আজ ১৯ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার অমর একুশে গ্রন্থমেলার ১৯তম দিন। মেলা চলে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। মেলায় আজ নতুন বই এসেছে ১৪২টি।
বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশের ছড়াসাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান।
প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুজন বড়ুয়া। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন আলম তালুকদার, আসলাম সানী, লুৎফর রহমান রিটন, আমীরুল ইসলাম এবং আনজীর লিটন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ।
প্রাবন্ধিক বলেন, মুক্তিযুদ্ধ একটি বাতিঘর। সব জাতির জীবনে এমন আলোকবর্তিকা অর্জনের সৌভাগ্য হয় না। সে ক্ষেত্রে বাঙালি সৌভাগ্যবান জাতি। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছে বিশ্বে এমন দেশই-বা কয়টি আছে? সুতরাং মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অহংকার। মুক্তিযুদ্ধের সাহিত্য আমাদের গর্ব, আমাদের পরিচয়। মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতিসত্তাকে উজ্জীবিত করেছে নতুনভাবে। শিল্প-সংস্কৃতির অন্যান্য শাখার মতো ছড়াসাহিত্য ঘটেছে এর উজ্জ্বল প্রতিফলন। বিশেষত স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে স্বতন্ত্র সাহিত্য-মাধ্যম হিসেবে ছড়াসাহিত্য পেয়েছে পূর্ণ মর্যাদা। মুক্তিযুদ্ধই বাংলাদেশের ছড়াসাহিত্যকে দিয়েছে মৌলিক ভিত্তি।
আলোচকবৃন্দ বলেন, ছড়া কেবল শিশুতোষ বিষয় নয়। ছড়ার মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত হয় জাতির আত্মা। বাংলাদেশের ছড়াসাহিত্যে এদেশের মহান মুক্তিসংগ্রাম উদ্ভাসিত হয়েছে অনন্য ব্যঞ্জনায়, আবার ছড়াই আমাদের মুক্তিসংগ্রামকে দিয়েছে বিপুল বেগ; কারণ ছড়ার সহজাত আবেগ সাধারণ মানুষকে স্পর্শ করে বিপুলভাবে।
তারা বলেন, বাংলাদেশের ছড়াকাররা এ আবেগকে কোনো স্থূল অর্থে ব্যবহার না করে একে সংযুক্ত করেছেন গণমানুষের মুক্তির শাশ্বত সংগ্রামে।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ বলেন, বাংলাদেশের ছড়াসাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রূপায়িত হয়েছে নানা মাত্রায়। লোকায়ত ধারা থেকে সাম্প্রতিক সময় পর্যন্ত এদেশের ছড়াসাহিত্যের মৌল মর্মে রয়েছে জনমানুষের মুক্তির চেতনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং বাংলাদেশের ছড়াসাহিত্য তাই এক অভিন্ন অনুভবের নাম।
‘লেখক বলছি’ অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন প্রকাশিত গ্রন্থ বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেন মতীন্দ্র মানখিন, ফারুক মঈনউদ্দীন, ওবায়েদ আকাশ, রেজা ঘটক, আলতাফ শাহনেওয়াজ এবং বদরুল হয়দার।
কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ করেন কবি রবীন্দ্র গোপ, মতিন বৈরাগী। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী রেজিনা ওয়ালী, এনামুল হক বাবু। এগনেস র্যাচেল প্যারিসের পরিচালনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা বিভাগ ‘গীতিনাট্য’ পরিবেশন করেন এবং শাহাবুদ্দিন আহমেদ দোলনের পরিচালনায় ছিল সাংস্কৃতিক সংগঠন : ‘সুর ধারা সংগীতায়ন’-এর পরিবেশনা।
সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী শারমিন সুলতানা, সুমন চন্দ্র দাস এবং মো. জাকির হোসেন। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন অভিজিৎ রায় (তবলা), হোসেন আলী (বাঁশি), শ্যামা প্রসাদ মজুমদার (কী-বোর্ড) এবং এস এম তৌহিদ সরকার (দোতারা)।
আগামীকালের অনুষ্ঠানসূচি :
আগামীকাল ২০ ফেব্রুয়ারি বুধবার মেলা চলবে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে সওগাত পত্রিকার শতবর্ষ : ফিরে দেখা শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান।
প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন ড. ইসরাইল খান। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন হাবিব আর রহমান, সোনিয়া নিশাত আমিন, আমিনুর রহমান সুলতান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন ড. মুহাম্মদ সামাদ। সন্ধ্যায় রয়েছে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, কবিতা-আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।