ডাকসুর নবনির্বাচিত ভিপি নুরুল হক নুর আজ সকালে রাজধানীতে বাসচাপায় সহপাঠীর মৃত্যুর পর নর্দ্দায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের দাবিতে চলমান আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে বসুন্ধরার নর্দ্দায় এসে সংহতি জানান তিনি।
এ সময় নুর শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেন। প্রায় এক ঘণ্টার মতো তিনি আন্দোলনে অবস্থান করেন।
নুর দাবিগুলোর সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেন, আমরা সবসময় চাই সড়কে নৈরাজ্য বন্ধ হোক। সড়কে সাধারণ মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক। এর আগে সড়কে নৈরাজ্য বন্ধে যেসব দাবি ছিল সেগুলো বাস্তবায়িত হোক। এ সময় শিক্ষার্থীদের আজকের দাবিগুলোর সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন।
ঘটনাস্থলে নুরের সঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা রাশেদ খান, ফারুক হোসেন, মশিউর, মাহফুজসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, বেলা ১১টার দিকে বসুন্ধরা এলাকায় রাস্তা বন্ধ করে অবরোধকারী শিক্ষার্থীদের কাছে যান ঢাকা সিটি উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম।
এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া যত দ্রুত সম্ভব মেনে নেয়ার আশ্বাস দেন। সেই সঙ্গে লিখিতভাবে দাবিগুলো উত্থাপনের অনুরোধ জানান।
৮ দফা দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-
১. ১০ দিনের মধ্যে সুপ্রভাত বাসের চালক, হেলপার ও মালিকের ফাঁসি;
২. সুপ্রভাত ও জাবালে নূরসহ যেসব বাস আজ ও এর আগে দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে, সেসব বাসের রুট পারমিট বাতিল;
৩. চালক ও হেলপারের ডোপ টেস্ট;
৪. বাসসহ গণপরিবহনের চালক-হেলপারের আইডি কার্ড ভিজিবল করা;
৫. বসুন্ধরা আবাসিক/যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে জেব্রা ক্রসিংসহ নিহত আবরারের নামে ফুটওভার ব্রিজ করতে হবে দুই মাসের মধ্যে।
এদিন সকাল ৭টার দিকে রাজধানীর নর্দা-বসুন্ধরা এলাকায় রাস্তা পারাপারের সময় দ্রুতগতিতে চালিয়ে যাওয়া যাত্রীবাহী বাসচাপায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র আবরার আহমেদ চৌধুরী নিহত হন।
এ ঘটনায় আটক করা হয় বেপরোয়া গতিতে চালিয়ে যাওয়া ওই বাসচালককে এবং জব্দ করা হয়েছে বাসটিকে।
আবরার বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালে (বিইউপি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বিইউপির ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। তার বাবা আরিফ আহমেদ চৌধুরী।
মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে ওই শিক্ষার্থী রাস্তা পারাপারের সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে। আবরার বসুন্ধরা এলাকায় থাকতেন। আবরারের লাশ রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। এরপর তার লাশ দাফন করা হয়।
পুলিশ জানায়, শিক্ষার্থীদের বহনকারী বিইউপির একটি বাস সকালে বসুন্ধরা এলাকায় সড়কে দাঁড়িয়েছিল। সকাল সোয়া ৭টার দিকে আবরার বাসে উঠতে যাচ্ছিলেন। এ সময় পাশে থাকা গাজীপুরগামী সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাস তাকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একই পরিবহনের অপর একটি বাসকে ওভারটেক করার জন্য বেপরোয়া গতিতে সুপ্রভাত পরিবহনের বাসটি চালাচ্ছিলেন চালক। দুর্ঘটনার পর নিহত ছাত্রের সহপাঠীরা বাসটি আটক করেন। এ সময় চালক ও হেলপার পালানোর চেষ্টা করেন। পরে চালক সিরাজুল ইসলামকে ধরে ফেলেন শিক্ষার্থীরা।