সরকার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন সমস্যা সমাধানে ঢাকার ইস্কাটন অফিসার্স কোয়ার্টার এলাকায় নতুন বহুতল ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা করছে।
এতে ৯৬৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ব্যয় হতে পারে বলে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। চলতি বছরের জুলাইয়ে শুরু হয়ে ২০২২ সালের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।
সূত্র জানায়, সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য সুবীর কিশোর চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রকল্পটি নিয়ে একটি বৈঠক হয়। বৈঠকে প্রকল্পের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়। প্রকল্পটিকে ‘স্মার্ট ক্যাম্পাস’ হিসেবে গড়ে তোলার বিষয়টি প্রাধান্য দেওয়া হয়।
ঢাকা মহানগরীতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা বহু গুণ বাড়ার ফলে আবাসন সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করেছে। সরকারি আবাসন পরিদপ্তরের তথ্য থেকে দেখা যায়, ঢাকা মহানগরীতে পদায়িত ১ লাখ ৪৮ হাজার ৯১৫ জন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিপরীতে মাত্র ১৩ হাজার ৫২টি ফ্ল্যাট/ইউনিট রয়েছে। যা চাহিদার মাত্র ৮ শতাংশ।
এ আবাসিক সংকট দূর করার জন্য ২০১৫ সালে ৩ হাজার ২৬৮টি, ২০১৭ সালে ৬৮টি এবং ২০১৯ সালের মধ্যে ১ হাজার ৩০৮টি বৃদ্ধি করে ফ্ল্যাট/ইউনিট সংখ্যা মোট ১৮ হাজার ২৭৬টিতে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
সূত্র জানায়, আবাসন সংকট নিরসনে গণপূর্ত অধিদপ্তর কর্তৃক এর আওতাধীন বিভিন্ন খালি জমিতে এবং বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় জরাজীর্ণ ভবন ভেঙে বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণের প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকার ইস্কাটন অফিসার্স কোয়ার্টার এলাকার সাড়ে ১১ একর জমিতে ৩১টি ৪, ৫ ও ৬ তলা ভবন এবং অন্যান্য অর্ধস্থায়ী স্থাপনা ভেঙে ১০টি নতুন ১৩ তলা ভবনে ৪৮০টি ফ্ল্যাট নির্মাণের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে।
গণপূর্ত অধিদপ্তর বৈঠকে জানায়, প্রকল্পের আওতায় ৫টি ১৩ তলা ভবনে ১ হাজার ৮০০ বর্গফুট আয়তনের ২৪০টি ফ্ল্যাট, ৫টি ১৩ তলা ভবনে ১ হাজার ৫০০ বর্গফুট আয়তনের ২৪০ ফ্ল্যাট নির্মাণ, ২টি ৩ তলা বিশিষ্ট গণপূর্ত সার্ভিস মেইনটেনেন্স ভবন, ১টি ৬ তলা কমিউনিটি হল, ৫টি যানবাহন, ১০টি সাব-স্টেশন, ৩১টি লিফট, ১০ সেট জেনারেটর, ১০ সেট পাম্প মোটর, ৫ সেট কম্পিউটার, ৬৫৯৬ বর্গমিটার অভ্যন্তরীণ রাস্তা ও ওয়াকওয়ে, কম্পাউন্ড, স্যুয়ারেজ ও ময়লা পানির ড্রেনসহ অন্যান্য সুবিধা দেওয়ার কাজ অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।
বৈঠকে প্রকল্প এলাকার লে-আউট পর্যালোচনা করা হয়। এ সময় জানানো হয়, প্রস্তাবিত ডিপিপিতে ৪৮০টি ফ্ল্যাট এবং ৩৭০টি পার্কিং স্পেসের সংস্থান রাখা হয়েছে। বৈঠকে প্রতিটি ফ্ল্যাটের জন্য একটি করে পার্কিং রাখার প্রস্তাব করা হলে বিষয়টি খতিয়ে দেখার বিষয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তর আশ্বাস দেয়। ১৮০০ ও ১৫০০ বর্গফুটের ভবনগুলো মধ্যবর্তী জায়গায় একটি খেলার মাঠ নির্মাণেরও প্রস্তাব করা হয়। একই সঙ্গে ভবনগুলো থেকে মূল সড়কে যাতায়াত উপেযোগী একটি সার্ভিস রোড নির্মাণেরও প্রস্তাব করা হয়।