আগামীকাল রোববার (১০ মার্চ) পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ৭৮ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে ।
সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে এই ভোটগ্রহণ। ভোট উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট উপজেলাগুলোত ইতোমধ্যে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
নির্বাচনের আগের দিন অর্থাৎ আজ শনিবার রাত ১২টা থেকে ভোটগ্রহণের দিন রাত ১২টা পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় যন্ত্রচালিত যানবাহন ও নৌযান চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
তবে জাতীয় মহাসড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ কিছু সংযোগ সড়ক এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজে নিয়োজিত যানবাহনের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।
ইতোমধ্যে প্রথম ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মোট ২৯ জন প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ১৬ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭ জন।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্র জানায়, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ৮৭ উপজেলার তফসিল ঘোষণা করে ইসি। পরবর্তী সময়ে আদালত ও নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ৬টি উপজেলার নির্বাচন স্থগিত এবং বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৩ উপজেলায় সকল পদে নির্বাচিত হওয়ায় ৭৮ উপজেলায় ভোট হবে প্রথম ধাপে।
এর মধ্যে আদালতের আদেশে রাজশাহীর পবা উপজেলার ভোট স্থগিত হয়ে যায়। জামালপুরের মেলান্দহ ও মাদারগঞ্জ উপজেলা এবং নাটোরের সদর উপজেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান- এই তিন পদে জয়লাভ করেন বিধায় এখানেও ভোট হবে না।
অন্যদিকে ন্যায়সংগত, নিরপেক্ষ ও আইন অনুযায়ী নির্বাচন করা সম্ভব নয় বলে নেত্রকোনার পূর্বধলা, লালমনিরহাটের আদিতমারী এবং সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভোট স্থগিত করেছে ইসি।
তা ছাড়া নীলফামারী সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ভোট স্থগিত করা হয়েছে। তবে ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে এই উপজেলায় ভোট হবে।
যে ৭৮ উপজেলায় ভোট হবে সেগুলো হলো- রংপুর বিভাগের পঞ্চগড় সদর উপজেলা, আটোয়ারী, বোদা, দেবীগঞ্জ ও তেঁতুলিয়া; কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী, ফুলবাড়ী, উলিপুর, নাগেশ্বরী, রাজারহাট, রাজিবপুর, কুড়িগ্রাম সদর, চিলমারী ও রৌমারী উপজেলা; নীলফামারী সদর, ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা, সৈয়দপুর ও কিশোরগঞ্জ উপজেলা এবং লালমনিরহাট সদর, পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা ও কালীগঞ্জ উপজেলা।
ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুর সদর, সরিষাবাড়ী, ইসলামপুর, বকশীগঞ্জ ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা এবং নেত্রকোনা সদর, বারহাট্টা, দুর্গাপুর, খালিয়াজুরী, মোহনগঞ্জ, কেন্দুয়া, কলমাকান্দা ও মদন উপজেলা।
সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ সদর, ছাতক, দোয়ারাবাজার, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, দিরাই, শাল্লা, ধর্মপাশা, বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুর উপজেলা এবং হবিগঞ্জ সদর, বাহুবল, মাধবপুর, চুনারুঘাট, লাখাই, নবীগঞ্জ, আজমিরীগঞ্জ ও বানিয়াচং উপজেলা।
রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি, চৌহালী, কাজীপুর, রায়গঞ্জ, শাহজাদপুর, তাড়াশ ও উল্লাপাড়া উপজেলা; জয়পুরহাট সদর, পাঁচবিবি, আক্কেলপুর, কালাই ও ক্ষেতলাল উপজেলা; নাটোরের বাগাতিপাড়া, গুরুদাসপুর, বড়াইগ্রাম, লালপুর ও সিংড়া; রাজশাহী জেলার তানোর, গোদাগাড়ী, মোহনপুর, বাগমারা, পুঠিয়া, দুর্গাপুর, চারঘাট ও বাঘা উপজেলা।
ইসির তথ্য মতে, ৭৮ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা এক কোটি ৪২ লাখ ৪৮ হাজার ৮৫০ জন। মোট ভোটকেন্দ্র পাঁচ হাজার ৮৪৭টি। প্রথম ধাপে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে চেয়ারম্যান ২০৭ জন, ভাই চেয়ারম্যান ৩৮৬ জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান ২৪৯ জন।
নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ২১৭ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪০৬ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৭৩ জন পদে প্রতি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
গুরুত্বপূর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১৫ থেকে ১৬ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। তাদের মধ্যে অস্ত্রসহ দুইজন পুলিশ, অস্ত্রসহ একজন আনসার (পিসি), অস্ত্র/লাঠিসহ একজন আনসার (এপিসি), আনসার সদস্য ১০ জন (লাঠিসহ) এবং এক থেকে দুইজন চৌকিদার/দফাদার (লাঠিসহ)।
ভোটকেন্দ্রে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গতকাল শুক্রবার থেকে নিয়োজিত রয়েছেন। তারা ভোটগ্রহণের পরের দিন পর্যন্তও নিয়োজিত থাকবেন।