ডাকসু নির্বাচনে সাধারণ ছাত্রদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে: রিজভী

ডেস্ক রিপোর্ট

রিজভী
ফাইল ছবি

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনকেও কলঙ্কিত করা হয়েছে। আজ সোমবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ২৯ ডিসেম্বর মধ্যরাতের ভোটের সংস্কৃতি থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও বের হতে পারেনি। আজ ডাকসু নির্বাচনকেও কলঙ্কিত করা হলো। গত রাতেও ব্যালট বাক্স ভরানো হয়েছে, যার প্রমাণ পাওয়া গেল আজ কুয়েত মৈত্রী হলে বস্তাভর্তি সিল মারা ব্যালট।

universel cardiac hospital

রিজভী বলেন, ডাকসু একটি ঐতিহাসিক প্রতিষ্ঠান। আমাদের ভাষা, স্বাধিকার, স্বাধীনতা, গণতন্ত্রসহ সব অধিকার আন্দোলনে ডাকসুর ভূমিকা ছিল অগ্রগামী। আজ ডাকসুর নির্বাচন। দেশে বিদ্যমান নাৎসিবাদী পরিকাঠামোর মধ্যেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৮ বছর পর এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যরাতের ভোটের স্মৃতি ডাকসু নির্বাচনেও সাধারণ ছাত্রদের তাড়িত করছে। এ নির্বাচনে সাধারণ ছাত্রদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। নাৎসিবাদী গণতন্ত্রের নানারূপ এ ডাকসু নির্বাচন কেন্দ্র করে প্রতিফলিত হয়েছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ঢাবির ৪৩ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ভোট কেন্দ্র করা হয়েছে ১৮টি হলে। সব সংগঠন ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা একাডেমিক ভবনে ভোট কেন্দ্র দাবি করেছিলেন, দাবি করেছিলেন ভোটের সময় বাড়ানোর, স্টিলের ব্যালট বাক্সের বদলে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স দাবি করেছিলেন, রাতের ভোটের আতঙ্কে রাতে যেন ব্যালট বাক্স না নেওয়া হয়, সে দাবিও প্রার্থীরা করেছিলেন। কিন্তু এসব দাবি নাকচ করা হয়েছে।

এ সময় ডাকসু নির্বাচনে মিডিয়ার ওপর বিধিনিষেধ আরোপের সমালোচনা করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ১৮টি কেন্দ্রের জন্য টেলিভিশন মাধ্যমের চারটি ইউনিট ও প্রিন্ট মিডিয়ার দুইজনকে ঢুকতে দেওয়া হবে। অর্থাৎ সংবাদ সংগ্রহে কড়াকড়ি বিধিনিষেধ, তথ্য নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা। ডিজিটাল বাংলাদেশের উল্লাসে অস্থির ক্ষমতাসীনদের রাজত্বে এখন কি দশা হলো যে মোবাইল ফোনসহ সব ধরনের ইলেকট্রনিকস ডিভাইস বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, আজ নির্বাচনের দিন সব ধরনের অনিয়মের প্রমাণ না রাখা। ইতিমধ্যে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন কমপক্ষে ৩৫ জন, যা ডাকসুর ইতিহাসে নজিরবিহীন। ছাত্রলীগের ভয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন এ রকম বেশ কিছু প্রার্থী প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

এ ছাড়াও রিজভী বলেন, বিরোধী মতের শিক্ষকদের ডাকসু নির্বাচনে কোনো দায়িত্বে রাখা হয়নি। গত কয়েক দিনের সাধারণ ছাত্রদের জোর করে ছাত্রলীগের অনুষ্ঠানগুলোতে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছে। গত কয়েক দিনে সাধারণ ছাত্রদের হুমকি দিয়ে হলগুলো পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে ছাত্রলীগ ক্যাডাররা।

তিনি আরো বলেন, মানুষের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে ডাকসু নির্বাচন সরকারেরই নীতি ও নীলনকশা অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হচ্ছে কিনা। এখনও পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের যাবতীয় আয়োজন ছাত্রলীগকে অবৈধ পন্থায় বিজয়ী করার অনুকূলে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে