প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টিতে সেরা যারা

ক্রীড়া ডেস্ক

ছবি : সংগৃহিত

প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টি দেশে সাড়া জাগিয়েছে বেশ। শুধু দেশি ক্রিকেটারদের নিয়ে টুর্নামেন্টে দেখা গেছে দারুণ কিছু পারফরম্যান্স। গত রোববার ফাইনালে প্রাইম দোলেশ্বর ক্রিকেট ক্লাবকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব।

এবারের আসরে ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে নজর কেড়েছেন অনেকে।

universel cardiac hospital

আলো ছড়ানো ক্রিকেটারদের মধ্যে ঘরোয়া ক্রিকেটে অভিজ্ঞ ও দীর্ঘদিনের পোড় খাওয়া ক্রিকেটার যেমন আছেন, তেমনি আছেন কিছু নতুন মুখ ও প্রায় অপরিচিত নামও। এখানে সেরা কয়েকজনের পারফরম্যান্স তুলে ধরা হলো-

ফরহাদ রেজা

৪ ম্যাচে ১১ উইকেট, ৪ ইনিংসে ৩৫.৬৬ গড় ও ২২৭.৬৫ স্ট্রাইক রেটে ১০৭ রান করে ম্যান অব দা টুর্নামেন্ট প্রাইম দোলেশ্বরের ফরহাদ রেজা। এর আগে রংপুর রাইডার্সের হয়ে বিপিএলেও বেশ ভালো পারফর্ম করেছেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার। টুর্নামেন্টের সেরা বোলারের পুরস্কারও জিতেছেন ফরহাদ। সমান ১১ উইকেট নিয়েছেন শেখ জামালের পেসার শহিদুল ইসলামও। তবে ফরহাদের গড় (৮.৯০) ও ওভারপ্রতি রান (৬.১২) ভালো শহিদুলের চেয়ে।

ম্যাচে ৫ উইকেট শিকারি একমাত্র বোলার ফরহাদ। সেমি-ফাইনালে ৩২ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে।

ইমতিয়াজ হোসেন

৪৪ বলে ৫৬ রানের ইনিংসে ফাইনালের ম্যাচ সেরা ইমতিয়াজ। অভিজ্ঞ এই ওপেনার ঘরোয়া ক্রিকেট খেলছেন ১৮ বছর ধরে। তবে এই টুর্নামেন্টের আগে অফিসিয়াল টি-টোয়েন্টি খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন কেবল ৩টি! বড় দৈর্ঘ্যের ক্রিকেটের জন্য ব্যাটিং বেশি উপযোগী বলে বিপিএলেও দল পান না বেশিরভাগ সময়। এবার এই টুর্নামেন্টে শেখ জামালের হয়ে ৪ ইনিংসে ১১০ রান করেছেন ১২৬.৪৩ স্ট্রাইক রেটে।

রুবেল মিয়া

৩ ম্যাচে ১২৯ রান করে টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বেশি রান সংগ্রহকারীর পুরস্কার পেয়েছেন প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের ওপেনার রুবেল। গড় ৪৩, স্ট্রাইক রেট ১২০.৫৬। ২৬ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান ঘরোয়া ক্রিকেটের শীর্ষ পর্যায়ে খেলছেন প্রায় দুই বছর পর। সবশেষ ২০১৭ সালে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে খেলেছিলেন ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে।

আরিফুল হক

টুর্নামেন্টের সেরা ফিল্ডার মনোনীত হয়েছেন আরিফুল হক। প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে ৩ ম্যাচে নিয়েছেন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ ৫ ক্যাচ।

তৌহিদ হৃদয়

টুর্নামেন্টের সেরা উদীয়মান ব্যাটসম্যানের স্বীকৃতি পেয়েছেন তৌহিদ হৃদয়। এবার বিপিএলের প্রথম ম্যাচে সিলেট সিক্সার্সের হয়ে মন্থর ব্যাটিং ও ডেভিড ওয়ার্নারের রান আউটে ভূমিকা রাখায় পরে আর সুযোগ পাননি এক ম্যাচও। তবে প্রিমিয়ার টি-টোয়েন্টিতে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে ৩ ইনিংসে করেছেন ৯৯ রান। দুই ম্যাচে অপরাজিত থাকায় গড়ও ৯৯। স্ট্রাইক রেট ১৫০।

সুমন খান

টুর্নামেন্টের সেরা উদীয়মান বোলার মনোনীত হয়েছেন বিকেএসপির সুমন খান। এবারই প্রথম টি-টোয়েন্টি খেলে ২ ম্যাচে ৩ উইকেট নিয়েছেন ১৯ বছর বয়সী এই পেসার।

নুরুল হাসান সোহান

একক নেতৃত্বে ঘরোয়া ক্রিকেটে দ্বিতীয় শিরোপার স্বাদ পেলেন নুরুল হাসান সোহান। ২০১৭-১৮ মৌসুমে বিসিএলে চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণাঞ্চলের অধিনায়ক ছিলেন তিনি। এবার প্রিমিয়ার টি-টোয়েন্টি লিগে তার নেতৃত্বই সফল শেখ জামাল। এই টুর্নামেন্টে নিজের পারফরম্যান্সেও সোহান ছিলেন উইকেটের সামনে ও পেছনে উজ্জ্বল। ব্যাট হাতে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১২৪ রান করেছেন ৪১.৩৩ গড় ও ১৩৪.৭৮ স্ট্রাইক রেটে। কিপিং গ্লাভস হাতে ডিসমিসাল যৌথভাবে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ ৪টি।

শুভাগত হোম

টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশি ছক্কার পুরস্কার জিতেছেন শুভাগত হোম। ৩ ইনিংস খেলে শাইনপুকুরের অলরাউন্ডার ছক্কা মেরেছেন ১১টি। ৪ ইনিংসে ফরহাদ রেজার ছক্কা ১০টি।

পঞ্চাশের বেশি রান করা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেটও শুভাগতর। ৩ ইনিংসে ১২১ রান করেছেন ২৬৮.৮৮ গড়ে। ১০ বলে ৩২ রান করে টুর্নামেন্ট শুরু করেছিলেন শাইনপুকুরের অলরাউন্ডার। পরের ম্যাচে ১৮ বলে ৫৮ রানের পথে ১৬ বলে করেছেন ফিফটি, যা বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড। সেমি-ফাইনালে দলের হেরে যাওয়া ম্যাচে করেছেন ১৭ বলে ৩১।

আব্দুর রাজ্জাক

১০ ওভারের বেশি বল করা বোলারদের মধ্যে ওভারপ্রতি রানে টুর্নামেন্টের সেরা আব্দুর রাজ্জাক। বিপিএলে দল না পাওয়া অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে ৩ ইনিংসে ১১ ওভার বোলিং করে উইকেট নিয়েছেন ৩টি, ওভার প্রতি রান দিয়েছেন ৫.৭২।

ম্যাচে পুরো ৪ ওভার বোলিংয়ে সবচেয়ে মিতব্যয়ী বোলিংও যৌথভাবে রাজ্জাকের। ব্রাদার্সের বিপক্ষে ৪ ওভারে দিয়েছিলেন ১০ রান। তরুণ লেগ স্পিনার মিনহাজুল আবেদিন আফ্রিদিকে ফাইনালেই টুর্নামেন্টে প্রথম খেলার সুযোগ দেয় শেখ জামাল। ৪ ওভারে তিনিও দেন ১০ রান।

শহিদুল ইসলাম

একাধিকবার ৪ উইকেট শিকারি একমাত্র বোলার শহিদুল ইসলাম। শেখ জামালের পেসার টুর্নামেন্ট শুরু করেছিলেন ৩৬ রানে ৪ উইকেট নিয়ে, ফাইনালে নিয়েছেন ১৯ রানে ৪টি।

মানিক খান

টুর্নামেন্টে হ্যাটট্রিক করা একমাত্র বোলার মানিক খান। প্রাইম দোলেশ্বরের পেসার ফতুল্লায় বিকেএসপির বিপক্ষে ১২ রানে ৪ উইকেট নেওয়ার পথে করেছিলেন হ্যাটট্রিক। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে টি-টোয়েন্টি হ্যাটট্রিকের স্বাদ পেয়েছিলেন আগে কেবল আল আমি্ন হোসেন ও আলিস ইসলাম।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে