ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসন থেকে টানা তিনবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি একাদশ জাতীয় সংসদের তিন কমিটিতে স্থান পেয়েছেন।
চলতি সংসদে তিনি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি হয়েছেন। রোববার (১০ ফেব্রুয়ারি) সংসদ নেতার পক্ষে প্রধান হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেন। পরে প্রস্তাবটি ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া ভোটে দিলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সদস্য করা হয়েছে প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, আসলামুল হক, কাজী ফিরোজ রশীদ, তানভীর ইমাম, আশেক উল্লাহ রফিক, আনোয়ার হোসেন খান ও শেখ তন্ময়কে।
এছাড়াও র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হয়েছেন। উল্লেখ্য সংবিধানে দুটি কমিটির কথা উল্লেখ করা হয়েছে- এর একটি সরকারি হিসাব কমিটি। বাজেটের অতিরিক্ত ব্যয় নিরীক্ষাও এ কমিটির কাজ। জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী সরকারের বার্ষিক আর্থিক হিসাব পরীক্ষা করা সরকারি হিসাব কমিটির মূল কাজ।
এছাড়া সরকারের নির্দিষ্টকরণ হিসাব ও এ সম্পর্কে মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের দেয়া প্রতিবেদন পরীক্ষা করা এবং কোনো অর্থবছরে কোনো কাজের জন্য সংসদে মঞ্জুর হওয়া অর্থের চেয়ে বেশি অর্থ খরচ হলে কী পরিস্থিতিতে এ অতিরিক্ত খরচ হয়েছে তা পরীক্ষা করা এবং প্রয়োজনীয় সুপারিশ করাও এ কমিটির কাজ।
সরকারি হিসাব সম্পর্কিত কমিটির সাবেক সভাপতি মহিউদ্দিন খান আলমগীরকে এবার কমিটির সদস্য করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- আবুল কালাম আজাদ, আব্দুস শহীদ, আফসারুল আমিন, শহীদুজ্জামান সরকার, র আ ম উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী, সালমান এফ রহমান, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, জহিরুল হক ভূঁইয়া মোহন, মনজুর হোসেন, আহসানুল ইসলাম টিটু ও মোস্তফা লুৎফুল্লাহ। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ডা. রুস্তম আলী ফরাজীকে এ কমিটির সভাপতি করা হয়েছে। বাংলাদেশের সংসদীয় ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সরকারি হিসাব সম্পর্কিত কমিটির সভাপতি করা হয়েছে বিরোধী দল থেকে।
এইচ এন আশিকুর রহমানকে পুনরায় সভাপতি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি গঠন করা হয়।কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন- প্রতিমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন, প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, প্রাক্তন চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, হাফিজুর রহমান, র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, দীপঙ্কর তালুকদার ও পনির উদ্দিন আহমেদ
এর আগে নবম সংসদে মোকতাদির চৌধুরী পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দশম সংসদে ছিলেন পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং একই সঙ্গে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য।
উল্লেখ্য মোকতাদির চৌধুরী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক একান্ত সচিব (১৯৯৬-২০০১) হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় থেকেই নিজ জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট নির্মাণ, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, স্কুল কলেজের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণসহ ব্যাপক উন্নয়ন করছেন।
তিনি নবম সংসদের উপনির্বাচনে সাংসদ হওয়ার পর তাঁর নির্বাচনী এলাকায় নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ, নদী-খাল খনন, ফ্লাইওভার/ওভারপাস নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড সম্পন্ন হয়েছে তার আমলে।
ইতোমধ্যে তার নির্বাচনী এলাকার দুটি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিত করা হয়েছে। তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও বিজয়নগর উপজেলায় বিগত আট বছরে প্রায় চার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করেছেন। তার আমলেই এই দুই উপজেলার চিত্র পাল্টে গেছে।