আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমি আবার এটাও দেখেছি কোনো কোনো মিডিয়ায় জামায়াতের নবীন প্রবীণের দ্বন্দ্বটা খুবই স্পষ্ট, যারা প্রবীণ তারা তাদের পুরনো নীতি কৌশল আদর্শ আকড়ে থাকতেই অটল। নতুনরা চেঞ্জ চাচ্ছে। এটাকে কেন্দ্র করে জামায়াত সিদ্ধান্তহীনতায় আছে। তারা এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। তবে সেটা তাদের ইন্টার্নাল ম্যাটার, তারা কী সিদ্ধান্ত নেবে।
আজ শুক্রবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।
জামায়াত নাম পরিবর্তন এবং অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য ক্ষমা চেয়ে রাজনীতিতে আসতে চাইলে আওয়ামী লীগের অবস্থান কি হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগ স্বাগত জানাবে কি জানাবে না সেটা তো এখানে কোনো বিষয় নয়। তারা অতীতের ভুলের জন্য ক্ষমা চাইবে কি না, তারা ক্ষমাপ্রার্থী কি না, তারা ক্ষমাটা আগে চাক। তারপর বলব। তারা এখনো তো ক্ষমা চায়নি। তারা ক্ষমা চাওয়ার পরেই এ ব্যাপারে বিশ্লেষণ নিয়ে আমাদের মূল্যায়নটা, রিঅ্যাকশনটা আমরা প্রকাশ করতে পারি।
যুক্তরাজ্যে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাকে ফিরিয়ে আনতে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য যা যা করণীয় তা করা হচ্ছে। কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক যে উদ্যোগ, সে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে সরকারের উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে।
নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে বিএনপির মামলা প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, যে কোনো সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি মামলা করতে পারেন, তার ক্ষোভ প্রকাশ করতে পারেন। নির্বাচনে পরাজিতরা ট্রাইব্যুনালের সম্মুখীন হন, ট্রাইব্যুনালে তাদের অভিযোগ পেশ করেন, এটা নতুন কিছু নয়। এটা তাদের অধিকারও আছে।
তিনি বলেন, সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির অধিকার আছে, তিনি মামলা করতে পারেন। এ বিষটায় আমাদের কিছু করণীয় নেই। যেহেতু নির্বাচন কমিশন এই নির্বাচনে যারা জয়লাভ করেছে, তাদের গেজেট প্রকাশ করেছে এবং বিজয়ী বলে ঘোষণা করেছে। এখন ট্রাইব্যুনালে যদি কেউ মামলা করে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের পর, এ বিষয়টার দায়টা বর্তায় নির্বাচন কমিশনের।
কাদের বলেন, তারাই এখন বিষয়টা নিয়ে আদালতে গিয়ে মোকাবেলা করবেন, লিগ্যাল ব্যাটেল তারা ফেস করবে, এটাই নিয়ম। এখানে আমাদের কিছু করার নেই। বিষয়টা সম্পূর্ণভাবে নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার।
মামলা নিয়ে আওয়ামী লীগ বিব্রত কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মোটেও না, এটা তো অস্বাভাবিক বা নতুন কিছু বিষয় নয়। ট্রাইব্যুনালে মামলা করা যায়, আমি মামলা করার বিরুদ্ধে নই, সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি মামলা করতে পারে। পরাজিত ব্যক্তির অবলম্বন আইনের কাছে আশ্রয় নেয়া, তিনি আইনের কাছে আশ্রয় নেবেন। আইনের আশ্রয় নিয়েছেন, অসুবিধা কী? আদালত খতিয়ে দেখবেন নির্বাচন কমিশন জবাব দেবে, আমাদের কোনো বিষয় নয়।
এ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো নৈতিক অধিকার বিএনপির নেই জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে ১৫ ফেব্রুয়ারি। এই ১৫ ফেব্রুয়ারিতে প্রহসনের নির্বাচন করেছিল বিএনপি, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে আর কখনও হয়নি। ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন নিয়ে যারা কলঙ্কিত, তাদের মুখে অন্য কোনো নির্বাচনের সুষ্ঠুতা নিয়ে, স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন করা উচিত না।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সাত্তার, কেন্দ্রীয় সদস্য আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।