চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট ‘ময়ূরপঙ্খী’ ছিনতাই চেষ্টার ঘটনায় জড়িত পলাশ আহমেদ ওরফে মাহাদী ওরফে মাহিবি জাহানের ‘দ্বিতীয় স্ত্রী’ শামসুন নাহার সিমলাকে জিজ্ঞাসাবাদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
একই সঙ্গে পলাশের পরিবারের সদস্য ও নিকটজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে। এরই মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েকজনের প্রাথমিক তালিকা তৈরি করা হয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করবে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক রাজেশ বড়ুয়া বলেন, পলাশের বিষয়ে জানতে চিত্রনায়িকা সিমলাকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করব। এরপর প্রয়োজন মতো অন্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টায় জড়িত পলাশের সাম্প্রতিক সময়ের কর্মকা জানতে তার নিকটজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তাই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে।
এ তালিকায় রয়েছেন পলাশের নিকটাত্মীয়, প্রথম স্ত্রী মেঘলা, দ্বিতীয় স্ত্রী চিত্র নায়িকা সিমলা, প্রতিবেশী, শোবিজ জগতের লোকজন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আগামী কয়েকদিনের মধ্যে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের কার্যালয়ে ডাকা হবে।
কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে পলাশের আচরণে বেশ পরিবর্তন হয়েছে বলে জানতে পেয়েছি। তাই পলাশ কোনো জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারে বলে ধারণা করছি।
পলাশকে জিজ্ঞাসাবাদের আগেই এ মামলার সব আলামত নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে চায় মামলার তদন্তে থাকা কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। মামলার সব আলামত সংগ্রহ শুরু করেছে।
মঙ্গলবার রাতে ছিনতাই চেষ্টার সময় ব্যবহার করা ‘খেলনা পিস্তল ও বোমাসদৃশ বস্তু’ সংগ্রহ করেছে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। বাকি আলামতগুলো আগামী দুই একদিনের মধ্যে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসবে।
কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক রাজেশ বড়ুয়া বলেন, এ মামলার জন্য আলামতগুলো খুবই প্রয়োজন। তাই মামলার প্রত্যেকটা আলামত নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হচ্ছে। এরই মধ্যে খেলনা পিস্তল ও বোমাসদৃশ বস্তু নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়েছে। বাকি আলামতগুলো দ্রুততার সঙ্গে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হবে।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার বিকালে ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পর বিমানের ফ্লাইট ‘ময়ূরপঙ্খী’ ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে পলাশ আহমেদ ওরফে মাহাদী ওরফে মাহিবি জাহান। পরে প্যারা কমান্ডো অভিযান চালিয়ে জিম্মিদশা থেকে বিমানটি মুক্ত করে। অভিযানেই নিহত হন ‘ময়ুরপঙ্খী’ ছিনতাই চেষ্টাকারী পলাশ আহমেদ। এ ঘটনায় শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সিভিল এ্যাভিয়েশন বিভাগের প্রযুক্তি সহকারী দেবব্রত সরকার বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। যাতে পলাশ আহমেদসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়। পরবর্তী সময়ে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় কাউন্টার টেররিজম ইউনিটকে।