কেমিক্যাল গোডাউন অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য শ্যামপুর ও টঙ্গিতে সরানোর সিদ্ধান্ত

বিশেষ প্রতিনিধি

ফাইল ছবি

শিল্প মন্ত্রণালয় পুরান ঢাকার বিভিন্ন ভবনে রক্ষিত কেমিক্যাল গোডাউন অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য রাজধানীর শ্যামপুর ও টঙ্গিতে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

কদমতলী থানার শ্যামপুর মৌজায় অবস্থিত বিসিআইসির উজালা ম্যাচ ফ্যাক্টরি এবং ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে টঙ্গির কাঠালদিয়া মৌজায় বিএসইসির খালি জায়গায় এগুলো সরিয়ে নেওয়া হবে।

প্রাথমিকভাবে দুটি স্থান মিলিয়ে ১২ দশমিক ১৭ একর জমির ওপর ৪ লাখ বর্গফুট আয়তনের স্টিল সেড নির্মাণ করে এগুলো সংরক্ষণ করা হবে।

শিল্প মন্ত্রণালয়ে চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন ভবনে রক্ষিত দাহ্য কেমিক্যাল নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর/সংরক্ষণের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য জায়গা নির্ধারণের বিষয়ে বুধবার অনুষ্ঠিত এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

এ সময় ব্যবসায়ী নেতাদের আজ বৃহস্পতিবারের মধ্যে তাদের কেমিক্যাল সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় জায়গার পরিমাণ নির্ধারণ করে লিখিতভাবে শিল্প মন্ত্রণালয়কে জানানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।

সভায় কেমিক্যাল ও এসিড ব্যবসায়ীরা বলেন, চকবাজারে অগ্নি দুর্ঘটনার পর কেমিক্যাল ইস্যুতে স্থানীয়ভাবে এক ধরনের ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এর ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে পুরাতন ঢাকার প্রায় ২৫ লাখ ব্যবসায়ী বেকার হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিদ্যমান ভীতি দূর করতে সরকারের সহায়তা প্রদানের অনুরোধসহ সাময়িকভাবে টঙ্গিতে নির্ধারিত জায়গায় এসিড ও শ্যামপুরের জায়গায় কেমিক্যাল গোডাউন সরানোর বিষয়ে তারা একমত পোষণ করেন।

শিল্প সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ঢাকা থেকে নিরাপদ স্থানে গোডাউন স্থানান্তরের বিষয়ে শিল্প মন্ত্রণালয় সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এগুলো স্থানান্তরের জন্য ব্যবসায়ীদের জায়গা করে দেওয়া হবে। জননিরাপত্তার স্বার্থে অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য এসিড ও কেমিক্যাল গোডাউন  স্থানান্তর/সংরক্ষণের জন্য দুটি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। আরো জায়গা প্রয়োজন হলে শিল্প মন্ত্রণালয় তারও ব্যবস্থা করবে।

শিল্প সচিব বলেন, টঙ্গি ও কদমতলীতে সরকারের খরচেই স্টিল স্ট্রাকচার নির্মাণ করে দেওয়া হবে। তবে ব্যবসায়ীরা সেখানে যৌক্তিক ভাড়ায় কেমিক্যাল সংরক্ষণ করবেন। আগামী তিন দিনের মধ্যে কমপ্লায়েন্ট মেনে এ বিষয়ে কারিগরি প্রস্তাব প্রণয়নের জন্য বিএসইসি এবং বিসিআইসিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, জাতীয় জরুরি প্রয়োজনে এরপরই দ্রুত সরকারি অর্থায়নে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। একই সাথে এ লক্ষ্যে সরকারের সাথে একটি চুক্তিতে আবদ্ধ হতে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের প্রতি আহবান জানান তিনি।

সভায় সভাপতিত্ব করেন শিল্পসচিব মো. আবদুল হালিম। এছাড়া সভায় শিল্প, ভূমি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ, কৃষি, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, রাজউক, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, বিসিআইসি, বিএসইসি, বিএডিসি, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি এবং কেমিক্যাল ও প্লাস্টিক সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে