চলতি অর্থবছর প্রবৃদ্ধি হবে ৮.১৩ শতাংশ: অর্থমন্ত্রী

অর্থনীতি ডেস্ক

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ফাইল ছবি

বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) চলতি অর্থবছর শেষে প্রথমবার ৮ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে বলে প্রাক্কলন করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। অর্থবছরের প্রথম আট মাসের (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) তথ্য বিশ্লেষণ করে বিবিএস যে হিসাব করেছে, তাতে ২০১৮-১৯ অর্থবছর শেষে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে রেকর্ড ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ।

সেই সঙ্গে এবার বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়ে ১ হাজার ৯০৯ ডলারে পৌঁছাবে বলে আশা করছে সরকার।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠক-পরবর্তী ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তবে প্রবৃদ্ধির এ তথ্য বিনিয়োগের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে মনে করছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, বিনিয়োগ ও প্রবৃদ্ধির মধ্যে সামঞ্জস্যতা নেই।

এর বেশি কিছু বলতে পারব না। ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, পরিকল্পনা সচিব নূরুল আমিন, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীসহ কমিশনের সদস্যরা।

অর্থমন্ত্রী জানান, চলতি অর্থবছরে জিডিপি আকার দাঁড়াবে ২৫ লাখ ৩৬ হাজার ১৭৭ কোটি টাকা। গত অর্থবছর এটি ছিল ২২ লাখ ৫০ হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি সাধারণত তিনটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। এর মধ্যে কৃষি খাতে চলতি অর্থবছর প্রবৃদ্ধি হবে ৩ দশমিক ৫১ শতাংশ, যা গত অর্থবছর ছিল ৪ দশমিক ১৯ শতাংশ। শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ২৯ শতাংশ, যা গত অর্থবছরে ছিল ৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ। সেবা খাতে প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ, যা গত অর্থবছরে ছিল ৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ।

এ প্রসঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, প্রবৃদ্ধির মাত্রা নিয়ে কিছু বলব না। তবে এটুকু বলব, গত অর্থবছরের চেয়ে চলতি অর্থবছর রফতানি ভালো হয়েছে। পোশাক খাতে রফতানি বেড়েছে। রেমিটেন্স অনেক বেশি এসেছে বা আসবে। ফলে আবাসন খাতে ব্যয় বেশি হয়েছে। মেগা প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন হচ্ছে।

এসব কিছু মিলেই প্রবৃদ্ধি বাড়তে পারে। কিন্তু জিডিপির তুলনায় ব্যক্তি বিনিয়োগের অনুপাত কম, বেড়েছে শূন্য দশমিক ১ শতাংশের মতো। এক্ষেত্রে অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। তাই বিনিয়োগ হার বাড়াতে হবে। এজন্য ডুয়িং বিজনেসের উন্নতি করতে হবে। তাছাড়া কর্মসংস্থানও বাড়েনি। প্রবৃদ্ধির সুফল পৌঁছাতে হলে কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে।

ব্রিফিংয়ে অর্থমন্ত্রী জানান, চলতি অর্থবছর দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় দাঁড়াবে ১ হাজার ৯০৯ মার্কিন ডলার। গত অর্থবছরে ছিল ১ হাজার ৭৫১ মার্কিন ডলার। জিডিপির তুলনায় বিনিয়োগ হয়েছে ৩১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। এর মধ্যে সরকারি বিনিয়োগ হবে ৮ দশমিক ১৭ শতাংশ এবং বেসরকারি বিনিয়োগ হবে ২৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। গত অর্থবছরে জিডিপির তুলনায় বিনিয়োগ ছিল ৩১ দশমিক ১৩ শতাংশ।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে