সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে আহত শিশু ইয়ামিন, ইনসেটে আটক যুবলীগ নেতা আবদুল অদুদ।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে কাস্তে দিয়ে সাত বছর বয়সী শিশুর আঙুল কেটে দেয়া যুবলীগ নেতা আবদুল অদুদকে আটক করেছে পুলিশ।
গতকাল বুধবার রাতে উপজেলার সোলেমানপুর বাজার থেকেই তাকে আটক করা হয়।
অদুদ উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের সোলেমানপুর গ্রামের জমির আলীর ছেলে ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক।
বৃহস্পতিবার তাহিরপুর থানার ওসি শ্রী নন্দন কান্তি ধর গণমাধ্যমকে বলেন, মামলার পর অদুদের ছোট ভাই আলম মিয়াকে পুলিশ গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। এর পর প্রায় এক বছর পলাতক থাকার পর বাড়ি ফিরে আসায় বুধবার রাতে সোলেমানপুর বাজার থেকে অদুদকে আটক করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ১৮ মার্চ উপজেলার শ্রীপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের মহালিয়া হাওরের ময়নাখালী বেড়িবাঁধে সোলেমানপুর গ্রামের শাহনুর মিয়ার ছেলে ইয়ামিনকে মাটিতে আছড়ে ফেলে কাস্তে দিয়ে ডান হাতের তিনটি আঙুল কেটে দিয়েছিলেন আবদুল অদুদ নামে ওই যুবলীগ নেতা।
নির্মাণাধীন হাওর রক্ষা বাঁধে গড়াগড়ি দেয়ায় ওই শিশুটিকে এ শাস্তি দেন তিনি।
হাওর রক্ষা বাঁধে অদুদ তৎকালীন তাহিরপুরের ২৮ নম্বর প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) সভাপতি ছিলেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বর্বোরচিত ঘটনার দিন বিকালে সহপাঠীদের নিয়ে বাঁধের ওপর খেলছিল সোলেমানপুর গ্রামের শাহনুর মিয়ার ছেলে স্থানীয় মাদ্রাসার প্রথম শ্রেণির ছাত্র ইয়াহিন। সে বাঁধে গড়াগড়ি খেললে তা দেখে ফেলেন আবদুল অদুদ।
এর পর তাকে ধাওয়া করে ধরে মাটিতে কয়েকবার আছাড় মারেন। ইয়াহিন তার পা ধরে ক্ষমা চাইলেও মন গলেনি। এর পর কাঁচি দিয়ে শিশুটির ডান হাতের তিনটি আঙল কেটে ফেলে দেন তিনি।
স্থানীয়রা শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাকে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানেও অবস্থার অবনতি ও আঙুলে পচন ধরায় উন্নত চিকিৎসার জন্য সর্বশেষ তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনার পর দিন ২০১৮ সালের ২০ মার্চ শিশু ইয়ামিনের পিতা শাহানুর মিয়া বাদী হয়ে ঘটনার মূলহোতা অদুদ মিয়া ও তার সহোদর আলম মিয়াকে আসামি করে তাহিরপুর থানায় মামলা করেন।