হরিপুরে বিজিবির গুলিতে নিহত ৩, গ্রামজুড়ে শোকের মাতম

ডেস্ক রিপোর্ট

ছবি : সংগৃহিত

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে গরু জব্দ করা নিয়ে সংঘর্ষের মধ্যে বিজিবির গুলিতে তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনায় বহরমপুর গ্রামে চলছে শোকের মাতম। নিহতদের পরিবারের সদস্যদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে পরিবেশ।

নিহতদের পরিবার ও এলাকাবাসী এ ঘটনায় বিজিবি সদস্যদের শাস্তি দাবি করেছেন। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি করেছেন।

স্থানীয়রা জানায়, বহরমপুর গ্রামের এক ব্যক্তি মঙ্গলবার সকালে গরু নিয়ে যাদুরানী বাজারের উদ্দেশে বের হন বিক্রি করার জন্য। ওই গরু পাচার করে আনা হয়েছে সন্দেহে বেতনা ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা তা জব্দ করতে গেলে এলাকাবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।

অন্যদিকে বিজিবি কর্মকর্তারা বলছেন, ভারতীয় গরু আটক করায় সশস্ত্র চোরাকারবারীরা হামলা করলে তারা গুলি চালাতে বাধ্য হন। গুলিতে নিহত হয় ৩ জন। আহত হয় ১৬ জন।

গ্রামজুড়ে শোকের মাতম । ছবি : ইন্টারনেট

নিহতরা হলেন, গফুয়া ইউনিয়নের রুইয়া গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে নবাব (৩০) ও জহিরুলের ছেলে সাদেক মিয়া (৪০) এবং বহরমপুর গ্রামের নূর ইসলামের ছেলে এসএসসি পরীক্ষার্থী জয়নাল (১৬)। এলাকাবাসী লাশ ঘিরে বিক্ষোভ করছে এবং ঘটনার জন্য দায়ী বিজিবি সদস্যদের শাস্তি দাবি করছেন।

বহরমপুর গ্রামের সিরাজুল ও রহমত জানান, বিজিবি কিছুদিন ধরেই এলাকায় অভিযান চালানোর নাম করে নিরীহ মানুষের গবাদি পশু ধরে নিয়ে যায় ক্যাম্পে। পরে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়। বিজিবি সদস্যরা ইচ্ছেকৃতভাবে গুলি করে মানুষ মারল, আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।

ঠাকুরগাঁও ৫০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তুহিন মো. মাসুদ বলেন, ওগুলো ভারতীয় গরু। সংঘবদ্ধ চোরাকারবারীরা কোনো এক সময় সেগুলো নিয়ে এসেছিল। তারা বাজারে নিয়ে যাওয়ার সময় সীমান্তের দুই কিলোমিটার ভেতরে আমাদের টহল দল তাদের ধরে। গরুগুলো বিওপিতে নেয়ার সময় দুই-তিনশ লোক অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।

তিনি বলেন, আমরা প্রথমে ঠেকানোর চেষ্টা করেছি। তাতে আমাদের অস্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন। আমরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দিয়েও বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় আমরা গুলি করতে বাধ্য হই।

এদিকে গুলিতে হতাহতের খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক কে এম কামরুজ্জামান সেলিম দুপুরে বহরমপুর গ্রামে যান তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ ও নিহতদের পরিবারে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেন।

এ ঘটনায় পরবর্তী সহিংসতা এড়াতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছেন বলে ওসি আমিরুজ্জামান জানিয়েছেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে