কক্সবাজারের ১০২ ইয়াবা কারবারি সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন।
পুলিশের ভাষ্য, তারা সবাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা কারবারি। আত্মসমর্পণকালে তারা তিন লাখ ৫০ হাজার ইয়াবা ও ৩০টি দেশীয় পিস্তল জমা দিয়েছেন।
আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে টেকনাফ পাইলট হাইস্কুল মাঠে আয়োজিত আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ও পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর কাছে ইয়াবা ও অস্ত্র জমা দিয়ে তারা আত্মসমর্পণ করেন।
এ সময় আত্মসমর্পণকারীদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
পুলিশ জানায়, আত্মসমর্পণ করা মাদককারবারিদের মধ্যে ২৯ জন ইয়াবা গডফাদারও রয়েছেন। আত্মসমর্পণের পর তাদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে পুলিশের হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
আত্মসমর্পণের পর এক প্রতিক্রিয়ায় দুই শীর্ষ ইয়াবা কারবারি টেকনাফ সদরের ইউপি সদস্য এনামুল হক ও সিরাজ বলেন, ইয়াবা পুরো দেশের যুব সমাজকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এতে দেশের নতুন প্রজন্মর চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। এই অপরাধে আমরা দায়ী। অন্যদিকে, ইয়াবা ব্যবসার কারণে টেকনাফসহ পুরো কক্সবাজার জেলার মানুষ সারাদেশের মানুষের কাছে ছোট হয়ে আছে। যেখানে যাই টেকনাফের মানুষ পরিচয় দিলেও আমাদের ঘৃণা করা হয়।
তারা বলেন, এমনকি কোথাও হোটেল ও বাসা ভাড়া নিতে গেলে আমাদের দেয়া হয় না। আমাদের সন্তানদের স্কুলে ভর্তি করাতে গেলে ভর্তি করা হয় না। এটা বড়ই কষ্টের এবং লজ্জার। এসব কিছু বুঝতে পেরে আমরা দেশকে ইয়াবার আগ্রাসন থেকে বাঁচাতে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেছি। যারা এখনো আত্মসমর্পণ করেনি তাদেরও আত্মসমর্পণ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
এর আগে শনিবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ আরকান সড়ক যোগে তিনটি বাসে করে ‘সেফহোম’থেকে টেকনাফে আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান মঞ্চে আনা হয়। সেখান থেকে বের করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে প্রতীকীভাবে ইয়াবা ট্যাবলট ও অস্ত্র জমা দিয়ে তারা আত্মসমর্পণ করেন। এসময় তাদের পরনে স্বাভাবিক পোশাকই দেখা গেছে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেনের সভাপতিত্বে আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে পুলিশের চট্টগ্রাম রেন্ঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, অতিরিক্ত ডিআইজি (অপারেশন অ্যান্ড ক্রাইম) মোহাম্মদ আবুল ফয়েজ, কক্সবাজার জেলার চারটি আসনের সংসদ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।