বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বাংলাদেশকে গুমরাজ্যে পরিণত করা হয়েছে। সরকার অনুভূতিশূন্য ও বোধহীন। তারা গুম-খুনের নির্দেশ দিয়ে দানবরূপে জনগণের ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে। বর্তমান ও অনাগত দিনের দুঃশ্চিন্তা, অনিশ্চয়তা, হতাশায় দেশ ভরে গেছে। সরকার বেআইনি পথে হাঁটছে বলে এই শ্বাসরোধী পরিবেশ।
আজ নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সরকারবিরোধী ও বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মীকে গুম করে রাখা হয়েছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, হারিয়ে যাওয়া প্রিয়জনদের জন্য অনেক স্ত্রী-সন্তান, মা-বাবা-স্বজনেরা দিনরাত চোখের পানিতে বুক ভাসাচ্ছেন। তাঁরা কার কাছে বিচার চাইবে, কার কাছে যাবে? দেশটাকে এখন শেখ হাসিনা গুমরাজ্য বানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীকে বলব, এই গুম-খুন বন্ধ করুন।
সাবেক রাষ্ট্রদূত মারুফ জামান ১৫ মাস নিখোঁজ থাকার পর ফিরে আসার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, এখনও গুম আছেন ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম, সাইফুল আলম হিরু, হুমায়ুন কবীর পারভেজ, সাজেদুল ইসলাম, মাহবুব হাসান, মাজহারুল ইসলাম, আদনান চৌধুরী, পারভেজ হোসেনসহ প্রায় হাজার খানেক মানুষ। নিরুদ্দেশ আছেন বিগ্রেডিয়ার আবদুল্লাহিল আমান আজমী, ব্যারিস্টার আহমদ বিন কাশেম (আরমান)। গুম হওয়া এসব মানুষের জন্য তাদের মা-বাবা, স্ত্রী-সন্তানেরা কাঁদছেন।
তিনি আরও বলেন, আল-জাজিরার ইনভেস্টিগেটিভ ইউনিট এক প্রতিবেদনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টার বিরুদ্ধে তিনজনকে গুম করার অভিযোগ উঠেছে। প্রচ্ছায়া লিমিটেডের তিন কর্মচারীকে আইনের অপব্যবহার করে তুলে নিয়ে গুম করা হয়েছে। সম্প্রতি এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর বাংলাদেশে আল-জাজিরা সম্প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। এর মাধ্যমে সরকার আবারও প্রমাণ করল সত্য গলা টিপে রাখতে চায় তারা।
তিনি বলেন, গত ১০ বছরে সরকারে রোষানলে ‘চ্যানেল ওয়ান’, ‘ইসলামিক টিভি’, ‘দিগন্ত টিভি’, ‘পিস টিভি’,আমার দেশ’সহ বিভিন্ন গণমাধ্যম বন্ধ করা হয়েছে। বাকশাল পুণঃপ্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে গণমাধ্যমেকে হত্যা করছে সরকার। সত্যকে তারা স্তব্ধ করে রাখতে চায়। স্বৈরাচার দীর্ঘায়িত হলে নাৎসীবাদের আবির্ভাব ঘটে। এই সরকারও নাৎসীবাদের উপাসক।
উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, এই নির্বাচনে ভোটারেরা কেন্দ্রে যাচ্ছেন না। খাসির মাংস দিয়ে খিচুড়ি খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে ক্ষমতাসীনরা, এরপরও ভোটারদের কেন্দ্রে নিতে পারছে না।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, নাজমুল হক নান্নু, কেন্দ্রীয় নেতা এবিএম মোশাররফ হোসেন, মনির হোসেন, আবদুল খালেক, রফিক হাওলাদার, নাদিম চৌধুরী, রফিকুল ইসলাম, সরদার মো. নুরুজ্জামান প্রমুখ।