আজ সোমবার অমর একুশে গ্রন্থমেলার একাদশতম দিন। গ্রন্থমেলা চলে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। মেলায় আজ নতুন বই এসেছে ১২৮টি।
বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় নৃত্যাচার্য বুলবুল চৌধুরী : জন্মশতবর্ষ শ্রদ্ধাঞ্জলি শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অনুপম হায়াৎ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন আমানুল হক, লুভা নাহিদ চৌধুরী এবং শিবলী মহম্মদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কামাল লোহানী।
প্রাবন্ধিক বলেন, রক্ষণশীল বাঙালি মুসলিম সমাজে বুলবুল চৌধুরী ছিলেন এক বিদ্রোহী নৃত্যশিল্পী। নৃত্যের মাধ্যমে তিনি জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার সুকুমার বৃত্তি ও মানবিকবোধ জাগিয়েছেন। নৃত্য যে রাজনৈতিক-সামাজিক চেতনাবোধ ও সা¤্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবার সাহস ও শক্তি সঞ্চয় করতে পারে এবং ক্ষুধা-মন্বন্তরের সময় মুনাফাখোর, চোরাকারবারি, অসৎ প্রশাসনের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও প্রতিবাদ ছড়াতে পারে বুলবুল চৌধুরীই প্রথম তা দেখিয়েছেন। তিনি বিদেশি শাসক-শোষকদের দেশ ছাড়ার আহবান জানিয়েছেন নৃত্যের মাধ্যমে। নৃত্যকে তিনি সাংগঠনিক ও পদ্ধতিগতভাবে চর্চার জন্য ক্ষেত্র তৈরি করেছেন।
আলোচকবৃন্দ বলেন, বুলবুল চৌধুরী নৃত্যচর্চায় সমকালীন ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রেরণার উৎস হয়ে আছেন। তাঁর অনুসৃত পথ ধরে নৃত্য বিষয়ক প্রতিষ্ঠান, সংগঠন, একাডেমি, সমিতি, শিক্ষা, গবেষণা, প্রকাশনা এগিয়ে চলেছে তাঁর জন্মশতবর্ষ পরেও। জন্মশতবর্ষে বুলবুল চৌধুরীর সমস্ত সৃষ্টিকর্ম সংগ্রহ, সংরক্ষণপূর্বক প্রচার, প্রকাশ, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। তাঁর নৃত্যকর্ম পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি তাঁকে নিয়ে একটি স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করা যেতে পারে।
সভাপতির বক্তব্যে কামাল লোহানী বলেন, বুলবুল চৌধুরী নৃত্যের পাশাপাশি প্রাচী নামের উপন্যাস লিখে বাংলা সাহিত্যে যোগ করেছেন নতুন মাত্রা। তাঁর নৃত্য কেবল প্রায়োগিক শিল্পকলা নয়, একই সঙ্গে সমস্ত অসুন্দর এবং কলুষতার বিরুদ্ধে জোর প্রতিবাদের নাম।
‘লেখক বলছি’ অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন প্রকাশিত গ্রন্থ বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেন- হোসেন উদ্দীন হোসেন, হাবিব আনিসুর রহমান, ড. তাশরিক-ই-হাবিব, মশিউল আলম এবং শিহাব শাহরিয়ার।
কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ করেন গোলাম কিবরিয়া পিনু এবং চঞ্চল আশরাফ। আবৃত্তি পরিবেশন করেন গোলাম সারোয়ার এবং মুঃ আহসান উল্লাহ ইমাম খান তমাল। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী চন্দনা মজুমদার, শফিম-ল, সেলিম চৌধুরী, পাগলা বাবুল, রুশিয়া খানম এবং কোহিনুর আকতার গোলাপী। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন বেণু চক্রবর্তী (তবলা), মো. মামুনুর রশিদ (বাঁশি), আনোয়ার সাহাদাত রবিন (কী-বোর্ড), রতন কুমার রায় (দোতারা)।
আগামীকালের অনুষ্ঠানসূচি :
আগামীকাল ১২ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে গ্রন্থমেলার ১২তম দিন। মেলা চলবে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।
বিকেল ৪টা গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে কবি-অনুবাদক মনিরউদ্দীন ইউসুফ : জন্মশতবর্ষ শ্রদ্ধাঞ্জলি শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন হাসান হাফিজ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন শফিউল আলম, রেজাউদ্দিন স্টালিন এবং মোহাম্মদ আবদুল হাই।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদ। সন্ধ্যায় রয়েছে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, কবিতা-আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।