অপরাজনীতির কারণেই জনগণ বিএনপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে : প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী। ছবি : সংগৃহিত

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বিএনপি-জামায়াত দেশে অপরাজনীতি করেছে এবং সেই কারণে দেশের মানুষের কাছে তারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে বলে দাবি করেছেন।

আজ সোমবার বিকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলেনি। সেই নির্বাচনে বিএনপি মাত্র ২৮টি সিট পায়। আওয়ামী লীগ সেখানে এক তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। ২০১৪ সালে নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নিলেও তাদের প্রস্তুতির অভাব ছিল। এছাড়া যারা তিনশ সিটের জন্য সাতশজনকে মনোনয়ন দেয় তারা কীভাবে ভোট পাবে সেই প্রশ্নও তোলেন শেখ হাসিনা। 

আওয়ামী লীগ সভাপতি জানান, গত নির্বাচনের আগে দেশি-বিদেশি সব জরিপে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসবে সেটা বোঝা যাচ্ছিল। গত ১০ বছরে অভূতপূর্ব যে উন্নয়ন করেছেন সে কারণেই জনগণ তাদেরকে টানা তৃতীয়বারের মতো বেছে নিয়েছে বলে মনে করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।

বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তার কন্যা বলেন, বঙ্গবন্ধুর অনেক অনেক স্বপ্ন ছিল। বাংলাদেশটা কীভাবে গড়ে তুলবে, যারা একবেলা খাবার পেত না, প্রতিনিয়িত যারা নিষ্পেষিত হতো তাদের সুন্দর জীবন দিতে অবিরাম কাজ করেছেন। সেই মানুষগুলোর ভেতরে একটা সাহস সঞ্চার করে মুক্তিযুদ্ধের মতো একটি মানসিক শক্তি সঞ্চয় করেছিলেন।

তিনি বলেন, পাকিস্তান সৃষ্টির জন্য যেমন তিনি সংগ্রাম করেন পরবর্তী সময়ে তাদের হাত থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্ত করার সংগ্রামও তিনিই শুরু করেন। আমাদের দুর্ভাগ্য, ভাষা আন্দোলনে তার যে অবদান তা আমাদের জ্ঞানী-গুণীরাও তাদের লেখায় উল্লেখ করতেন না।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করে বলেন, পঁচাত্তরের পর আইয়ুব খানের পদ্ধতি অনুসরণ করা হলো। মোশতাক বেইমানি করল। মাত্র আড়াই মাসেই তার পতন ঘটল। অবৈধভাবে ক্ষমতায় এলো জিয়াউর রহমান। তার বহুদলীয় গণতন্ত্র একটি ভাঁওতাবাজি। যেখানে কথা বলার অধিকার নেই, মত প্রকাশের অধিকার নেই সেটা আবার বহুদলীয় গণতন্ত্র হয় কীভাবে! অথচ কিছু জ্ঞানী-গুণী তাকেই বাহবা দিতে শুরু করল।

শেখ হাসিনা বলেন, ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর জনগণ উপলব্ধি করল সরকার জনগণের সেবা করে। এদেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে তখন। আমরা টানা ১০ বছর ধরে ক্ষমতায় আছি, জনগণ এর সুফল পাচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা এবার জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালন করছি। ২০২০ থেকে ২১ সাল মুজিব বর্ষ ঘোষণা দিয়েছি। আমি চাই সারা বাংলাদেশে প্রত্যেক এলাকায় এখন থেকে প্রস্তুতি শুরু হোক। যিনি আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন সেই জনকের আদর্শ সমুন্নত রেখে আমরা তার স্বপ্ন পূরণ করব।

দেশবাসীর উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, দেশবাসীকে আহ্বান করব, জাতির পিতাকে জন্মবার্ষিকীকে আমরা শপথ নিই, আর যেন স্বাধীনতাবিরোধী, খুনি, সন্ত্রাসী, জঙ্গিাবাদী, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারী, এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারী কেউ যেন ক্ষমতায় আসতে না পারে।

আলোচনা সভায় তিনি মনোনয়নবাণিজ্যের কারণে গত নির্বাচনে বিএনপির ভরাডুবি হয়েছে- এমনটি মনে করেন বলেও জানিয়েছেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে