পেটের মেদ কমছে না?

জীবন যাপন ডেস্ক

ফাইল ছবি

রোগা হওয়ার চেয়েও নিজেকে ফিট রাখা ও স্বাস্থ্যকর উপায়ে বাঁচা অনেক বেশি জরুরি। শরীরে নানা রকম অসুখের যে প্রাদুর্ভাব দেখা যায়, তার অনেকগুলিই ওবেসিটির হাত ধরে আসে। তাই মেদবৃদ্ধিকে রুখে দিতে পারলেই অনেক অসুখের সঙ্গে লড়াই করা সহজ হয়ে যায়। তবে শরীরের অন্য অংশের মেদ তাড়াতাড়ি ঝরলেও পেটের মেদ ধরতেই সবচেয়ে বেশি সময় লাগে।

এ দিকে পেটের অতিরিক্ত মেদ ঝরিয়ে ফেলতে পারলে চেহারায় যেমন সৌন্দর্য আসে, তেমনই হৃদরোগ ও টাইপ টু ডায়াবিটিসের ভয় অনেকটা কমে। পেটের মেদ কমলে হাঁটুর উপর চাপও কম পড়ে। তাই পেটের চর্বি ঝরাতে পারলে ওবেসিটির সমস্যাও অনেকটা এড়ানো যায়।

universel cardiac hospital

জিম, ডায়েট বা ব্যায়ামের নানা কসরতে তো পেটের চর্বি কমেই, কিন্তু যদি এত কিছু নিয়ম মেনে করার সময় না পান বা তেমন সুযোগ না জোটে, তা হলে? ডায়াটেশিয়ানদের মতে, ঘরোয়া কিছু উপায়েও এই মেদ ঝরিয়ে ফেলা সহজ। তবে তার জন্য মাথায় রাখতে হবে বিশেষ কিছু নিয়ম। জানেন সে সব?

মাছ-মাংস-ডিম ও শাক-সব্জি দিয়ে পেট ভরান।

মিষ্টি ও নরম পানীয়তে না: মেদের মেদ কমাতে গেলে প্রথমেই এই দু’টি বিষয়ে সতর্ক হোন। বাইরের নরম পানীয় তো বটেই, এমনকি, বাড়িতে বানানো স্কোয়াশ, চিনি দেওয়া শরবত, চিনি যোগ করা ফলের রস এ সব এড়িয়ে চলুন। চিনি মূলত অর্ধেক গ্লুকোজ, অর্ধেক ফ্রুকটোজ। যত বেশি চিনি শরীরে যাবে ততই তা লিভারে জমা হবে ও ফ্যাটে পরিবর্তিত হবে। আর এই ধরনের নরম পানীয়তে প্রচুর পরিমাণে অতিরিক্ত চিনি যোগ করা থাকে। যার ফ্যাটের বেশির ভাগটাই গিয়ে জমা হয় লিভার ও পেটে। তাই পেটের মেদ বাড়াতে এরাই প্রধান। প্যাকেটজাত পানীয় এমনকি হেলথ ড্রিঙ্কেও লুকানো চিনি থাকে।

তবে ফলের রস চিনি যোগ করে খাওয়া বারণ মানে ফল খাওয়া বারণ নয়। ফল চিবিয়ে খেলে শরীরের জন্য তা বেশি উপকারী কারণ তাতে ফ্রুকটোজের খারাপ প্রভাবগুলি থেকে মুক্ত হওয়া যায়।

ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার: যে সব ফাইবার সহজে দ্রবীভূত হতে পারে এমন কিছু পাতে রাখুন। ঘন ঘন খিদে পাওয়াকে কমিয়ে দিতে পারলেই পেটের মেদ কমিয়ে ফেলা যায় অনেকটা। উদ্ভিজ্জ ফাইবার, ফল, সব্জি এ সব বেশি করে খেলে পেট অনেকটা ভরা থাকে ও খিদে কমে। এতে শরীর প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণও পায় ও মেদ কমে।

সাঁতার কাটলে সহজেই কমে পেটের মেদ।

নো কার্বস মোর প্রোটিন: পেটের মেদ ঝরাতে পাত থেকে বাদ দিন কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ। সারা দিনে যে পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট খান, তা বাদ দিতে পারলেই ভাল। একান্ত না পারলে তা অনেকটা কমিয়ে সে জায়গায় রাখুন পর্যাপ্ত প্রোটিন। অ্যাটকিন্স ডায়েটের এই পদ্ধতি মানলে সহজেই ভুঁড়ি কমবে। মাছ-মাংস-ডিম ও শাক-সব্জি দিয়ে পেট ভরান। তা বলে রেড মিট খাবেন না। ভাত তো একেবারেই নয়, রুটি খেলে সারা দিনে একটার বেশি নয়। ভাত ও রুটি থেকে একই পরিমাণ গ্লাইকোজেন জমা হলেও রুটির গ্লাইকোজেন তাড়াতাড়ি গলে। ভাতের গ্লাইকোজেন গলতে অনেক দেরি হয়। তাই ভাতের বদলে রুটি খান। মুখ বদলাতে মাঝে মাঝে ব্রাউন ব্রেডও খেতে পারেন, এতে ফাইবারের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে।

ব্যায়াম: পেটের নানা রকম ক্রাঞ্চ যা কি না আলাদা করে সময় না দিয়ে ঘরের কাজ সারতে সারতে বা শুয়ে-বসেও অন্য কাজ করতে করতে করা যায় এমন কিছু অভ্যাস করুন। কোনও ফিটনেস এক্সপার্ট বা ডায়াটেশিয়ানদের পরামর্শ নিয়ে এমন কিছু ব্যায়াম করতে পারেন। এত কিছু করতে না পারলে দিনের একটা সময় চল্লিশ মিনিট ধরে একটানা জোরে হাঁটুন বা সাইক্লিং করুন। কিংবা সাঁতার, নাচ ইত্যাদির সঙ্গে যুক্ত থাকুন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে