পরিশ্রম, ধৈর্য ও ইচ্ছাশক্তি যে মানুষের ভাগ্য বদলে দিতে পারে—তার উদাহরণ টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারের গোয়ারিয়া গ্রামের গনি মিয়া (৫০)। দরিদ্রতার সঙ্গে যুদ্ধ করেও হাল ছাড়েননি তিনি। ছাগল পালন করে তিনি এখন স্বাবলম্বী।
এখন তিনি স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে নিয়ে সুখে দিন পার করছেন। ছেলে-মেয়েরা স্কুলে লেখাপড়া করছে। নিজে লেখাপড়া করতে পারেননি। তবে ছেলে-মেয়েদের মানুষের মতো মানুষ করেতে চান।
গনি মিয়া মত ও পথকে জানান, বছর কয়েক আগেও তিনি অন্যের বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করতেন। কিন্তু এ কাজে সংসার চলত না। স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটত। তা ছাড়া সারা বছর কাজও থাকে না। তাই ভাবতে থাকেন বিকল্প কিছু করার। কিন্তু হাতে নগদ টাকা না থাকায় কিছুটা হতাশ হয়ে পড়েন।
পরে সিদ্ধান্ত নিলেন ছাগল পালনের। কিন্তু ছাগল কেনার জন্যও টাকা দরকার। সমহারে বাচ্চা বণ্টনের শর্তে প্রতিবেশীর কাছ থেকে একটি ছাগল বর্গা নিয়ে পালন শুরু করেন। এক বছর পর ছাগলটি চারটি বাচ্চা দেয়। ওই চারটি বাচ্চা নিজ সন্তানের মতো লালনপালন করতে থাকেন। বাচ্চাগুলো বড় হয়ে এক সময় তারাও বাচ্চা দেয়। এভাবে দিন দিন বাড়তে থাকে তার ছাগলের সংখ্যা।
জানা যায়, বর্তমানে বাচ্চা বাদে গণি মিয়ার বড় ছাগলের সংখ্যা ৭০টির মতো। এর মধ্যে ২২টি ছাগল গর্ভবতী। বর্তমানে গণি মিয়া ও তার স্ত্রী রূপবানু মিলে খোলা মাঠে ছাগলগুলো চড়ান। গনি মিয়া তার ছাগলের খামার থেকে বছরে প্রায় এক থেকে দেড় লাখ টাকা আয় করছেন।
তবে গনি মিয়া লেখাপড়া না জানায় ছাগলের বাচ্চা অসুস্থ হলে সঠিক চিকিৎসা করাতে পারছেন না। অসুস্থ হয়ে অনেক বাচ্চা মারা গেছে বলেও তিনি জানান। তা ছাড়া ছাগল রাখার মতো পরিষ্কার ও ভালো ঘর নেই। সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা পেলে ছাগল পালনে তিনি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারবেন বলে এলাকাবাসী জানান।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হাবিবুর রহমান মত ও পথকে বলেন, পশুপাখি পালনের ক্ষেত্রে উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ বিনা মূল্যে কৃমিনাশক ওষুধ, সরকারি মূল্যে ভ্যাকসিন দিয়ে থাকে। গণি মিয়া এখন পর্যন্ত আমাদের অফিসে যোগাযোগ করেননি। আমি লোক পাঠিয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। গণি মিয়াকে সরকারিভাবে সহযোগিতার পাশাপাশি আমি ব্যক্তিগতভাবেও সহযোগিতা করব।