বিএনপির চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা এতই খারাপ যে এমন খালেদা জিয়াকে তিনি কখনো দেখেননি বলে নেতাকর্মীদের জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, এখন আর বসে থাকার সুযোগ নেই।
আজ বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে কেরানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন আয়োজিত গণ-অনশনে তিনি এ কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, এটা (অনশন) কোনো ছোট অনুষ্ঠান নয়। এটা একটা বড় আন্দোলন। এটি সামনে রেখে আমাদের আগামী দিনগুলোতে এগিয়ে যেতে হবে।
সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, এখনো সময় আছে, বিএনপির চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন। তিনি গণতন্ত্রের প্রতীক, ১৬ কোটি মানুষের নেত্রী। তিনিই একমাত্র বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে পারবেন এবং আপনাদেরও রক্ষা করতে পারবেন।
এর আগে দুপুর ১২টায় গণ-অনশন শুরু হয়। বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে অনশন চলে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নেতাকর্মীদের পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান।
মির্জা ফখরুল তার বক্তব্যে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার বর্তমান চিত্র তুলে ধরেন।
গতকাল কোর্টে খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার সাক্ষাতের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার কাজ চলছে একটি ছোট অন্ধকার প্রকোষ্ঠে। আমি সেখানে তার সঙ্গে দেখা করতে গেয়েছিলাম। তার অবস্থা আমি বলে বোঝাতে পারব না। কারণ আমি এমন খালেদা জিয়াকে কখনো দেখিনি। তিনি এত অসুস্থ যে, মাথা সোজা করে বসতেও পারছেন না। তার সমস্ত শরীরে যন্ত্রণা ও ব্যথা। তিনি কিছুই খেতে পারছেন না। আর কিছু খেলেও সেটা তার শরীর গ্রহণ করছে না।
খালেদা জিয়াকে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আজকে আর বসে থাকার সুযোগ নেই। এটা ছোটখাটো সংগ্রাম ও লড়াই নয়। এটা হচ্ছে আমাদের অস্তিত্বের লড়াই। অনেকেই বলেন, এই সংকট বিএনপির। কিন্তু না। এটা সমস্ত জাতির সংকট।
দেশবাসীর উদ্দেশে মির্জা ফখরুল দল-মতনির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আসুন, ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই যে স্বৈরাচার সরকার আমাদের বুকের ওপর চেপে বসেছে, তাদের সরিয়ে দেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত ও বেগম জিয়াকে মুক্ত করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করি।
নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের বিষয়েও কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘সারা দেশে যে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে, তারই প্রমাণ এটা। আমরা দেখছি যে, দেশে এখন কোনো আইনের শাসন নেই। সমগ্র দেশে একটা নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে। এই দখলদার সরকার মানুষকে শান্তি ও জননিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে।’
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনশনে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, ভাইস চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমানসহ দলের এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বক্তব্য দেন।