আত্মসমর্পণকারী মাদক ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন করা হচ্ছে

বিশেষ প্রতিনিধি

সংসদে প্রধানমন্ত্রী
সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

সরকারের মাদকবিরোধী অভিযানের কথা তুলে ধরে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকারের আহ্বানে যারা আত্মসমর্পণ করছে তাদের চিকিৎসা ও কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে মাদক থেকে দূরে রাখার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। মাদক ব্যবসায়ীদের আর্থিক সহায়তা দিয়ে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে বুধবার প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজনীতিবিদ হিসেবে আর ক্ষমতা ভোগ করার বিষয় নয়, জনসেবার বিষয়। সেজন্যই বাংলাদেশের মানুষের কীভাবে কল্যাণ করতে পারি, সে লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে  শেখ হাসিনা বলেন, অপরাধবোধের উপলব্ধি থেকেই আত্মসচেতন হয়ে মাদকাসক্ত ও মাদক ব্যবসায়ীরা আত্মসমর্পণ করছে। তারা যাতে নতুন কিছু করতে পারে, সে জন্য আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

সরকারের মাদক বিরোধী অভিযানের কথা তুলে ধরে সংসদ নেতা বলেন, সরকার যাদেরকে আত্মসমর্পন করাচ্ছে (মাদক ব্যবসায়ী), তাদের চিকিৎসা ও কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে মাদক থেকে দূরে রাখার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে যারা আত্মসমর্পণ করছে তাদের সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হচ্ছে, যাতে তারা অন্য কোন ব্যবসায় নিয়োজিত হয়ে ভালভাবে চলতে পারে। এভাবে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কারণ বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার দেশে আইনের শাসন সমুন্নত রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদের করা সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান বলেন, যেখানে মাদক চোলাচালান হয়, বিশেষ করে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে মাদক নিয়ন্ত্রণ ও চোরাচালান বন্ধে সরকার পর্যাপ্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ অনুযায়ী মাদক পরিবহণ ও চোরাচালানের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তির (মৃত্যুদণ্ড) বিধান রাখা হয়েছে। প্রতিটি জেলায় মাদক নিরাময় কেন্দ্র স্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

সরকারি দলের সাংসদ মাহফুজুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, সমাজকে মাদকমুক্ত করার জন্য একটি বাস্তবমুখী পরিকল্পনার আওতায় নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ প্রণয়ন করা হয়েছে। যেখানে মাদকের পরিমাণ ভেদে সাজার মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। মাদক সংশ্লিষ্ট মামলাসমূহ দ্রুত ও যথাযথভাবে নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি ও পুলিশের চলমান অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

সামাজিক সচেতনতার সৃষ্টির মাধ্যমে মাদকমুক্ত দেশ ও সমাজ গড়ে তোলার ওপর সবাইকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সংসদ সদস্যদের নিজ নিজ এলাকায় কেউ যাতে মাদকাসক্ত না হয়, সে ব্যাপারে সচেষ্ট থাকতে হবে। অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদের সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে সচেষ্ট থাকতে হবে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে