বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজ বিজি-১৪৭ ফ্লাইট ছিনতাইকারী মাহাদী (২৬) সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে নিহত হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মতিউর রহমান।
এদিকে, বিমান চলাচল শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।
রোববার রাত পৌনে ৯টার দিকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে আইএসপিআর জানায়, অভিযানের পর ছিনতাইকারীকে আহত অবস্থায় আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, বিমানের ভেতরে অভিযান চালানোর সময় ওই ব্যক্তিকে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয় কিন্তু সে অস্বীকৃতি জানালে গুলি চালানো হয়। পরে তার মৃত্যু হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, বিমানে ক্রুসহ ১৪৮ জন যাত্রী ছিলেন। তারা সবাই নিরাপদে বের হয়ে এসেছেন।
রাত ৮টার দিকে সিভিল অ্যাভিয়েশনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ৭টা ১৭ মিনিটে অভিযান পরিচালনা করে। এটি শেষ হয় ৭টা ২৫ মিনিটে। এ সময় ছিনতাইকারীকে আহত অবস্থায় আটক করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, আটক আহত ছিনতাইকারী সুস্থ হলে তদন্ত করে বিস্তারিত জানানো হবে।
তবে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিমানটির সব যাত্রী ও ক্রু সুস্থ রয়েছেন।
অভিযান সমাপ্ত হওয়ার পর সিভিল অ্যাভিয়েশন কার্যালয়ে এ বিষয়ে ব্রিফিং করে ঘটনার বিস্তারিত তথ্য গণমাধ্যমকে জানান সিভিল অ্যাভিয়েশনের নতুন চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. নাইম হাসান।
এর আাগে রোববার বিকালে দুবাইয়ের উদ্দেশে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজ উড্ডয়ন করে। উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই ছিনতাইয়ের কবলে পড়ে বিমানটি।
বিমানের চট্টগ্রামগামী ফ্লাইটটি যখন মাঝ আকাশে, তখন এক ব্যক্তি পাইলটকে অস্ত্র ঠেকিয়ে উড়োজাহাজটি জিম্মি করেন। অবস্থা বেগতিক দেখে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানের জরুরি অবতরণ করা হয়। জরুরি অবতরণের পরপরই রানওয়েতে বিমানটি ঘিরে ফেলে সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ।
এক পর্যায়ে সব যাত্রীকে নিরাপদে নামিয়ে আনা হলেও একজন ক্রুকে ওই ছিনতাইকারী জিম্মি করে রাখে বলে সূত্রের খবর।
পরে বিমানবন্দরে যায় সোয়াত টিম ও বোম ডিসপোজাল ইউনিট। ঘটনাস্থলে ছুটে যায় ফায়ার সার্ভিসও।
ঘটনাস্থল থেকে একাধিক সূত্র জানায়, বিমানের বিজি-১৪৭ নম্বর ফ্লাইটটি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা হয়ে দুবাই যাওয়ার কথা। কিন্তু উড্ডয়নের পরপরই এ ঘটনা ঘটে।
এরপরই দ্রুত ফ্লাইটের সব যাত্রীকে নামিয়ে দেয়া হয়। বিমানটি রানওয়েতে অবস্থান করে এবং সেটি ঘিরে ফেলেন সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
বিমানবন্দরের একাধিক সূত্র জানায়, যাত্রীদের নামিয়ে আনলেও সাগর নামে একজন ক্রু ও ছিনতাইকারী প্লেনের ভেতরে অবস্থান নেন।
বিমানটি রোববার বিকাল ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে জরুরি অবতরণ করা হয়। তাৎক্ষণিক সেখানে বিমান ওঠানামা বন্ধ করা হয় বলে জানান বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা মোহাম্মদ উল্লাহ।