অমর একুশে গ্রন্থমেলা : ৫ম দিনে নতুন বই এসেছে ১৫২টি

সংস্কৃতি ডেস্ক

অমর একুশে গ্রন্থমেলা
ফাইল ছবি

আজ মঙ্গলবার ছিল অমর একুশে গ্রন্থমেলার ৫ম দিন। গ্রন্থমেলা চলে বেলা ৩:০০টা থেকে রাত ৯:০০টা পর্যন্ত।

মেলায় আজ নতুন বই এসেছে ১৫২টি।

বিকেল ৪:০০টা  গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় কবি সিকান্দার আবু জাফর : জন্মশতবর্ষ শ্রদ্ধাঞ্জলি শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কবি নাসির আহমেদ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ড. শিরীণ আখতার এবং কবি বায়তুল্লাহ কাদেরী।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।

প্রাবন্ধিক বলেন, কবি সিকান্দার আবু জাফর যে শুধু গল্প, উপন্যাস, অনুবাদ, নাটক, সম্পাদকীয় গদ্য রচনা করেছেন তা-ই নয়, শিশুদের জন্যও রয়েছে তাঁর নানামাত্রিক গদ্য। তাঁর গদ্যরচনার পরিধি কবিতার চেয়ে বেশি বৈ কম নয়। তারপরও তাঁর প্রধান পরিচয় তিনি কবি এবং পাঠকপ্রিয় কবি। এমনকি একজন উচ্চাঙ্গের গীতিকার হিসেবেও সফল। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রচিত তাঁর বিখ্যাত কবিতা সংকলিত হয়েছিল ‘বাঙলা ছাড়ো’ কাব্যগ্রন্থে। এ বইটি কলকাতা বসেই প্রকাশ করেছিলেন মুক্তিযোদ্ধা কবি। বাংলাদেশে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের নির্মম অত্যাচার, নির্যাতন, গণহত্যার ভয়াল চিত্র এই কাব্যগ্রন্থের বহু কবিতায় উৎকীর্ণ। দুঃশাসনের দুঃসময় তথা অন্ধকার শেষে স্বাধীনতার সোনালি আলোয় বাংলাদেশ উদ্ভাসিত হোক, মানুষের মুক্তি আসুক, মানবতার পতাকা উড্ডীন হোকÑ এই আকাক্সক্ষা লালন করেছেন কবি তাঁর আজীবনের সাহিত্যসাধনায়।

আলোচকবৃন্দ বলেন, সিকান্দার আবু জাফরের গল্প, উপন্যাস এবং প্রবন্ধ-নিবন্ধ, সম্পাদকীয় সর্বত্রই বাংলাদেশ ও তার শোষিত বঞ্চিত মানুষের মুক্তি, মানবতার জয়গান বাক্সময় হয়ে উঠেছিল। সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুক্তিকামী মানুষের সপক্ষে সোচ্চার ছিল তাঁর ক্ষুরধার কলম। এমনকি তাঁর সম্পাদিত সাহিত্য পত্রিকা ‘সমকাল’-এর সম্পাদকীয় নিবন্ধেও আমরা একজন প্রগতিশীল মানবতাবাদী লেখকের কণ্ঠস্বর শুনতে পাই।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সিকান্দার আবু জাফর ছিলেন বহুমুখী মননের মানুষ। অঙ্গীকার ও মহত্তের দিক থেকে তাঁর সঙ্গে কাজী নজরুল ইসলামের যথেষ্ট মিল রয়েছে। তাঁর কবি ও গীতিকার সত্তা উৎসর্গিত হয়েছে জনমানুষের মুক্তির আবাহনে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে যেমন তাঁর সাহসী সাহিত্যিক ভূমিকা ছিল তেমনি স্বল্পায়ু জীবনে তিনি মানুষের মানবিক অধিকারের পক্ষে সবসময় ছিলেন সোচ্চার। জন্মশতবর্ষে তাঁর প্রাসঙ্গিকতা আজ নতুন করে অনুভূত হচ্ছে।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ করেন কবি সানাউল হক খান এবং তারিক সুজাত। আবৃত্তি পরিবেশন করেন জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় এবং শাহাদাৎ হোসেন নিপু। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী মাহমুদ সেলিম, সমর বড়–য়া, আরিফ রহমান, সুরাইয়া পারভীন এবং স্বর্ণময়ী মন্ডল। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন রবীন্দ্রনাথ পাল (তবলা), শাহরাজ চৌধুরী তপন (গীটার), সুমন রেজা খান (কী-বোর্ড), মোঃ মেসবাহ উদ্দিন (অক্টোপ্যাড)।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই বিষয়ে আলাপনে অংশ নেন আমিনুল ইসলাম ভুঁইয়া, আলম তালুকদার, আয়শা ঝর্না, হামীম কামরুল হক, অরবিন্দ চক্রবর্তী।

আগামীকালের অনুষ্ঠানসূচি :

আগামীকাল বুধবার অমর একুশে গ্রন্থমেলার ষষ্ঠ দিন। মেলা চলবে বেলা ৩:০০টা থেকে রাত ৯:০০টা পর্যন্ত। 

বিকেল ৪:০০টা গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় : জন্মশতবর্ষ শ্রদ্ধাঞ্জলি শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন আবুল হাসনাত। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন বিমল গুহ, গোলাম কিবরিয়া পিনু এবং শোয়াইব জিবরান।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন কবি আসাদ চৌধুরী।

সন্ধ্যায় রয়েছে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, কবিতা-আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে