নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে নিহত ২ বাংলাদেশির পরিচয় মিলেছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

নিহতদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ক্রাইস্টচার্চের স্থানীয়রা। ছবি : এএফপি

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের সন্ত্রাসী হামলায় নিহত দুই বাংলাদেশির পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

আজ স্থানীয় সময় বেলা দেড়টার দিকে মসজিদে নামাজ শুরুর ১০ মিনিটের মধ্যে একজন বন্দুকধারী সিজদায় থাকা মুসল্লিদের ওপর গুলি ছোড়ে। হামলাকারীর হাতে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল ছিল। এতে এখন পর্যন্ত ৪৯ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

universel cardiac hospital

নিউজিল্যান্ডের স্থানীয়দের বরাত দিয়ে গণমাধ্যম জানিয়েছে, এই হামলায় নিহত একজনের নাম ডা. সামাদ আজাদ। তিনি ক্রাইস্টচার্চের লিংকন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। এর আগে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। তার স্ত্রীরও সন্ধান পাওয়া যায়নি এখন পর্যন্ত।

নিহত আরেকজনের নাম হোসনা। তাঁর স্বামীর নাম ফরিদ। নিহত দুজনই ক্রাইস্টচার্চে বহু বছর ধরে বাস করছেন। তবে নিখোঁজ দুজন ও আহত দুজনের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।

নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশের কনসাল শফিউর রহমান এই তথ্য জানিয়েছেন।

এছাড়া আরো  আট বাংলাদেশি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এদের মধ্যে দুই জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ সুফিউর রহমান। এছাড়া তিন-চার বাংলাদেশি নিখোঁজ আছেন বলেও বাংলাদেশের গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন তিনি।

বাংলাদেশ ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব নিউজিল্যান্ডের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান চৌধুরী জানান, ওই এলাকায় অনেক বাংলাদেশি থাকেন। তারা ওই মসজিদে নিয়মিত নামাজ পড়তে যান। ঘটনার পর কয়েকজনের খোঁজ মিলছে না বলেও তিনি জানান।

এই হামলা চালিয়েছে নিজেকে ব্রেন্টন টেরেন্ট বলে পরিচয় দেয়া ২৮ বছর বয়সী এক অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক। অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের গ্রাফটন শহরের অধিবাসী সে। হামলার আগে সে টুইটারে ‘দ্য গ্রেট রিপ্লেসমেন্ট’ শিরোনামে ৮৭ পৃষ্ঠার দীর্ঘ একটি মেনোফেস্টো প্রকাশ করে।

অস্ট্রেলিয়ার কিছু গণমাধ্যম বলছে, ২০১৭ সালের ৭ এপ্রিল সুইডেনের স্টকহোম শহরে ইসলামি জঙ্গিদের ট্রাক চাপায় হতাহতের ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই নাকি টেরেন্ট এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। এই ধারণার পেছনে হামলাকারীর রাইফেল লেখা কিছু শব্দ যুক্তি হিসেবে তুলে ধরেছে নিউজ ডট কম এইউ, টাইমস নাও এর মতো মিডিয়াগুলো।

টেরেন্টে যে রাইফেল নিয়ে এই হামলা চালান, সেটার গায়ে কিছু শব্দ লেখা ছিল। হামলার ভিডিওতে যে শব্দগুলো স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে সেগুলো হলো, ‘To take revenge for Ebba Akerlund’। এবা আকারলাউন্ড নামের ১২ বছরের সুইডিশ মেয়েটি ছিল শ্রবণ প্রতিবন্ধী। স্কুল থেকে ফেরার পথে সে স্টকহোমের সেই ট্রাকচাপায় সে প্রাণ হারায়। তার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতেই ক্রাইস্টচার্চে হামলা করে টেরেন্টে। তার রাইফেলের লেখা এবং তার টুইটার অ্যাকাউন্টের বক্তব্য থেকে এই ধারণা করছে গণমাধ্যম।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে