উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে এক ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী নিজেই একশ ব্যালেটে সিল মেরেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হাতে ধরা পড়ার পর দেখা গেছে, ছিনিয়ে নেওয়া ব্যালটে নিজের প্রতীকের ঘরে ভোট দেওয়ার জন্য তিনি ব্যবহার করেছেন ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার জন্য নির্ধারিত সিলটি।
সোমবার সকালে হাটহাজারী উপজেলার হাটহাজারী কলেজ কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। পরে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী উদয় সেন।
এছাড়া অন্য তিনটি কেন্দ্র থেকে জাল ভোট দেওয়া ছয়শ ব্যালট উদ্ধার করা হয়েছে। এসব ঘটনায় পাঁচজন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমীন।
হাটহাজারী উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে এবার প্রতিদ্বন্দ্বীতায় রয়েছেন আটজন। তাদের মধ্যে উদয় সেনের প্রতীক তালা। হাটহাজারী কলেজ কেন্দ্রের ভোটার তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, সকালে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাকে ভয় দেখিয়ে ১০০ ব্যালটের একটি বই ছিনিয়ে নেন উদয় সেন। পরে একটি কক্ষে বসে সেই ব্যালটে নিজেই সিল মারতে শুরু করেন। ভোটকেন্দ্রে অভিযানে গিয়ে আমি তাকে হাতেনাতে ধরি।
রুহুল আমীন বলেন, পরে দেখা যায়, উদয় সেন তার নিজের মার্কা তালার ওপর ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার জন্য নির্ধারিত গোল সিল মেরেছেন। আর প্রতীকের ওপর মারার জন্য নির্ধারিত চৌকোনা সিলটি মেরেছেন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার জন্য নির্ধারিত জায়গায়।
তিনি বলেন, অর্থাৎ এসব ব্যালট বাক্সে ফেললেও ভোট বাতিল হয়ে যেত। পরে তিনি ভুল স্বীকার করে বলেছেন, মানসিক চাপে পড়ে এ কাজ করেছেন। মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
উপজেলার গড়দুয়ারা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র, পূর্ব দক্ষিণ মেখল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ফতেপুর মঞ্জুরুল ইসলাম আলিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে জাল ভোট দেয়া ছয়শ ব্যালট জব্দ করা হয়েছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, এসব কেন্দ্রে বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে ভয় দেখিয়ে ব্যালট কেড়ে নিয়ে জাল ভোট দেওয়া হয়। বিষয়টি না জানানোয় পাঁচ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাকে পরে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন উত্তর জেলা যুবলীগের চেয়ারম্যান এস এম রাশেদুল আলম।
ফলে সোমবার কেবল ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট হয়েছে। এর মধ্যে ভাইস চেয়ারম্যান পদে আটজন ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুইজন প্রার্থী ছিলেন। উপজেলার ১০৬টি কেন্দ্রে মোট ভোটার ছিলেন ৩ লাখ ৮ হাজার ৪৬ জন।