আজ ২৬ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার অমর একুশে গ্রন্থমেলার ২৬তম দিন। গ্রন্থমেলা চলে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।
মেলায় আজ নতুন বই এসেছে ১৮৫টি।
বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় চলচ্চিত্রজন মৃণাল সেন, আমজাদ হোসেন ও আনোয়ার হোসেন : শ্রদ্ধাঞ্জলি শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাজেদুল আউয়াল। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ম. হামিদ, তপন বাগচী এবং বিধান রিবেরু। সভাপতিত্ব করেন সৈয়দ হাসান ইমাম।
প্রাবন্ধিক বলেন, মৃণাল সেন, আমজাদ হোসেন ও আনোয়ার হোসেন- এই তিন চলচ্চিত্রজন পশ্চিম ও পুবের চলিচ্চিত্রশিল্পকে দেশীয় প্রেক্ষিতে যেমন ঋদ্ধ করেছেন, তেমনি বৈশ্বিক পরিম-লেও পরিচিতি দিয়ে গেছেন। তিনজনই তাঁদের সময়ে ঘটতে থাকা সমাজ-ইতিহাসকে তাঁদের স্ব স্ব ক্ষেত্রের কাজের মাধ্যমে শাসন করেছেন এবং নিজেদের সক্ষমতার সাক্ষার গেছেন। তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন মানে নিজেদের গর্বিত ইতিহাসকে সামনে আনা। একইসাথে সামনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি ও সাহস সঞ্চয় করা।
আলোচকবৃন্দ বলেন, মৃণাল সেন, আমজাদ হোসেন ও আনোয়ার হোসেনÑ বৃহৎ বাংলা চলচ্চিত্র-বিশ্বের তিন স্মরণীয় নাম। ভিন্ন প্রেক্ষিতে কাজ করলেও তাঁদের চলচ্চিত্রকর্মের মধ্যে অভিন্ন ঐক্যও পরিলক্ষিত হয়।
এই ঐক্য মানবিক বোধ এবং সাধনার। মৃণাল সেনের চলচ্চিত্রে যেমন ফুটে উঠেছে মধ্যবিত্তের পলায়ন এবং সংগ্রামের আখ্যান তেমনি আমজাদ হোসেনের চলচ্চিত্রে অমর একুশে থেকে বাংলাদেশের নিত্যকার বাস্তব উদ্ভাসিত হয়েছে অনন্য ব্যঞ্জনায়। অন্যদিকে চলচ্চিত্রের চিত্রগ্রহণে আনোয়ার হোসেন যে বিশিষ্টতার পরিচয় দিয়েছেন তা তুলনারহিত।
সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ হাসান ইমাম বলেন, মৃণাল সেন, আমজাদ হোসেন ও আনোয়ার হোসেন- এই তিন গুণী চলচ্চিত্রজনকে অতি অল্প সময়ের ব্যবধানে হারিয়েছি আমরা। বাংলা চলচ্চিত্রজগৎ ঋদ্ধ হয়েছে তাঁদের নানামাত্রিক ও বহুবর্ণিল অবদানে। বাংলা একাডেমি একুশের আয়োজনে তাঁদের স্মরণ করে আমার সবার শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের সুযোগ করে দিয়েছেন।
‘লেখক বলছি’ অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন প্রকাশিত গ্রন্থ বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেন ফারুক মাহমুদ, সাদ কামালী, কামরুল হাসান, মাহমুদ শামসুল হক এবং জফির সেতু।
কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ করেন কবি সাজ্জাদ শরিফ, বায়তুল্লাহ কাদেরী, শামীম রেজা, জাহিদ মুস্তফা, হাসান মাহমুদ, রাসেল আশেকী, মাসুদ হাসান, মাশুক চৌধুরী, সুহিতা সুলতানা। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী সুপ্রভা সেবতী, মনিরুল ইসলাম। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল মো. সাইফুল ইসলামের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘উজান’-এর পরিবেশনা।
সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী সালাউদ্দিন আহমেদ, প্রিয়াংকা গোপ, সুমন মজুমদার, এ.কে.এম শহীদ কবীর পলাশ, মাহবুবা রহমান। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন- কাজী মো. ইমতিয়াজ সুলতান (তবলা), গাজী আবদুল হাকিম (বাঁশি), ডালিম কুমার বড়–য়া (কী-বোর্ড) এবং ফিরোজ খান (সেতার)।
আগামীকালের কর্মসূচি :
আগামীকাল ২৭ ফেব্রুয়ারি বুধবার গ্রন্থমেলা চলবে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।
আলোচনা অনুষ্ঠান :
বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে বইমেলা : উদ্যোগ ও অর্জন শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন শাহিদা খাতুন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন ওসমান গণি, রেজানুর রহমান, ফরিদ আহমদ দুলাল এবং জালাল আহমেদ। সভাপতিত্ব করবেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।
সন্ধ্যায় রয়েছে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, কবিতা-আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।