পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনা শুরু হয়েছে। দুটি দেশই একে অপরের সীমানায় গিয়ে বিমান হামলার দাবি করেছে।
এ নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
তার স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
‘আমি বরাবরই রাজনীতি কম বুঝি। ঠিক বুঝতে পারছি না কী ঘটেছে পাকিস্তানে। ভারত দাবি করছে পাকিস্তানের বালাকোটে ১০০০ কিলো বোমা ফেলে সন্ত্রাসী জইসে মোহাম্মদের ক্যাম্প ট্যাম্প ধ্বংস করে দিয়েছে, তিনশ সাড়ে তিনশ সন্ত্রাসী বোমায় মারা পড়েছে। বোমা ফেলার ভিডিও তো একখানা দেখানো হয়েছে। কিন্তু ওদিকে পাকিস্তান বলছে জঙ্গলে গিয়ে বোমা ফেলেছে ভারত কিন্তু কেউ মরেনি, এক লোক খানিকটা শুধু জখম হয়েছে। পাকিস্তানের টিভিতে একটি কপালে ব্যান্ডেজ বাঁধা লোককে দেখানো হলো।’
‘আমার প্রশ্ন, এতগুলো লোক মরলো, হৈ চৈ কোথায়? আহতদের নিয়ে তো হাসপাতালে ছুটোছুটি হওয়ার কথা। কেউ না কেউ তো নিহতদের ছবি আর কোথাও না হোক, অন্তত সোশ্যাল মিডিয়ায় দেবে। নাকি পাকিস্তানের সরকার আর মিডিয়া খবর লুকোতে চায়? সন্ত্রাসী ক্যাম্পের কথা প্রকাশ হয়ে যাবে,তাই? বালাকোটের সাধারণ মানুষও কি চুপ করে থাকবে! হয়তো কাউকেই ধারে কাছেই যেতে দিচ্ছে না এখন! একটা গণকবর খোঁড়া হচ্ছে! নেটে কোনও খবর বা ছবি কিছুই খুঁজে পেলাম না।’
‘ভারতের মানুষ খুশি, বদলা নেওয়া গেছে। পাকিস্তানের মানুষ খুশি, ভারত কাউকে মারতে পারেনি। মানুষ খুশি থাকলেই ভালো। খুশি থাকো, মিলে মিশে থাকো। সন্ত্রাস কোরো না, মানুষ মেরো না। ভারত পাকিস্তানের মধ্যে লড়াই হলে আমার শুধু মনে হয়, ভাইয়ে ভাইয়ে লড়াই হচ্ছে। একসময় তো একই দেশের মানুষ ছিল। পার্টিশানটা করেই শত্রুতা বাড়ালো। ভারতকে এখন সন্ত্রাসী প্রতিবেশীদের নিয়ে বাস করতে হয়। পার্টিশান না করলে এত মুসলমান কি সন্ত্রাসী হত? একটা গণতন্ত্রের মধ্যে থাকা আর একটা ধর্মীয় দেশে থাকার মধ্যে পার্থক্য আছে না?’