যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি রাজিয়া সুলতানাসহ বিভিন্ন দেশের ১০ সাহসী নারীকে পুরস্কৃত করলো।
দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইকেল রিচার্ড পম্পেয়ো ৭ মার্চ বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ‘ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অব কারেজ’ অ্যাওয়ার্ড হস্তান্তর করেন ।
এ সময় বিশ্বশান্তি, মানবতা, ন্যায়বিচার, লিঙ্গ সমতা এবং নারী ক্ষমতায়নে অসাধারণ অবদানের জন্যে সম্মানিতদের ধন্যবাদ জানান ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প।
তিনি বলেন, সাহসী বলতে বোঝানো হয়েছে, যারা পরিবর্তনের জন্যে সত্যিকার অর্থে কাজ করছেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, সামাজিক বঞ্চনা উপেক্ষা করে। যারা কাজের পরিবর্তে শুধু বক্তৃতা করেন, তাদেরকে নয়। ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে মানবতার জন্যে যারা কাজ করছেন তাদেরকেই আজ সম্মানিত করা হলো অন্যদের উৎসাহিত করতে।
২০০৭ সালের মার্চে চালুর পর থেকে এই সম্মাননা পেয়েছেন ৬৫ দেশের ১২০ নারী।
স্ব স্ব দেশের মার্কিন দূতাবাস থেকে একজন সাহসী নারীর মনোনয়ন দেয়া হয়। চূড়ান্ত তালিকা করেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
১৯৭৩ সালে মিয়ানমারের মোংডুতে রোহিঙ্গা পরিবারে জন্মগ্রহণকারি রাজিয়া সুলতানা দেশত্যাগের পর বাংলাদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। ব্যক্তিজীবনে তিনি আইনজীবী, শিক্ষক এবং মানবাধিকার সংগঠক।
২০১৪ সাল থেকেই তিনি রোহিঙ্গা শিশু, নারী ও বালিকাদের নিয়ে কাজ করছেন। নির্যাতিতা নারীদের পুনর্বাসন এবং মানসিক স্বস্তি প্রদানের জন্যে তিনি সক্রিয় রয়েছেন।
নারী শিশুদের লেখাপড়ার জন্যে প্রয়োজনীয় প্রকল্প জমা দিয়েছেন। মিয়ানমার সেনাবাহিনী কর্তৃক ধর্ষণের শিকারদের বর্ণনার আলোকে প্রকাশ করেছেন দুটি গ্রন্থ। এর একটির নাম ‘উইটনেস টু হরোর’ এবং অপরটি ‘র্যাপ বাই কমান্ড’।
‘ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশন’ নামক একটি সংগঠনের সমন্বয়কারি রাজিয়া সুলতানা। এই সংগঠনের নেতৃত্বে অতিসম্প্রতি নিউইয়র্কে বিশ্বখ্যাত কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে রোহিঙ্গাদের সার্বিক পরিস্থিতির আলোকে একটি সেমিনার হয়েছে।
রাজিয়ার বিশ্বাস, মিয়ানমার সসম্মানে রোহিঙ্গারা ফিরতে পারলেই বিশ্বশান্তির প্রত্যাশা অনেকটা পূরণ হবে।
এছাড়াও এ সম্মান পেয়েছেন মিয়ানমারের ন্যেও কেনিয়াউ পাউ, জিবুতি মৌমিনা হোসেইন দারার, মিশরের মামা ম্যাগি, জর্ডানের কর্নেল খালিদা খালাফ হান্নান আল তাওয়াল. আয়ারল্যান্ডের ওরলা ট্যাসি, মন্টেনিগ্রোর ওলিভারা লাকি, পেরুর ফোর দ্য মারিয়া ভেগা জাপাটা, শ্রীলংকার মারিনি ডি মারিয়া লিভেরা এবং তাঞ্জানিয়ার এ্যানা আলোইস হেঙ্গা।
এদিকে অ্যাওয়ার্ড গ্রহণের পর ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ স্মরণ সমাবেশে রাজিয়া সুলতানা বলেন, বঙ্গবন্ধুর সাহসী নেতৃত্বের কারণেই বাঙালিরা স্বাধীন একটি ভূখণ্ড পেয়েছেন।