মুজিবনগরকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসভিত্তিক পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে

বিশেষ প্রতিনিধি

ফাইল ছবি

সরকার বাংলাদেশের প্রথম রাজধানী ঐতিহাসিক মুজিবনগরকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে।

এ লক্ষ্যে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে মেহেরপুর জেলার এ মুজিবনগরে একটি অত্যাধুনিক কমপ্লেক্স গড়ে তোলা হচ্ছে। ইতোমধ্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এর সম্ভাব্যতা যাচাই করতে গত মাসে মুজিবনগর সফর করেন।

রাজধানীর একটি হোটেলে শুক্রবার মেহেরপুর জেলা সমিতি আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব কথা জানান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন দোদুল।

তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক এবং বিস্তারিত ইতিহাস জানানোর সব ব্যবস্থা মুজিবনগর কমপ্লেক্সে থাকবে। সেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি দুর্লভ প্রতিকৃতি থাকবে। মুজিবনগর কমপ্লেক্সে থাকবে একটি দৃষ্টিনন্দন লেক। লেকের চারপাশে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও মুজিবনগরের ইতিহাস লিপিবদ্ধ থাকবে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত দর্শনার্থীরা লেকের চারপাশে হাঁটার সময় এর ইতিহাসগুলো জানতে পারবেন।

ফরহাদ হোসেন বলেন, এখানে একটি সিনেপ্লেক্সও নির্মাণ করা হবে, যেখানে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক চলচ্চিত্রগুলো প্রদর্শন করা হবে। লেকে দর্শনার্থীদের জন্য বোটিংয়ের ব্যবস্থাও থাকবে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরা যাতে কয়েকদিনের জন্য এ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসভিত্তিক পর্যটন নগরীতে সময় কাঁটাতে পারেন। অবকাশ যাপনের জন্য আবাসিক হোটেলও থাকবে।

এ ছাড়া মুজিবনগরে একটি শিশুপার্কও নির্মিত হবে। রেস্টুরুম থাকবে। এখানে আরও প্রায় ৩৭ একর জায়গা অধিগ্রহণ করবে সরকার। সবশেষে দর্শনার্থীদের জন্য একটি ‘ওথ স্পেস’থাকবে। মুজিবনগর পরিদর্শন শেষে সবাই ‘ওথ স্পেস’এ দেশের স্বাধীনতা রক্ষা এবং দেশ ও জাতীর উন্নয়নে শপথ গ্রহণ করবেন।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, জাতির জনক এবং বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুর নামে এই একটি জায়গা রয়েছে, যা তার আদর্শ ধারণ করে আজও দাঁড়িয়ে আছে স্বগর্ভে। এখন ঐতিহাসিক মুজিবনগরে প্রতিদিন প্রায় এক হাজার দর্শনার্থী আসেন। নতুন প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হলে প্রতিদিন ৫ থেকে ৭ হাজার দর্শনার্থী দেশ-বিদেশ থেকে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এ ছাড়া মেহেরপুরের আরেকটি ঐতিহাসিক স্থান হলো-আমঝুঁপির নীলকুঠি। ব্রিটিশদের এ নীলকুঠিতে বহু পর্যটক প্রতিদিন আসেন। এটিরও প্রবেশপথে বঙ্গবন্ধুর একটি প্রতিকৃতি নির্মাণ করা হবে এবং নীলকুঠিকেও পর্যটকদের জন্য আরও আকর্ষণীয় করে গড়ে তোলা হবে।

তিনি বলেন, ঐতিহাসিক মুজিবনগরসহ অবহেলিত মেহেরপুরের উন্নয়নে বর্তমান সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। মেহেরপুরের সরকারি হাসপাতালকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গড়ে তোলারও চিন্তা করছে সরকার। এ ছাড়া মুজিবনগরের সঙ্গে ঢাকার সরাসরি রেল যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। এ প্রকল্পে প্রায় এক হাজার ৫০ কোটি টাকা ব্যয় হবে।

অনুষ্ঠানে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন দোদুলসহ মেহেরপুর-২ আসন গাংনী থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাইদুজ্জামান খোকনকেও সংবর্ধনা জানায় ঢাকাস্থ মেহেরপুর সমিতি।

অ্যাডভোকেট শাহাবুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- সংবর্ধনা কমিটির আহ্বায়ক তৌফিকা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক একরামুল হক, সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. এসএম এ খালেক প্রমুখ।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে