আজ ২৩ ফেব্রুয়ারি শনিবার অমর একুশে গ্রন্থমেলার ২৩তম দিন। গ্রন্থমেলা চলে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।
গ্রন্থমেলায় আজ ছিল শিশুপ্রহর। সকাল ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত শিশুপ্রহর ঘোষণা করা হয়। মেলায় আজ নতুন বই এসেছে ১৮৬টি।
বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশের প্রকাশনা : অতীত ও বর্তমান শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান।
প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মাহ্রুখ মহিউদ্দীন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ফরিদ আহমেদ এবং এ এফ এম হায়াতুল্লাহ। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান।
প্রাবন্ধিক বলেন, বাংলাদেশের দীর্ঘ প্রকাশনা-ঐতিহ্যের অঙ্গীকারকে ধারণ করে এদেশের প্রকাশকরা উদ্যোগী হয়ে বিশিষ্ট নাগরিক, বিশেষজ্ঞ ও সত্যিকারের পড়–য়া ব্যক্তিদের নিয়ে একটি পরিষদ গঠন করুক, যারা বাংলাদেশের প্রকাশনা শিল্পের সমস্যার বিভিন্ন দিক নিয়ে ভাববেন, এর অর্থনীতি, রাজনীতির চুলচেরা বিশ্লেষণ করবেন এবং নেতিবাচক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথগুলো দেখিয়ে দেবেন। তাদের সুপারিশের ওপর ভিত্তি করে আমরা প্রকাশনা শিল্পকে একটা পেশাদার ভিত্তি দিতে পারবো। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে গবেষণা ও সৃজনশীলতার চর্চা বিকশিত হবে এবং সত্যিকারের একটা জ্ঞানভিত্তিক সমাজ আমরা গড়ে তুলতে পারবো।
আলোচকবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশের প্রকাশনা অতীতের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় বর্তমানে একটি দৃঢ় ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আছে। এদেশের ভাষা, শিক্ষা ও সাহিত্যের অগ্রযাত্রার সমান্তরালে প্রকাশনার ব্যাপ্তিও বেড়েছে বহুগুণ; যদিও পূর্ণাঙ্গ শিল্প হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি এখনও।
তারা বলেন, বিশ্বব্যাপী মুদ্রিত প্রকাশনার আকালের সময়ে বাংলাদেশে মুদ্রিত প্রকাশনা-কেন্দ্রিক বিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্রন্থমেলার আয়োজন প্রমাণ করে এদেশের প্রকাশনাশিল্পের ভবিষ্যৎ অত্যন্ত ইতিবাচক।
সভাপতির বক্তব্যে শামসুজ্জামান খান বলেন, বাংলাদেশের প্রকাশনা-জগৎ দিন দিন বৈচিত্র্যপূর্ণ এবং নব-আঙ্গিকে বিকশিত হচ্ছে। উন্নত প্রযুক্তির সংযোজন এদেশের প্রকাশনাকে দিয়েছে নবতর মাত্রা। তবে কেবল একুশের গ্রন্থমেলাকেন্দ্রিক না হয়ে প্রকাশনা যদি বছরব্যাপী চলমান এবং উদ্ভাবনশীল থাকে তবেই এদেশের প্রকাশনার গুণগত অগ্রযাত্রা নিশ্চিত হবে।
লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন প্রকাশিত গ্রন্থ বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেন ইমদাদুল হক মিলন, মঈনুল আহসান সাবের, হাসান আল আবদুল্লাহ, মেহেদী উল্লাহ এবং মিল্টন রহমান।
কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ করেন কবি মাহবুব সাদিক, জরিনা আখতার, মুনীর সিরাজ, ঝর্না রহমান, আলতাফ শাহনেওয়াজ, ¯িœগ্ধা বাউল। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী মাহমুদা সিদ্দিকা সুমি।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর’ এবং মো. আনোয়ার হোসেনের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘আরশিনগর বাউল সংঘ’র শিল্পীবৃন্দের পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন সাইদুর রহমান বয়াতি, আরজ আলী বয়াতি, আমজাদ দেওয়ান, বিমল বাউল, কাঙ্গালিনি সুফিয়া, মো. গঞ্জের আলী, রাতুল শাহ, মো. দেলোয়ার হোসেন বয়াতি এবং জামাল দেওয়ান। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন জয়প্রসাদ সিংহ রায় (তবলা), মো. মামুন (বাঁশি), আবদুস সোবহান (বাংলা ঢোল), নওফেল বাদশা (দোতারা) এবং মো. লিখন (মন্দিরা)।
আগামীকালের কর্মসূচি :
আগামীকাল ২৩ ফেব্রুয়ারি রোববার মেলা চলবে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।
আলোচনা অনুষ্ঠান : বলধা গার্ডেন : আমাদের উদ্যান-ঐতিহ্য
বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে বলধা গার্ডেন : আমাদের উদ্যান-ঐতিহ্য শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন মোকারম হোসেন।
আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন হাশেম সূফী, মোহাম্মদ আলী খান, নূরুন্নাহার মুক্তা। সভাপতিত্ব করবেন বিপ্রদাশ বড়–য়া। সন্ধ্যায় রয়েছে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, কবিতা-আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
গ্রন্থমেলা বিষয়ে সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলন
আগামীকাল ২৪ ফেব্রুয়ারি রবিবার বেলা ৩টায় বাংলা একাডেমির শহিদ মুনীর চৌধুরী সভাকক্ষে ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৯’ বিষয়ে সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী গ্রন্থমেলার বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।