দেশব্যাপী চলা মাদকবিরোধী অভিযান থেকে প্রাণ বাঁচাতে প্রথমবারের মতো মাদক কারবারীদের একটি অংশ সরকারের কাছে আজ শনিবার আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছে।
৩২ গডফাদারসহ ১০১ জন শীর্ষ ইয়াবা কারবারি সকাল ১০টায় টেকনাফ পাইলট স্কুল মাঠে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে আত্মসমর্পণ করবে বলে পুলিশের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
তবে এই ১০১ জন গডফাদারসহ শীর্ষ ইয়াবা কারবারিরা জেলা পুলিশের সেফহোমে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
সূত্রমতে, বিশেষ নিরাপত্তা পাহারায় ওইসব ইয়াবা কারবারিদের ১৬ ফেব্রুয়ারি সকালে টেকনাফে নিয়ে যাওয়া হবে।
ইতিমধ্যে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করতে কক্সবাজার অবস্থান করছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইজিপি ড. জাবেদ পাটোয়ারী, স্বরাষ্ট্র সচিব মোস্তফা কামাল, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক বিপিএম-পিপিএম।
এদিকে অনুষ্ঠানে কক্সবাজারের চার সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, আশেক উল্লাহ রফিক, জাফর আলম ও শাহিন আকতার, বিজিবির রিজেন্ট কমান্ডার জেনারেল সাজেদুর রহমান, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন, গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআইয়ের কর্নেল জিএস ইমরান ইবনে রুপসহ পুলিশ ও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন কক্সবাজার পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসাইন। এদিকে ১৬ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে যে ১০১ জন আত্মসমর্পণ করবেন তাদের মধ্যে রয়েছে ৩২ জন ইয়াবা গডফাদার। তারা হলো- সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদির চার ভাই আবদু শুক্কুর, শফিকুল ইসলাম, আবদুল আমিন, ফয়সাল রহমান ও বদির ভাগনে সাহেদ রহমান নিপু এবং সাহেদ কামাল।
এ ছাড়া রয়েছে টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদের ছেলে দিদার মিয়া ও পৌর কাউন্সিলর নুরুল বশর প্রকাশ নুরশাদ, পশ্চিম লেদার নুরুল হুদা মেম্বার, নাজিরপাড়ার এনামুল হক মেম্বার, সাবরাংয়ের মোয়াজ্জেম হোসেন প্রকাশ ধানু মেম্বার, আলী খালির জামাল মেম্বার, শাহপরীর দ্বীপের রেজাউল করিম মেম্বার, সাবরাংয়ের সামশু মেম্বার, দক্ষিণ জালিয়া পাড়ার ইমাম হোসেন, পশ্চিম লেদার বোরহান, সাবরাংয়ের নুরুল আমিন, নাজিরপাড়ার ভুট্টোর ভাগিনা আবসার, হ্নীলার রমজান ও বড় হাবিবপাড়ার ছিদ্দিক, আলী আহমদ চেয়ারম্যানের দুই ছেলে আবদুর রহমান ও জিয়াউর রহমান, হ্নীলার পশ্চিম সিকদারপাড়ার ছৈয়দ আহমদ, নাজিরপাড়ার আবদুর রহমান, পুরাতন পল্লান পাড়ার শাহ আলম, জাহাজপুরার নুরুল আলম, হ্নীলা পশ্চিম সিকদারপাড়ার রশিদ আহমদ, ওয়ালিয়াবাদের মারুফ বিন খলিল বাবু, মৌলভীপাড়ার একরাম হোসেন, মধ্যম ডেইলপাড়ার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, চৌধুরী পাড়ার মং সং থেইন প্রকাশ মমচি ও দক্ষিন জালিয়াপাড়ার জুবাইর হোসেন।
এছাড়াও রয়েছে ৬৯ জন শীর্ষ ইয়াবা কারবারি। তারা হলো, হ্নীলা পূর্ব পানখালীর নজরুল ইসলাম, পশ্চিম লেদার নুরুল কবীর, নাজিরপাড়ার সৈয়দ হোছন, নাইট্যাংপাড়ার মো. ইউনুচ, সাবরাং আলীর ডেইল এর জাফর আহমদ, হ্নীলা ফুলের ডেইলের রুস্তম আলী, শামলাপুর জুমপাড়ার শফিউল্লাহ, একই এলাকার ছৈয়দ আলম, উত্তরলম্বরীর আবদুল করিম প্রকাশ করিম মাঝি, রাজারছড়ার আবদুল কুদ্দুছ, জাহেলিয়াপাড়ার মো. সিরাজ, সাবরাংয়ের আবদুল হামিদ, নাজিরপাড়ার মো. রফিক, নতুন পল্লানপাড়ার মো. সেলিম, নাইট্যংপাড়ার মো. রহিম উল্লাহ, নাজিরপাড়ার মো. হেলাল, চৌধুরীপাড়ার মোহাম্মদ আলম, তুলাতলীর নুরুল বশর, হাতিয়াঘোনার দিল মোহাম্মদ, একই এলাকার মোহাম্মদ হাছন, দক্ষিণ নয়াপাড়ার নুর মোহাম্মদ, সদর কচুবনিয়ার বদিউর রহমান, পূর্ব লেদার জাহাঙ্গীর আলম, মধ্যম জালিয়াপাড়ার মোজাম্মেল হক, ডেইলপাড়ার আবদুল আমিন, উত্তর আলী খালীর শাহ আজম, দক্ষিণ নয়াপাড়ার আলমগীর ফয়সাল, সাবরাং ডেইলপাড়ার মো. সাকের মিয়া, সাবরাংয়ের আলী আহমদ, উত্তর শীলখালীর মো. আবু ছৈয়দ, জাদিমুরার মোহাম্মদ হাসান আবদুল্লাহ, রাজার ছড়ার হোসেন আলী, সাবরাং নয়াপাড়ার মো. তৈয়ব, উত্তর জালিয়াপাড়ার নুরুল বশর মিজি, নাজিরপাড়ার জামাল হোসেন, মৌলভীপাড়ার মো. আলী ও এই এলাকার আবদুল গনি, জালিয়াপাড়া, মো. হাশেম, পুরাতন পল্লানপাড়ার ইসমাইল, নাইট্যাংপাড়ার আইয়ুব, সাবরাংয়ের হোসন আহমদ, সাবরাংয়ের শওকত আলম, নাইট্যাংপাড়ার হাবিব, আলী খালীর হারুন, মাঠপাড়ার কামাল, সাবরাংয়ের রাসেল, ডেইলপাড়ার নুরুল আমিন, শীলবনিয়াপাড়ার আইয়ুব, জালিয়াপাড়ার আলম, লেদার হামিদ, মুন্ডর ডেইলয়ের মনজুর, লেদার রবিউল আলম, সাবরাংয়ের মৌলভী বশির, হ্নীলার মাহাবুব, বাজারপাড়ার মো. শাহ, লেদার ফরিদ আলম, লেদার মো. হোছন, জালিয়াপাড়ার নুরুল আলম, লেদার জহুর আলম, আবু তাহের, ফুলের ডেইলের আলী নেওয়াজ ও আবু তৈয়ব।
এদিকে আত্মসমর্পণের ব্যাপারে কক্সবাজার পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসাইন বলেন, সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। রাত পোহালেই কার্যক্রম শুরু হবে। আশা করছি ১৬ ফেব্রুয়ারি বিকালের আগেই সব আইনি প্রক্রিয়া শেষ হবে।