‘সরকারের সমালোচনা বন্ধ এবং দেশে ফিরে আসতে রাজি না হলে সৌদির নির্বাসিত সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে গুলি করে হত্যার নির্দেশ দেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। তুরস্কে সৌদি কনস্যুলেটে গত অক্টোবরে খুন হওয়ার এক বছর আগে এ নির্দেশ দেন তিনি।’
বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রভাবশালী দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, সৌদি রাজপরিবারের এক সময়ের উপদেষ্টা এবং সমালোচক সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে দেশে ফিরিয়ে আনতে নিজের এক সহযোগীকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন যুবরাজ। দেশে ফিরতে রাজি না হলে এবং সরকারের সমালোচনা বন্ধ না করলে যেন তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়; সেই নির্দেশও দেন বিন সালমান।
সৌদির পাঠানো কিলিং স্কোংয়াডের সদস্যদের হাতে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে দেশটির কনস্যুলেটে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আনতে গিয়ে খুন হন জামাল খাশোগি। তার এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তের সঙ্গে জড়িত মার্কিন সাবেক ও বর্তমান গোয়েন্দা ও পররাষ্ট্র দফতরের কর্মকর্তারা যুবরাজের এই নির্দেশের ব্যাপারে তথ্য পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, মার্কিন গোয়েন্দা বিশ্লেষকরা বলছেন, ওই সহযোগীকে বুলেট ব্যবহারের যে নির্দেশ যুবরাজ দিয়েছিলেন, তার মাধ্যমে খাশোগিকেই যে হত্যার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল বিষয়টি সে রকম নয়। কিন্তু তারা মনে করেন, নির্বাসিত সাংবাদিক যদি দেশে ফিরতে রাজি না হন তাহলে তাকে হত্যার ইচ্ছা ছিল যুবরাজের।
গত ২ অক্টোবর সাংবাদিক জামাল খাশোগি ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর নিখোঁজ হন। নিজের বিয়ের প্রয়োজনীয় কাগজ আনতে গিয়ে নিখোঁজ হন তিনি। পরে কনস্যুলেটের ভেতরে সৌদি এই সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করে তুরস্ক।
প্রাথমিকভাবে তুরস্কের এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করলেও শেষ পর্যন্ত সমালোচনা ও বৈশ্বিক চাপের মুখে কনস্যুলেটের ভেতরে কর্মকর্তাদের সঙ্গে হাতাহাতির সময় শ্বাসরোধে ওই সাংবাদিক মারা গেছেন বলে স্বীকার করে রিয়াদ।
তবে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুবরাজের কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ নেতৃত্বাধীন এক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্বর ও পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন সৌদির ভিন্ন মতাবলম্বী সাংবাদিক জামাল খাশোগি। তাকে পরিকল্পিত হত্যার ঘটনায় সৌদির কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।