আদালত নব্বইয়ের দশকের বাংলা ছবির সারা জাগানো চিত্রনায়ক সালমান শাহের অপমৃত্যু মামলার অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য আগামী ২৩ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন।
আজ সোমবার মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। তবে পুলিশ ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (পিবিআই) কোনো প্রতিবেদন দাখিল না করায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বাকী বিল্লাহ প্রতিবেদন দাখিলের নতুন এ দিন ধার্য করেন।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ইস্কাটনের নিজ বাসায় সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় তার মৃতদেহ। সালমান শাহর পরিবার শুরু থেকেই বিষয়টিকে হত্যা বলে অভিযোগ করে আসছে। স্ত্রীর পরকীয়ার জন্যই সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরীর।
ঢাকাই চলচ্চিত্রে সালমান শাহর ছিল আকাশছোঁয়া তারকাখ্যাতি। নব্বই দশকে সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি অনেকটাই সালমাননির্ভর হয়ে পড়েছিল। চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন ওরফে সালমান শাহ মারা যাওয়ার দুই দশক পরও এর রহস্য উদঘাটন হয়নি।
সে সময়ে এই ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছিলেন তার বাবা প্রয়াত কমর উদ্দিন আহমদ চৌধুরী।
পরে ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে, এমন অভিযোগ করে মামলাটিকে হত্যা মামলায় রূপান্তর করার আবেদন জানান তিনি।
প্রথমে অপমৃত্যুর মামলা করা হলেও পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি তদন্ত করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন আদালত। পরে র্যাবের হাত ঘুরে তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই।
প্রয়াত এই নায়কের মৃত্যুর ঘটনাটি তদন্ত করে ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় সিআইডি। এই প্রতিবেদনে সালমান শাহের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়। ২৫ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে ওই চূড়ান্ত প্রতিবেদন গৃহীত হয়।
কিন্তু সিআইডির এই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে সালমান শাহের বাবা কমর উদ্দিন আহমদ চৌধুরী রিভিশন মামলা দায়ের করেন। পরে ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠান আদালত।
এরপর প্রায় দীর্ঘ ১২ বছর মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে ছিল। দীর্ঘদিন বাদীর পক্ষে আদালতে সাক্ষী হাজির না করায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল বিলম্বিত হয়।
সর্বশেষ গত বছরের ৩ আগস্ট ঢাকার সিএমএম বিকাশ কুমার সাহার কাছে বিচার বিভাগীয় তদন্তের প্রতিবেদন দাখিল করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক। এ প্রতিবেদনে সালমান শাহের মৃত্যুকে অপমৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
পরবর্তীকালে সালমান শাহের বাবার মৃত্যুর পরে গত ১০ ফেব্রুয়ারি সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরী বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রত্যাখ্যান করে প্রতিবেদনের ওপর নারাজি দাখিল করেছিলেন।