সরকারের কড়া সমালোচনা করে তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, কনস্যুলেটে খাশোগির অবস্থান বিষয়ে সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদিল আল জাবির যে বক্তব্য দিয়েছেন তার ‘পুরোটাই মিথ্যা’।

ওই সাক্ষাৎকারে খাশোগি হত্যাকাণ্ড ছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন এরদোগান। তবে আলোচিত ওই সাক্ষাৎকারের পুরো অংশটি এখনও প্রকাশ করেনি। পূর্ণাঙ্গ সাক্ষাৎকারটি পরবর্তীতে তারা প্রকাশ করতে পারে।

তুরস্কের মার্কিন কনস্যুলেটে নৃশংসভাবে খুন হওয়া সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যার নিয়ে সারা বিশ্বে নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় ওঠে।

খাশোগি ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের নিরবতার সমালোচনা করে এরদোগান বলেন, সিআইএর সদস্যরা এ হত্যাকাণ্ডে তুরস্কের সরবরাহ করা রেকর্ডিং শোনার পরও এই ধরনের ভয়ঙ্কর ঘটনায় আমেরিকার নীরবতা আমি বুঝতে পারছি না। এটি কোনও সাধারণ হত্যাকাণ্ড নয়। আমরা সবকিছু পরিষ্কার করতে চাই। কারণ এটি নৃশংসতা, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

এরদোগান বরাবরই বলে আসছেন, খাশোগি হত্যাকাণ্ডের চার মাস আগে সৌদি সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এ হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ এসেছিল।

টিআরটিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এ খুনের পরিকল্পনায় যুক্ত ছিলেন ২২ জন। এদের মধ্যে ১৫ জন দুইটি বিমানে করে ইস্তান্বুল পৌঁছায়। হত্যাকাণ্ডের দিন তারা ইস্তান্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশ করে।

এরদোগান বলেন, তুরস্কের জোরালো ভূমিকার পর আদিল জাবিরকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে নেওয়াই প্রমাণ করে সৌদি সরকার এ হত্যার সঙ্গে জড়িত।

তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুতকাভাসুগুলোও অভিযোগ করেছেন, খাশোগি হত্যার তদন্তে সৌদি আরব এখনও কোনো সহযোগিতা করেনি।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেটে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হন সাংবাদিক জামাল খাশোগি। খুনের নির্দেশদাতা হিসেবে আঙ্গুল উঠে খোদ সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে। সৌদি আরবের পক্ষ থেকে প্রথমে এ হত্যাকাণ্ডের খবর অস্বীকার করা হয়।

পরে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা স্বীকার করলেও এর সঙ্গে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সম্পৃক্ততার খবর অস্বীকার করা হয়। ওই ঘটনায় দুনিয়াজুড়ে সমালোচনার মুখে পড়েন সৌদি যুবরাজ।

বর্তমানে ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে একদল সৌদি নিরাপত্তা কর্মীর বিচার চলছে। তুরস্কের মাটিতে খাশোগি খুন হয়েছেন বলে তুর্কি কর্মকর্তারা ঘাতক বাহিনীর সদস্যদের বিচারের জন্য আঙ্কারার হাতে সোপর্দ করার আহ্বান জানালেও সৌদি আরবের পক্ষ থেকে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।

সূত্র: আল জাজিরা, আনাদলু

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে