কুয়েত মৈত্রী হলে ভোটগ্রহণ স্থগিত

ডেস্ক রিপোর্ট

কুয়েত মৈত্রী হলে বস্তাভর্তি সিল মারা ব্যালট উদ্ধারের অভিযোগ ছাত্রীদের। ছবি : সংগৃহিত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ-ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল থেকে বস্তাভর্তি ব্যালট পেপার উদ্ধারের পর ওই হলের ভোটগ্রহণ স্থগিত রয়েছে।

হলের গেইটে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রব্বানী এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদকে ঘিরে ভোট বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। পুলিশ হলে ঢোকার চেষ্টা করলেও শিক্ষার্থীদের বাধায় তা পারেনি।

এই পরিস্থিতিতে হলের ভারপ্রাপ্ত প্রাধ্যক্ষ ম্যানেজমেন্টের অধ্যাপক ড. শবনম জাহানকে ওই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মধ্যে উপ-উপাচার্য মুহাম্মদ সামাদ বলেন, “এই হলের নির্বাচন অবশ্যই স্থগিত থাকবে। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনব।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হলের মধ্যে ১৭টিতে সোমবার সকাল ৮টায় ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট শুরু হলেও কুয়েত মৈত্রী হলে ভোটগ্রহণ শুরুই করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।

হল সংসদ নির্বাচনের বিপুল পরিমাণ ব্যালট দেখিয়ে শিক্ষার্থীরা সাংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আগের রাতেই এসব ব্যালটে ‘ক্রস চিহ্ন’ দিয়ে ভোটের চিহ্ন দিয়ে রাখা হয়েছে। যেসব নামে ভোটের চিহ্ন দেওয়া হয়েছে সেগুলো ছাত্রলীগের হল প্যানেলের প্রার্থীদের।

কুয়েত মৈত্রী হল সংসদের ভিপি পদের স্বতন্ত্র প্রার্থী শামসুন্নাহার পলি অভিযোগ করেন, হলের মিলনায়তনের পাশে রিডিং রুমে বসে ব্যালটে ভোটের চিহ্ন দেওয়া হচ্ছিল।

“ভেতর থেকে দরজায় ছিটকিনি দিয়ে ভেতরে বসে এগুলো করছিল। ওই রুমে বসে সিল মারছিল। আমরা সাড়ে ৭টার দিকে ম্যামকে বলেছিলাম ‘ম্যাম আমরা দেখব ব্যালট বাক্স খালি কিনা। তিনি কিছুতেই দেখাবেন না। উনি বলেন, প্রক্টর স্যার এসে দেখাবেন।

“প্রক্টর স্যার এসে বললেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। সব দেখাব। এটা বলে তিনি ওই রুমে নিয়ে গিয়ে ছিটকিনি দিয়ে দিয়েছেন। আমরা দরজা ধাক্কাচ্ছি, কিছুতেই খোলে না। যখন দরজা খুললো, আমরা ভেতরে গিয়ে দেখি বস্তাভর্তি ব্যালট পেপার।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হল মিলিয়ে ভোটার রয়েছেন মোট ৪৩ হাজার ২৫৫ জন। এর মধ্যে কুয়েত মৈত্রী হলে ভোটার ১৯৬৯ জন।

ডাকসুর জিএস পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী আসিফুর রহমান অভিযোগ করেন, উদ্ধার হওয়া সবগুলো ব্যালটে ‘একই প্যানেলের’ প্রার্থীর নামে ভোটের চিহ্ন দেওয়া।

“এগুলো আগের রাতেই মেরে রাখা হয়েছে। আমরা ভোটগ্রহণ স্থগিতের দাবি জানাচ্ছি।”

প্রক্টর গোলাম রব্বানী সাংবাদিকদের জানান, ভোটে অনিয়মের এ ঘটনায় কুয়েত মৈত্রী হলের ভারপ্রাপ্ত প্রাধ্যক্ষের দায়িত্ব থেকে ম্যানেজমেন্টের অধ্যাপক ড. শবনম জাহানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক মাহবুবা নাসরীনকে বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের ভারপ্রাপ্ত প্রাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় উপ-উপাচার্য  (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের একটি ‘তথ্যানুসন্ধান কমিটি’ করা হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে