রোহিঙ্গা ক্যাম্প : এনজিওকর্মীদের হোটেল বিল ১৫০ কোটি টাকা!

বিশেষ প্রতিনিধি

রোহিঙ্গা ক্যাম্প
রোহিঙ্গা ক্যাম্প। ফাইল ছবি

মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অনেক এনজিও ইল মোটিভ (অসৎ উদ্দেশ্য) নিয়ে কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন।

আজ বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

universel cardiac hospital

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর নব গঠিত আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির প্রথম বৈঠক বুধবার অনুষ্ঠিত হয়। এতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী সভাপতিত্ব করেন।

মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনীর দমনাভিযানের মুখে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে কয়েক মাসের মধ্যে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়েছেন। সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এ শরণার্থী সংকট মোকাবেলায় জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা ও দেশ সাড়া দিয়েছে। রোহিঙ্গাদের সহায়তায় বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি ইউএনএইচসিআরসহ বিদেশি বিভিন্ন এনজিও কাজ করছে।

কমিটির সভাপতি মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের ওখানে (কক্সবাজার) কিছু এনজিও আছে। ধারণা করা হচ্ছে, আমাদের গোয়েন্দা রিপোর্টেও সেগুলো লক্ষ্য করছি, অনেক এনজিও-ই ইল মোটিভ (অসৎ উদ্দেশ্য) নিয়ে কাজ করছে।

তিনি বলেন, আপনারা শুনলে অবাক হবেন যে, গত সেপ্টেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত (রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা এনজিওগুলো) হোটেল বিল দিয়েছে ১৫০ কোটি টাকার উপর। ফ্ল্যাট বাড়ি ভাড়া দিয়েছে আট কোটি টাকারও বেশি। বিদেশ থেকে যে টাকা আনে সেটা ভুক্তভোগী অর্থাৎ রোহিঙ্গাদের জন্য ২৫ শতাংশও খরচ হয় না। ৭৫ ভাগই খরচ হয় এগুলো দেখাশোনা করার জন্য, ওনাদের (এনজিওকর্মী) জন্য। এটা খুবই দুঃখজনক।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে মন্ত্রিসভা কমিটি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এটা আরও খতিয়ে দেখার জন্য আমরা গোয়েন্দা সংস্থাকে বলেছি। অভিযোগের যথার্থতা নিরূপণের জন্য তাদের অনুরোধ করা হয়েছে।

খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করা এনজিওর সংখ্যা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এটা চিহ্নিত করার জন্য গোয়েন্দা সংস্থাকে বলা হয়েছে। তদন্ত করে তাদের নাম দেয়ার জন্য গোয়েন্দা বিভাগকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা যেন মিয়ানমার থেকে আর না আসতে পারে, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলা হয়েছে। ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নেয়ার কাজ চলছে। রোহিঙ্গাদের দ্রুত ভাসানচরে স্থানান্তরে সরকারের ‘সর্বোচ্চ চেষ্টা’ রয়েছে।

ওই চরে রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নেয়া নিয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগ প্রকাশের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মন্ত্রী বলেন, সরকারের দায়িত্ব কী? সরকারের দায়িত্ব তাদের (রোহিঙ্গা) আশ্রয় দেয়া, নিরাপত্তা দেয়া, খাবার দেয়া, অন্যান্য মানবিক দিকগুলো দেখা। তাদের কোথায় রাখব এটা বিদেশিদের উদ্বেগ হওয়ার কথা নয়। রোহিঙ্গারা মানবেতর জীবনযাপন করলে তা নিয়ে তারা উদ্বেগ দেখাতে পারে। লেখাপড়ার, চিকিৎসার সুযোগ আছে কিনা তা দেখতে পারে তারা। কিন্তু রোহিঙ্গারা কোথায় থাকবে সেটা বাংলাদেশের নিজস্ব ব্যাপার।

বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান কামাল, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও বিভিন্ন সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে