ঢাকা মহানগরীতে বছরের যে কোন সময় বা দিনের বেলায় রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধে নীতিমালা তৈরি করছে সরকার। এই নীতিমালা অনুযায়ী, বর্ষাকালে বিশেষ করে মে, জুন, জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বছরের ৫ মাস রাস্তা খনন করা যাবে না। দিনেরবেলায় কোন রাস্তা খোঁড়া বা কাটার কাজ করা যাবে না। অনুমতি ছাড়া খনন করা হলে মূল খরচের পাঁচগুণ হারে জরিমানা ফি আদায় করা হবে। সিটি কর্পোরেশনের অনুমতি সাপেক্ষে শুধু রাতেরবেলা রাস্তায় যখন যানবাহন কম থাকে তখন খোঁড়াখুঁড়ি করতে হবে। আধুনিক যন্ত্রপাতি সমন্বয়ে অভিজ্ঞ ঠিকাদার দিয়ে খনন কাজ করতে হবে। অনুমতি প্রদান, খনন ও রাস্তা পুনর্বাসনের কাজ সর্বোচ্চ তদারকি করতে ওয়ানস্টপ সমন্বয় সেল গঠন করা হবে। তৈরি খসড়া নীতিমালাটি চূড়ান্ত অনুমোদনের শেষ পর্যায়ে রয়েছে। খুব দ্রুতই নীতিমালাটি প্রণয়ন করা হবে।
সূত্র জানায়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় রাজধানীতে বসবাসকারী সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বর্ষকালে নির্দিষ্ট সময় রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধ করতে বা শীতকালেও যখন তখন রাস্তা খুঁড়ে সৃষ্ট ভয়াবহ জনদুর্ভোগ বন্ধ করতে এই বিশেষ উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। এজন্য ২০০৩ সালে অবিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশন থাকাকালে তৈরি সড়ক খনন নীতিমালাটি বাতিল করে নতুন এই নীতিমালা তৈরি হচ্ছে। ঢাকা মহানগরীর সড়ক খনন নীতিমালা-১৮ নামের এই নীতিমালা প্রণয়নের কাজ বর্তমানে চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। বিষয়টি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন। মন্ত্রণালয়ের নগর উন্নয়ন শাখার অতিরিক্ত সচিব মাহবুব হোসেনকে প্রধান করে গঠিত কমিটি নতুন নীতিমালা প্রণয়নে কাজ করছে। সূত্র মতে, নীতিমালার খসড়া ইতোমধ্যেই স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়নমন্ত্রীকে দেখানো হয়েছে। মন্ত্রী কিছু বিষয়ে সংশোধনের পরামর্শ দিয়েছেন। এসব সংশোধনীর পর অতি দ্রুতই নীতিমালাটি চূড়ান্ত করা হবে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানায়, সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে খনন শুরুর তারিখ ও শেষের তারিখও সাইনবোর্ড দিয়ে সাইটে জানাতে হবে। খনন কাজে ওয়ানস্টপ সার্ভিস সেলকে সহায়তার জন্য একাধিক মনিটরিং সেল কাজ করবে। সিটি কর্পোরেশন সেলে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করবে। রাস্তা খোঁড়ার নামে মাসের পর মাস কাজ ফেলে রাখা যাবে না। রাতেরবেলায় খননের পর ওই দিন বা রাতের মধ্যেই আধুনিক খনন সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি দিয়ে পুনর্বাসন কাজ শেষ করে রাতের মধ্যেই যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে। খননের আগে রাস্তাটি যে অবস্থায় ছিল খননের পর সম্পূর্ণ আগের মতোই সরকারের পিপিআর মেনে উপযুক্ত, ঝকঝকে তকতকে করে তৈরি করে দিতে হবে; যাতে কোনক্রমেই বোঝার উপায় না থাকে যে রাস্তাটি খনন করা হয়েছিল।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, রাস্তার যে এলাকায় সড়ক খনন করা হবে সেই এলাকায় নাগরিকের সুবিধার্থে কমপক্ষে ৭ দিন আগেই সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রচার, মাইকিং করা, স্থানীয়দের সহায়তা চেয়ে প্রচারপত্র বিলি, কেবল অপারেটরের মাধ্যমে প্রচার, কাজ শুরুর কমপক্ষে ৩ দিন আগে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা, একইসঙ্গে নাগরিকদের এ নিয়ে কোন প্রকার অভিযোগ বা পরামর্শ দিতে সিটি কর্পোরেশন ও খননকারী সংস্থার নাম, ঠিকানা ও মোবাইল ফোন নম্বর সাইন বোর্ড আকারে কাজ শুরুর স্থানে টাঙ্গিয়ে দিতে হবে।
নতুন নীতিমালায় সকল ইউটিলিটি সার্ভিসের লাইন ফুটপাথের নিচে সার্ভিস ডাক্ট নির্মাণ করে বা সড়কের একপাশে স্থানান্তর করতে হবে। বিশেষ করে প্রধান প্রধান সড়কের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে। এছাড়া পরিকল্পিত সকল নতুন সড়কের উভয়পাশের ফুটপাথে সার্ভিস ডাক্ট নির্মাণ করে ইউটিলিটি সার্ভিস সেবার ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া প্রতিটি রাস্তা খননের চুক্তির নিয়ম বাধ্যতামূলক মানতে হবে। অন্যথায় শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। রাস্তা খোঁড়ার সময় অবশ্যই যান চলাচলের জন্য একপাশে ব্যবস্থা রাখতে হবে। রাস্তা খোঁড়ায় সময় গর্তের আশপাশে রাখা মাটি পরবর্তী ২৪ ঘন্টার মধ্যেই সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে সরিয়ে ফেলতে হবে। অন্যথায় সিটি কর্পোরেশন সব আবর্জনা বা মাটি সরিয়ে ঠিকাদার বা সংস্থার জামানত থেকে ব্যয় হিসেবে দ্বিগুণ অর্থ কেটে নেবে। প্রতিটি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের এপ্রিলের আগেই কোন্ কোন্ রাস্তা কাটা হবে তার তালিকা দেবে। এরপর কোন রাস্তা কাটার তালিকা জমা দিলে তার অনুমতি দেয়া হবে না। বিভিন্ন ইউটিলিটি সার্ভিসের তথ্য সংরক্ষণ করে জিআইএস বেজড সার্ভে করে ইউটিলিটি সার্ভিসেস এস বেল্ট নক্সা প্রণয়ন করতে বলা হবে। এজন্য রাজধানীর সব সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান উদ্যোগ নেবে। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ না করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের আংশিক বা পুরো জামানত বাজেয়াপ্ত করবে সিটি কর্পোরেশন। খননকালে যদি কোন সংস্থার ভূগর্ভস্থ লাইনের ক্ষতি হয় তাহলে যৌথ পরিমাপের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ বিল দিতে হবে। কোন প্রতিষ্ঠান পূর্ববর্তী কাজের বিল পরিশোধ না করলে বা ক্ষতিপূরণ না দিলে ঐ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নতুন কোন খনন কাজের অনুমতি দেয়া হবে না। তবে ক্ষতিগ্রস্ত ইউটিলিটি প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র সাপেক্ষে প্রদান করা যেতে পারে।
নতুন নীতিমালায় নির্দিষ্ট সময়ের মাঝে রাস্তা খোঁড়ার কাজ শেষ না হলে আইনানুযায়ী জরিমানা দিতে হবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। এছাড়া যে কোন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানকে চাইলেই যে কোন রাস্তা খননের অনুমতি দিতে পারবে না সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ। এজন্য রাস্তার এস বিল্ট নক্সা, স্পেসিফিকেশন, প্রয়োজনে এসব রাস্তার দলিলসহ যাবতীয় তথ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই কেবল রাস্তা খোঁড়ার অনুমতি দেবে সিটি কর্পোরেশন। এজন্য সিটি কর্পোরেশনকে তার সীমানার সব সেবাদানকারী সংস্থা হস্তান্তর করে সড়কের এস বেল্ট নক্সা সংরক্ষণ করতে হবে। আবেদনের বিশ কর্মদিবসের মধ্যেই রাস্তা খননের অনুমতি দেয়া হবে। কোন্ কোন্ যন্ত্রপাতি দিয়ে রাস্তা খনন করা হবে, কতদিন লাগবে ও কত রাস্তা খনন করা হবে তার তথ্য রাস্তার ওপর সাইনবোর্ড দিয়ে তথ্য প্রকাশ করা বাধ্যতামূলক।
মন্ত্রণালয় সূত্র মতে, রাজধানীর দুই সিটি কর্পোরেশন শুধুমাত্র যখন তখন রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কারণেই রাজধানীবাসীকে ভয়াবহ দুর্ভোগ পোহাতে হয়। রাস্তায় যানজট সৃষ্টির অন্যতম কারণও রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি। চোখ খুললেই শীত কিংবা বর্ষা নয় যখন তখন অলিগলি থেকে শুরু করে রাজপথ সর্বত্রই সারাবছরই রাস্তা খুঁড়তে দেখা যায়। কারো নির্দেশ না মেনে এমনকি সিটি কর্পোরেশনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েই চলছে রাস্তা খোঁড়াখুড়ি। এ থেকে স্থায়ীভাবে নাগরিকদের দুর্দশা লাঘব করতে সরকার এই নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করছে। সূত্র মতে, নীতিমালায় বলা হয়েছে সড়ক খননের আবেদন বিবেচনার সময় সড়কের নিচের পানি, পয়ঃনিষ্কাশন, ড্রেনেজ, গ্যাস, বিদ্যুত, টেলি কমিউনিকেশন, অপটিকেল ফাইবার ইত্যাদি ভূগর্ভের সার্ভিস ব্যবস্থায় ইনস্টলেশন এলাইনমেন্ট সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তবেই কেবল অনুমতি প্রদান করা হবে। এছাড়া সিটি কর্পোরেশন রাস্তা খননের সময় সৃষ্ট জনদুর্ভোগ লাঘবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
নীতিমালায় কোন্ কোন্ সংস্থা একই রাস্তা আবার খখন করতে হবে তার তথ্য যাচাই-বাছাই করবে সিটি কর্পোরেশন। বার বার যাতে একই রাস্তা খনন করতে না হয় তার জন্য এই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বছরের জমা দেয়া তালিকার বাইরে কোন সড়কই খনন করতে দেয়া হবে না। তবে অতি জরুরী কোন বিষয়ে বা বিশেষ ক্ষেত্রে অনুমতি সাপেক্ষে রাস্তা খনন করতে হবে। বছরে কমপক্ষে ২ বার সেবাদানকারী সব সংস্থা ও ট্রাফিক পুলিশসহ সকলকে নিয়ে বার্ষিক খনন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করবে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, কোন রাস্তার পুরোটাই একসঙ্গে কাটা যাবে না। সর্বোচ্চ ১৫ দিনে একটি ভাগ করে কাজ শেষ করার পর পরবর্তী ১৫ দিনের কাজ শেষ হবে। অন্যথায় মাসের পর মাস একটানা কোন রাস্তা খনন করতে দেয়া হবে না। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে ১ মাসের কাজের জন্য অনুমতি প্রদান করা হবে। এছাড়া নতুন স্থানে কাজ শুরুর আগে কোনক্রমেই মাটি পাইট বা সংশ্লিষ্ট সরঞ্জামাদি রাস্তায় রাখা যাবে না। নীতিমালা অনুযায়ী যে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ভবন নির্মাণের পূর্বেই সিটি কর্পোরেশনকে অবহিত করতে হবে। এছাড়া সড়ক উন্নয়নের পূর্বেই সকল প্রকার ইউটিলিটি সার্ভিস গ্রহণ করতে হবে। তবে নাগরিক সচেতনতার জন্য সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে সচেতনতা গড়ে তুলতে চিঠি প্রদান ও মিডিয়ায় বিজ্ঞপ্তি প্রদানের ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে।
খননের পর কোন রাস্তার কোন মতে সংস্কার বন্ধ করতে নীতিমালায় বলা হয়েছে, কোন প্রতিষ্ঠান রাস্তা খননের পর ওই রাস্তার গর্তের মাঝে বালি দিয়ে ভালভাবে ভরাট করতে হবে ও ব্রিকসলিং ও হেরিংবন্ড দিয়ে যথাযথভাবে যান চলাচলের উপযোগী করতে হবে। এছাড়া খনন কাজ শেষে আশপাশের সারফেজ ড্রেন ধুয়েমুছে পরিষ্কার করে দিতে হবে। এমনভাবে পরিষ্কার করতে হবে যাতে কাজটি শুরু করার আগের অবস্থায় দেখা যায়। খননের সময় সংস্থা বা সাইটে অনুমতিপত্র সঙ্গে রাখবে ও চাহিবামাত্রই ট্রাফিক বিভাগকে প্রদর্শন করতে হবে। অতিরিক্ত কোন খনন কাজ হচ্ছে কিনা তা ট্রাফিক বিভাগ নজরদারি করবে। কোন সমস্যা দেখা দিলে সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলীকে সঙ্গে সঙ্গেই অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। জামানতের অর্থ ১৫ দিনের মধ্যেই ঠিকাদারদের ফেরত দেয়া হবে। দিনেরবেলায় রাস্তা খনন সম্পর্কে বলা হয়েছে, অতি প্রয়োজনে ওয়ানস্টপ সেলের সঙ্গে আলোচনা করে সিটি কর্পোরেশন ও ট্রাফিক পুলিশকে জানাতে হবে।
বর্ষকালে রাস্তা খুঁড়তে হলে মূল ক্ষতিপূরণসহ অতিরিক্ত ৫০ ভাগ ফি জমা দিতে হবে। যুক্তিসঙ্গত কোন কাজ শেষ করতে দেরি হলে কমপক্ষে ৫ দিন আগে সিটি কর্পোরেশনকে অবহিত করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রথম সাতদিনের জন্য কোন জরিমানা করা হবে না তবে এর বেশি দেরি হলে একভাগ হারে জরিমানা আরোপ করা হবে। নীতমালার শর্ত পূরণ না করলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে। কোন সংস্থার অতি জরুরী মেইনটেনেন্সের জন্য সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলীর কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে নিয়মানুযায়ী খনন কাজ করতে পারবে।
নীতিমালা অনুযায়ী উন্নত বিশ্বের ন্যায় তাল মেলাতে কম সময়ে অধিক কাজ করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে রোড কাটার পাওয়ার স শোভেল সিস্টেম, হাইড্রোলিক এক্সক্যাভেটর, মোবাইল পাইল ড্রাইভিং রিগ, হাইড্রোলিক ফিটার, হেভি ডিউটি মোবাইল জেনারেটর, ওয়াকিটকি, লেবার ইকুইপমেন্ট যেমন হেলমেট, হ্যান্ড গ্লাভস, গামবুট, এপ্রোন, লাইটসমৃদ্ধ হতে হবে। যা ঠিকাদারদের সঙ্গে করা চুক্তিতে উল্লেখ করবে সিটি কর্পোরেশন। কাজ পরিদর্শনের সুবিধার্থে চুক্তিতে খনন সংশ্লিষ্ট সকল ঠিকাদার, প্রকৌশলীর নাম ও মোবাইল নম্বর থাকতে হবে। কোন কাজ করার সময় সংশ্লিষ্ট অন্য কোন সেবাদানকারী সংস্থার সেবা বন্ধ না হয় সেজন্য দুর্ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির উপস্থিতিতেই সমাধান করতে বলা হয়েছে। খননকৃত সড়কের পুনঃনির্মাণ বা মেরামতকালে সড়কের টপ সারফেস উঁচু করা যাবে না। রাতের কাজের সময় অতিরিক্ত আলো ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখতে হবে। কাজ শুরুর কমপক্ষে ৩ দিন আগে সংশ্লিষ্ট থানা ও ডিসি ট্রাফিককে জানাতে হবে।
ওয়ানস্টপের মাধ্যমে দ্রুত কাজ করতে, খননকাজের সর্বোচ্চ তদারকি করতে ও সমন্বয় করতে সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে সভাপতি ও প্রধান প্রকৌশলীকে সদস্য সচিব করে ওয়াসা, বিদ্যুত ঢাকা যানবাহন সমন্বয় বোর্ডসহ সেবাদানকারী ১২ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটি প্রতি ২ সপ্তাহ পরপর সভা আহ্বান করে সকল কাজের সমন্বয় করা হবে। এছাড়া খনন ও পরবর্তী মেরামত কাজ মনিটরিংয়ের জন্য ৩ সদস্যের একটি মনিটরিং সেল থাকবে। মূলত যখন তখন নিয়মবহির্ভূতভাবে রাস্তার খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধ করতে নতুন নীতিমালাটির কঠোর বাস্তবায়ন করা গেলে সড়ক খননের ফলে সারাবছরের সৃষ্ট জনদুর্ভোগ অনেকাংশে কমে আসবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, রাজধানীতে যখন তখন ও যত্রতত্র নিয়মহীন সড়ক খনন বন্ধ করতে আমরা ২০০৩ সালের সড়ক খনন নীতিমালাটি যুগোপযোগী করতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছি। রাজধানীতে প্রায় সারাবছরই মাসের পর মাস একটানা রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ যা চলতেই থাকে। এতে নিয়মিতই নাগরিকদের ভয়াবহ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। নাগরিকদের রাস্তায় চলাচলের ক্ষেত্রেও অবর্ণনীয় কষ্ট হচ্ছে। শীতকালে বা বর্ষকালে যখন তখন রাস্তা কাটা শুরু হয় যা চলে দীর্ঘ সময় ধরে। রাজধানীতে বর্তমানে দুটি সিটি কর্পোরেশন। কোটি কোটি লোকের বসবাস এই নগরীর রাজপথ থেকে শুরু করে অলিগলি সকল রাস্তা খনন করতে আমরা ঢাকা মহানগরী সড়ক খনন নীতিমালা-১৮ নামে একটি নীতিমালা তৈরি করছি। বর্তমানে যার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। জনদুর্ভোগ কমাতে ও রাস্তা খননে উন্নত বিশ্বের ন্যয় আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে অত্যন্ত কম সময়ে রাস্তা খননের কাজ শেষ করতে নীতিমালাটি প্রণয়ন করা হচ্ছে। নীতিমালায় কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নিয়ম না মেনে খনন কাজ করলে জরিমানা ও শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া আবেদন, অনুমতি প্রদান, রাস্তা খনন, কাজের মনিটরিং ও পরবর্তীতে সংস্কারসহ সকল কাজের জন্য ওয়ানস্টপ সেল গঠন করা হবে। সিটি কর্পোরেশন এ সকল কাজের সমন্বয় করবে। আশা করি, নতুন নীতিমালাটি নাগরিক দুর্ভোগ কমাতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। নাগরিকদের স্বার্থে প্রণয়নের পর নীতিমালার নিয়মাবলী বাস্তবায়নের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।