আসামের নিম্নচাপের প্রভাব : পঞ্চগড়ে দু’দিন ধরে বৃষ্টি

সারাদেশ ডেস্ক

ছবি : সংগৃহিত

পঞ্চগড়ে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে জনজীবনে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। দু’দিন ধরে টানা বৃষ্টির সঙ্গে সূর্যেরও দেখা নেই।

এদিকে, চলতি শীত মৌসুমের শেষে আবারও জেকে বসেছে শীত।

পশ্চিমা লঘুচাপের সঙ্গে পূবালী বাতাসের সংমিশ্রণের ফলে আকস্মিক এই বৃষ্টিপাত হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস। কনকনে শীত আর টিপটিপ বৃষ্টিতে দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, ভারতের আসাম অঞ্চলে নিম্নচাপের ফলে উত্তরের জেলা পঞ্চগড় এবং এর আশপাশ এলাকায় শুরু হয় পশ্চিমা লঘুচাপ। পশ্চিমা লঘুচাপের সঙ্গে পূবালী বাতাসের সংমিশ্রণে এসব এলাকায় অবিরাম গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। দুই দিন ধরে জেলার কোথাও সূর্যের দেখা যায়নি।

শনিবার দুপুর পর্যন্ত ৮ দশমিক ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস। একই সঙ্গে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। টানা বৃষ্টি এবং কনকনে শীতের ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন কর্মজীবী মানুষ।

স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহতের পাশাপাশি জেলাজুড়ে জনজীবনে দেখা দিয়েছে অচলাবস্থা। প্রয়োজন ছাড়া মানুষজন ঘর থেকে বের হচ্ছে না। বিশেষ করে রিকশা-ভ্যানচালক আর খেটে খাওয়া মানুষের আয় কমে গেছে।

জেলা শহরের ধাক্কামারা পুরাতন পঞ্চগড় এলাকার রিকশাচালক করিম মিয়া বলেন, সকাল থেকে রিকশা নিয়ে ঘুরাঘুরি করছি। দুপুর পর্যন্ত মাত্র ৫০ টাকা আয় করেছি। গতকালও একই অবস্থা ছিল। বৃষ্টি আর শীতের কারণে রাস্তাঘাটে মানুষের সংখ্যা কমে গেছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বের হন না। এমন পরিস্থিতিতে সব দিকেই আমাদের দুর্ভোগ।

এদিকে, দিনভর বৃষ্টির কারণে বিপাকে পড়েছে এসএসসি পরীক্ষার্থীরা। বৃষ্টির মধ্যে অধিকাংশ পরীক্ষার্থীকে কাকভেজা হয়ে পরীক্ষার হলে ঢুকতে হয়েছে।

অন্যদিকে, হঠার বৃষ্টির কারণে জেলা শহরে বিদ্যুতের বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ১০-১৫ মিনিট পরপর বিদ্যুত আসা-যাওয়া করতে দেখা যায়। বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রে পর্যাপ্ত আলো না থাকায় অনেকের পরীক্ষার খাতায় লেখতেও সমস্যা হয়েছে। বিশেষ করে পঞ্চগড় সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের দুর্ভোগ দেখা যায়।

পঞ্চগড় বিদ্যুত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসনাত জামান বলেন, বৃষ্টি কারণে সদর হাসপাতালের সামনে ট্রান্সমিটারে শর্ট সার্কিটে আগুন লেগেছিল। বিভিন্ন বিদ্যুতের খুঁটিতেও সমস্যা দেখা দেয়। এজন্য বিভিন্ন এলাকায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুত সরবরাহে কিছুটা সমস্যা দেখা দিয়েছে। আমাদের লোকবল এবং পরিবহন সমস্যার মধ্যেও সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকায় ছোটাছুটি করেছি। অফিসের সবাই মাঠে কাজ করছেন। দ্রুত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রহিদুল ইসলাম বলেন, ভারতের আসাম অঞ্চলে নিম্নচাপের ফলে উত্তরের জেলা পঞ্চগড় এবং এর আশপাশ এলাকায় পশ্চিমা লঘুচাপ দেখা দিয়েছে। পশ্চিমা লঘুচাপের সঙ্গে পূবালী বাতাসের সংমিশ্রণে এসব এলাকায় দুই দিন ধরে অবিরাম গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। শনিবার দুপুর পর্যন্ত ৮ দশমিক ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।  আজ রোববার পর্যন্ত অবস্থা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে