যা করণীয় আছে আমরা করব : ড. কামাল

ডেস্ক রিপোর্ট

গণফোরাম আয়োজিত শোকসভায় ড. কামালসহ অন্যান্যরা। ছবি-সংগৃহিত

গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ৩০ তারিখে (৩০ ডিসেম্বর) যে নির্বাচন হয়েছে, সেটিকে অনেকে প্রহসন বলেছেন, নাটক বলেছেন। ১৬ কোটি মানুষকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করে সংবিধান লঙ্ঘন করা হচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি ১৬ কোটি মানুষ এটা মেনে নেবে না। আমাদের যা করণীয় আছে আমরা তা করব।

জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর পুত্র প্রয়াত রাশেদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুতে গণফোরাম আয়োজিত শোকসভায় মঙ্গলবার তিনি এ বলেন।

ড. কামাল হোসেন বলেন, গণতন্ত্র আমাদের সংবিধানের মূলনীতি। সে আন্দোলন আমরা করে আসছি। ৩০ তারিখ যে নির্বাচন হয়েছে, সেটিকে অনেকে প্রহসন বলেছেন, নাটক বলেছেন। মানুষের প্রতি ভাঁওতাবাজি করা হয়েছে। কেন এগুলো করা হয়েছে?

এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে বলেন, আবার পরদিন সকালে আপনি বললেন, ‘আমি তো পাঁচ বছরের জন্য এসে গেছি।

ড. কামাল হোসেন বলেন, আমরা মনে করি ১৬ কোটি মানুষকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করে তাদের এভাবে বলা, এটি সংবিধান লঙ্ঘন।

ড. কামাল হোসেন আরও বলেন, গণতন্ত্রের সংগ্রামে রাশেদ সোহরাওয়ার্দীর অবদান আমাদের প্রেরণা জোগাবে।

তিনি জানান, এ ধরনের অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এটা জানিয়ে দেয়া হচ্ছে যে রাশেদ সোহরাওয়ার্দীর নাম এ দেশে চিরস্বরণীয় হয়ে থাকবে। এবং প্রতি বছরই জাতি তাকে এভাবে স্মরণ করবে। বিশেষ করে তার অবদান তরুণ সমাজে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। অনপ্রেরণা জোগাবে।

শোকসভায় ব্যারিস্টার মঈনুল ইসলাম বলেন, আমলাতান্ত্রিক সহযোগিতায় ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। আসলে এরা নিজেরা নিজেদের বঞ্চিত করেছে। স্বাধীন দেশের মানুষের জন্য এটা লজ্জার।

তিনি আরও বলেন, রাজনীতি এখন ব্যবসা হয়ে গেছে। এটা রাজনীতি নয়। এটা কোত্থেকে আসছে? দেশের রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে।

ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেন, রাশেদের মৃত্যুতে এক আলোকোজ্জ্বল পরিবারের শেষ প্রদীপটি নিভে গেল। শহীদ সোহরাওয়াদীর রাজনৈতিক মূল্যবোধ, গণতান্ত্রিক উদারতা, দূরদর্শিতা, সহনশীলতা ইত্যাদি গুণাবলি বিদায় নিতে নিতে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে সেটা সবাই জানে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায়, তারা রাশেদের মৃতদেহটা দেশে আনতে পারত। কেন যে আনা হলো না, খুব কষ্ট হচ্ছে।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, জনগণকে সঙ্গে না নিলে দেশে সুষ্ঠু রাজনীতি থাকতে পারে না। কিছুদিন আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ১২ লাখ রোহিঙ্গার যাওয়ার কোনও ইচ্ছা নেই। তাদের মধ্যে ৫ লাখ তরুণ-তরুণী, তাদের কোনও ইচ্ছা আকাঙ্ক্ষা নেই, লেখাপড়া নেই। সুতরাং, এটাই জঙ্গিবাদ উত্থানের একটা জায়গা হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি পশ্চিমের দিকে তাকিয়ে পূর্বে যান, ভারত যদি না চায় তাহলে সমস্যার সমাধান হবে না। আজকে ভারতপ্রীতি করে লাভ নেই, ভারত আমাদের কাছে শুধু নেবে। আপনিই তো বলেছেন ‘ভারতকে আর কত দেব? কিন্তু আপনি তো দিয়েই যাচ্ছেন, এখন পাঠাচ্ছেন ১৮০০ সৈন্য।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, ১৬ কোটি মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, কেউ প্রতিবাদ করল না। এটা কি শুধু কোনও রাজনৈতিক নেতা করবে, কোন রাজনৈতিক দল করবে? এটা হয় না।

তিনি আরও বলেন, ১ লাখ লোক কারাগারে আছে। এদেরকে মুক্ত করতে আসুন ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করি।

ড. মঈন খান বলেন, দেশে উদার গণতন্ত্র অনুপস্থিত। রাজনীতির নামে এখন হচ্ছে হিংসা, বিদ্বেষ।

সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের কল্যাণে আসুন রাজনীতিক হিংসা ভুলে গিয়ে একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে রাজনীতি করি।

শোকসভায় আরও বক্তব্য রাখেন- গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোকাব্বির খান।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে